Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাড়িয়া গণহত্যা: চাপা পড়া বর্বরতার শিউরে উঠা কাহিনী

সৈয়দ মোকছেদুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০১:৫৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

প্রিন্ট:

বাড়িয়া গণহত্যা: চাপা পড়া বর্বরতার শিউরে উঠা কাহিনী

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

বাড়িয়া, গাজীপুর ঘুরে এসে : শিকারি হায়েনার মত সতর্ক-শয়তানি-দৃষ্টি। ভারি কালো বুট, মাথায় বুলেট প্রুফ হেলমেট। খাকি ইউনিফর্ম পড়া নিষ্ঠুর রূঢ় চেহারা। হিংস্রতার কাঠিন্যে ভরা। শ্বাপদের মত জ্বলজ্বলে চোখ ঠিকরে আগুন ঝরছে। পৃথিবী সেরা পাকিস্তানী সেনা সদস্য ওরা। হঠাৎ করে হানা দেয় ভাওয়াল বাড়িয়া নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। সেই দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৪ মে।

দোসর রাজাকার-আলবদর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত শতাধিক পাকিস্তানি সৈন্য তিনটি দলে ভাগ হয়ে ঢুকে পড়ে গ্রামটির পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়। হাতের অস্ত্র উঁচিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায়। তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে নিরীহ বাঙালিদের। কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে নির্বিচারে হত্যা করে তাদের।

গুলি করে অথবা সূচালোমাথা বেয়নেটের ধারালো ফলা দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে। সেই সাথে বাড়ি-ঘরগুলোতে প্রথমে কেরোসিন ছিটিয়ে দেয়। তারপর দূর থেকে আগ্নেয় অস্ত্র তাক করে গুলি ছুঁড়ে। তীব্র বেগে ছুটন্ত বুলেটের অগ্নি স্ফুরণে দপ করে জ্বলে উঠে সেইসব ঘর-বাড়ি। দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ে আগুনের লেলিহান শিখা। এরকম কায়দায় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দেয় বাড়িয়াসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের ঘড়বাড়িগুলি। সেদিন মাঝ-দুপুর থেকে শেষ বিকেল পর্যন্ত হানাদার বাহিনী ওই বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ঐ ভয়াল দিনটিতে বাড়িয়ার অন্তত ৮৫ জনকে হত্যা করে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক নিরীহ বাঙালি আবাল, বৃদ্ধ, বনিতার প্রাণ নির্মম নিষ্ঠুরভাবে কেড়ে নেয় পাকি-হানাদার বাহিনী।

সেদিন মাত্র তিন ঘন্টার সেই নৃশংসতায় ‘মৃত্যুপুরী’-শ্মশাণে পরিণত হয় বাড়িয়াসহ কয়েকটি গ্রাম। এই শোকগাথার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে না জানি কত অচেনা মানুষের অজানা কষ্টের করুণ কান্না; গভীর বেদনার অশ্রুসিক্ত বিলাপ ধ্বনি।

গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তের একটি গ্রামের নাম ‘ভাওয়াল বাড়িয়া’। জেলা শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে ১২ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামে ১৯৭১ সালে দুর্গম পথ পেরিয়ে যেতে হতো। বেলাই বিলের দক্ষিণ ধার ঘেঁষা গ্রামটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার। তখন কেবল হিন্দু সম্প্রদায়ের ৬০টি পরিবার বাস করতো এই গ্রামে। বর্ষায় নদী পথে যাতায়াত সহজ ছিল। অন্য সময় দুর্গম হাটাপথে যেতে হতো। শহর থেকে বাড়িয়া যেতে পাড়ি দিতে হতো দু’টি নদী। এ জন্য এলাকার লোকজনের ধারণা ছিল এমন দুর্গম পথ পেরিয়ে পাকিস্তানী বাহিনী সেখানে হানা দিতে আসবে না।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বাড়িয়া ইউনিট কমান্ডার মোঃ চাঁন মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও মুক্তিযোদ্ধা রফিক মোল্লা ও অন্যান্য স্থানীয় লোকের ভাষ্য থেকে জানা যায়, বৈশাখের শেষ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা কি ১টা বাজে তখন। গ্রামের বেশীর ভাগ পুরুষই ধান কাটা, মাড়ানো বা শুকানোয় ব্যস্ত। নারীদের কেউ রান্না বা পুরুষদের কাজে সহায়তা করছিল। এসময় অতর্কিতে হানা দেয় পাকবাহিনী।

গ্রামের প্রবেশ পথে বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকোটিকে বলা হয় ‘রেওলা ব্রিজ’। সেখান থেকেই গুলি করতে করতে পাকিস্তানী সৈন্যরা তিন দিক থেকে গ্রামের ভেতর ঢুকতে থাকে। কানের তালু ফাটানো গুলি বর্ষণের বিকট শব্দে মানুষ বুঝতে পারে পাকিস্তানি নরপশুর দল আক্রমণ করেছে। জান নিয়ে যে যার মত পালাতে শুরু করে।

তাঁরা এবং শহরের অনেকেই পরিবারের নিয়ে বেলাই বিল পার হয়ে কালীগঞ্জের দিকে পালিয়ে যেতে থাকেন নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজে। পিছু ধাওয়া করে তাদের মধ্যে নারী, পুরুষ, শিশু কিংবা বৃদ্ধ যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই নির্বিচারে হত্যা করেছে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। এমনকি পাগল ব্যক্তিও এই নির্মম হত্যাকান্ড থেকে রেহাই পায় নি। ঘরের বারান্দায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো এক অপ্রকৃতস্থ যুবককে। বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ওই যুবককেও জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে নরপশুর দল। ওইদিন বাড়িয়ার অন্তত ৮৫ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানী বাহিনী। এর মধ্যে বেলাই বিলের পাড়ে অন্তত ৪০ জন, ওয়ালিয়ারটেকে ৩০ জন এবং গ্রামের ভেতরে আরো ১৫ জনকে হত্যা করে।

সেই ভয়াল সময়ে এমনও ঘটেছে-বেলাই বিল সাঁতরিয়ে পালানোর সময় বুকে জড়িয়ে রাখা দুই শিশু কন্যা কখন যে মারা গেছে তা টেরও পায় নি হতভাগি মা। আজও কেঁদে মরে সেই মা। কষ্টের পাহাড় চাপা বুক চাপড়ে করুণ কান্নার সুরে আহাজারি করে। দিন কাটান সন্তান হারানোর দিনটির স্মৃতিচারণ করে। এছাড়া জানের নিরাপত্তার জন্য এই গ্রামে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন এমন অনেকেই নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন। এর সঠিক কোন হিসাব বা পরিসংখ্যানও নেই।

গণহত্যার প্রায় এক সপ্তাহ পর মৃত্যুপুরী বাড়িয়ায় ফিরে এসে লোকজন দেখতে পায় যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পচাগলা বিকৃত লাশ আর লাশ। যাদের দেখে চেনার উপায় ছিল না। তাদের নাম-পরিচয়ও এ পর্যন্ত জানা যায় নি। ওই সময় ভাওয়াল বাড়িয়া গ্রামে অন্তত ৬০টি পরিবারের বসবাস ছিল। হানাদার বাহিনী সবগুলো বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে পাকিস্তানী সৈন্যদের একটি অংশ পার্শ¦বর্তী কামারিয়া ও পাকুরিয়া গ্রামে হানা দেয়। তারা পাকুরিয়ায় ২৫/৩০ জনকে হত্যা করে। বাড়িঘরগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেয়। ফেরার পথে কামারিয়ায় আরো ৯ জনকে হত্যা করে।

মুক্তিযোদ্ধা রফিক মোল্লা জানান, হত্যাযজ্ঞ চালানোর সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা শতাধিক লোককে ধরে এনে ভাওয়াল বাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো করে। তারপর সবার মূল্যবান মালামাল কেড়ে নিয়ে এক পর্যায়ে তাদের ছেড়ে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী দুলাল চন্দ্র দাস (৫২) জানান, ‘সে সময় তার বয়স আনুমানিক ১৮ বছর। পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ করার পর পরিবার পরিজন নিয়ে বেলাই বিল পারি দিয়ে কালীগঞ্জ রাঙ্গামাটি মিশনারিতে অশ্রয় নেন। পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রামে হত্যাযঞ্জ চালিয়ে এ প্রান্তে পৌছাতে যে সময় লেগেছিল-এর মধ্যে ভাওয়াল বাড়িয়ার স্থানীয় লোকজন সহ আশ্রিত কয়েক হাজার লোক-কেউ নৌকায়, কেউ বা সাঁতার কেটে বেলাই বিল পার হয়ে কালীগঞ্জের দিকে চলে যায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা পিছু ধাওয়া করে এখানে পৌঁছে গুলি চালায়। অনেককে নৌকা থেকে নামিয়ে হত্যা করে। সাত দিন পর গ্রামে ফিরেন তিনি। দেখেন সব বাড়ি ঘর পাকিস্তানী সৈন্যরা পুড়িয়ে দিয়েছে। এখানে সেখানে, বিলের পানিতে পচা-গলা লাশ আর লাশ।

তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা মেশিনের সাহায্যে বেলাই বিল থেকে পানির সেচ দিয়ে কৃষিকাজ করতেন। বিলের ধারেই সেচ মেশিনের লোহার মোটা পাইপ জমিনে পড়ে ছিল। দেখতে কামানের বেরেলের মত। ‘কামানের নল’-ভেবে পাকিস্তানি সৈন্যরা ব্যাপক গুলি বর্ষণ করে তাতে। ফলে পাইপটির বিভিন্নস্থান ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল।

ভাওয়াল বাড়িয়া গ্রামের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা বিজয় দাস। তিনি জানান, ওই দিন পাক বাহিনী গ্রামের স্থানীয় এবং আশ্রয় নেওয়া লোক মিলিয়ে দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছিল। স্থানীয়দের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ের। তাদের মধ্যে শীলপাড়া ও হাটিপাড়ার ২৪ জন করে ৪৮ জন ও বিরলপাড়ার ৮ জন রয়েছে। বাকি অন্যান্যরা দক্ষিণপাড়া, ঠাকুরপাড়া, উত্তরপাড়ার এবং গ্রামে আশ্রয় নেয়া লোকজন।

সে সময় এ গ্রামে একটি মাত্র মুসলিম পরিবার ছিল। গৃহকর্তা মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া ও তাঁর বড় ছেলে মতিন ভূঁইয়া (১২) ওই দিন গ্রামে ছিলেন না। পরিবারের বাকি পাঁচ সদস্য লুকিয়ে পাশের বিলের ঢালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাকিস্তানি সেনারা তাদেরকেও ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া এখানকার ভানু চন্দ্র শীলের পারিবারের ৬ সদস্য হত্যাকান্ডের শিকার হন। এঘটনায় বাড়িয়ার অনেক পরিবার একাধিক স্বজনকে হারিয়েছেন।

হত্যাযজ্ঞের সময় লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় নিহতদের লাশ দাফন বা সৎকার করার কেউ ছিল না। ১০-১২ দিন পরে লোকজন গ্রামে ফিরে দেখেন লাশ শিয়াল-কুকুরে খেয়ে ফেলেছে। পড়ে আছে হাঁড়-কংকাল। অনেক লাশ বিলের পানিতে ভেসেও গেছে।

বিজয় দাসের বাড়ি ভাওয়াল বাড়িয়া গ্রামে, বেলাই বিলের পাশে। তিনি জানান, তখন তিনি দশম শ্রেণির ছাত্র। গুলির শব্দ পেয়ে গ্রাম ছেড়ে সরে পরার সিদ্ধান্ত নেন। তাড়াতারি বাড়ির লোকজনকে নিয়ে অগ্রসর হতে থাকেন। তখন ৭০ বছর বয়সি তাঁর ঠাকু মা পিছু নিয়ে আবদার করেছিল তাকেও সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

বাবা-মাকে নিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে গিয়েছিলেন বিজয়। ফিরে আসলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা। তাই চলৎশক্তিহীন ঠাকুমা-কে বিজয় ছেলে ভুলানোর মত বুঝিয়ে বলেছিলেন, “তুমি বুড়ো মানুষ, তোমাকে মারবে না ঠাকুমা, তুমি বাড়িতেই থাকো”। এটুকু বলে হঠাৎ কান্নায় বাষ্পরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিজয়। শিশুর মত চোখের জল হাতের তালু দিয়ে মুছতে মুছতে বলেন, কিন্তু ওই নিষ্ঠুররা সেদিন ঠাকুমাকেও হত্যা করেছিল।

এরপর তিনি বলেন, গুলির শব্দ শুনে আশপাশের অনেকেই পাশের বেলাই বিল সাঁতরে ও নৌকা দিয়ে ওপারে গিয়ে আশ্রয় নেয়। যারা যেতে পারেনি, তারা বিলের ঝোপের আড়ালে বা ড্রেনে কিংবা জলাশয়ে লুকিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাকিস্তানিরা নৌকা লক্ষ্য করেও গুলি করে। নৌকা থেকে ধরে ধরে গুলি করে ও বেয়নট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে নিরীহ বাঙালিদের। অনেক নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। বাড়িঘরে আগুন দেয়ায় কয়েকজন আগুনে পুড়ে মারা যান। হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বিকেল ৪টার দিকে তারা বাড়িয়া ত্যাগ করে।

তিনি হতাশার সুরে আরো বলেন, ‘বাড়িয়ায় নিহতদের আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এ পর্যন্ত যথাযথ সম্মান-মর্যাদা বা আর্থিক কোন সহায়তা পায়নি। শহীদদের স্মরণে গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্যে সরকারের দরবারের অনেক জায়গায় আবেদন করেছি। কিন্ত এ পর্যন্ত সাড়া মেলে নি।’

ভাওয়াল বাড়িয়া গ্রামের যুবক তমাল দাস (১৯) পেশায় ড্রাইভার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পেশাগত কারণে আমি বেশির ভাগ সময় গ্রামের বাইরে থাকি। গণহত্যা সম্পর্কে কিছু জানি না। একই গ্রামের বাসিন্দা ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র নাহিদ হাসান বলেন, গ্রামের প্রবীণদের থেকে গণহত্যার বিষয়ে কিছু কিছু শুনেছি। উনারা বেঁচে থাকায় আমরা কিছু জানতে পরেছি। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তো তাও জানতে পারবে না। ওইদিনের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ ও গ্রামে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের দাবিও জানান তিনি। তার সাথে একমত হয়ে স্কুল ছাত্র আকাশ চন্দ্র দাসও একই দাবির কথা বলেন ।

মহান মুক্তিযুদ্ধে সেই গণহত্যার পর কেটে গেছে ৪৫ বছর। গণহত্যার শিকার সেই সব চেনা-অচেনা নিহত বাঙালি সন্তানদের স্মরণে আজও নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিফলক বা সৌধ। এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণাও নেই নতুন প্রজন্মের উত্তরসুরিদের। গত ২৭ নভেম্বর সরেজমিনে বাড়িয়া গণহত্যার স্থান পরিদর্শন করতে যখন বেলাই বিলের তীরে গিয়ে পৌঁছেছি তখন শেষ বিকেল। এমন সময়েই সেদিন হত্যাযজ্ঞ শেষ করে ফিরে গিয়েছিল হানাদার বাহিনী।

সেদিনও কী পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়া সূর্য এমনই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিল রক্তাক্ত প্রান্তরে? সেদিনের অসংখ্য প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ার কষ্টে এখনো কী দাউ দাউ জ্বলছে চিরকালের সাক্ষী সূর্যদেব। প্রতিদিন শেষ বিকেলে ভক্তিভরে কাদের সে প্রণাম জানায়-হারিয়ে যায় দিগন্ত নীল দরিয়ায়?

 

প্রতিবেদক

[email protected]  

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer