-ড. জয়ন্ত চৌধুরী
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইনসে বেঙ্গলি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নায়ক নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অমীমাংসিত অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে সেমিনার।
রোববার ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ধানবাদে ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইনসের লেকচার থিয়েটারের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে বিপুল সংখ্যক নেতাজী অনুরাগী অংশ নেন। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে সোসাইটির সভাপতি অতনু গুপ্ত নেতাজীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন। সেমিনারের মুখ্য আলোচক বিশিষ্ট নেতাজী গবেষক ড. জয়ন্ত চৌধুরী বহুল চর্চিত নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে নিয়ে আসেন।
ড. চৌধুরী বলেন, ‘প্রকৃতঅর্থে ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ বিশ্বের কোথাও কোন সামরিক বা বেসামরিক বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি খোদ অ্যাংলো-আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও তথাকথিত সেই বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্যকে শত্রুদের বিভ্রান্ত করতে নেতাজীরই সৃষ্ট একটি রটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের জনসমক্ষে আনা নেতাজী সংক্রান্ত ফাইলগুলিকে থেকেও এটি স্পষ্ট যে নেতাজির তথাকথিত বিয়ের গল্পটি তৎকালীন সরকার এবং বসু পরিবারের একাংশ তাদের হীনস্বার্থে মনগড়া এই তত্ত্বটিকে প্রচার করতে শুরু করে। অবমুক্ত করা সরকারির নথি ও তুলনামূলক অসংখ্য ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এটি দ্ব্যর্থহীন ভাবেই বলা যায়, আইনত কিংবা জৈবিক-কোনভাবেই এনিটা পাফ আর যাই হোক-‘নেতাজী কন্যা’ নন।’’
এনিটা পাফ (বামে) ও সূর্য কুমার বসু (ডানে)
‘বসু পরিবারের একাংশের এই চক্রান্তের একটি বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে- নেতাজীর ভ্রাতুষ্পুত্র অমিয় কুমার বসুর পুত্র সূর্য কুমার বসু বিচারপতি মনোজকুমার মুখার্জীর নেতৃত্বাধীন কমিশনে এক হলফনামায় এনিতা পাফের রক্তের নমুনা না নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন; কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন তার (এনিটার) ডিএনএ জাপানের রেনকোজির বৌদ্ধ মন্দিরে রক্ষিত চিতাভস্মের সাথে মিলবে না’-যোগ করেন জয়ন্ত চৌধুরী, যিনি মুখার্জী কমিশনের অন্ততম একজন সাক্ষী ছিলেন।
সাংস্কৃতিক পর্বে ‘আমার স্বদেশ’ কবিতা আবৃত্তি করেন সুতপা সেনগুপ্ত, স্ফূলিঙ্গ আবৃত্তি করেন সোমনাথ চক্রবর্তী। নজরুলের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ এর অনুষঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন সৌমিলি। সম্মিলিত পরিবেশনায় ‘ভারত আমার ভারতবর্ষ’ এবং ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন সুতপা সেনগুপ্ত।