
ফাইল ছবি
গাজায় ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ চলছেই। দখলদারদের হামলায় একদিনে প্রাণ গেছে আরো ১৩৮ ফিলিস্তিনির। আহত ৭ শতাধিক। এর মধ্যে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে আশার আলো নিয়ে প্রবেশ করা ত্রাণের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেছে ২০ জনের। এদিকে উপত্যকা পুরোপুরি দখলে নিতে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজায় সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রতিরক্ষা বাহিনী বাস্তবায়ন করবে। আর এই পরিকল্পনাকে চরম ভুল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। এদিকে গাজা দখল ও যুদ্ধ সম্প্রসারণ পরিকল্পনার বিরোধীতায় দেশে দেশে চলছে বিক্ষোভ
বিশ্বজুড়ে চাপ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত একদিনে দখলদার বাহিনীর হামলায় শতাধিক নিহত ও ৭ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থাও গুরুতর। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও আটকা আছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে অনাহারে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ প্রবেশ করতে দিতে কয়েকদিন আগে রাজি হয় ইসরাইল। মিশরের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, অবরোধ তুলে নেয়ার পর রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১ হাজার ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে।
প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ টন ত্রাণ সরবরাহ হলেও প্রয়োজনীয় ৬০০ ট্রাকের দৈনিক লক্ষ্যমাত্রায় এখনও পৌঁছানো যায়নি বলেও জানিয়েছে তারা। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অভিযোগ, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ কিছু পণ্য নিয়ে শর্ত আরোপ করায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে গাজায় ত্রাণের ট্রাক উল্টে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
গাজা সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানায়, গত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ইসরাইলি সেনাবাহিনী ত্রাণবাহী গাড়িগুলোকে একটি অনিরাপদ সড়ক দিয়ে পাঠায়। এর মধ্যে একটি ট্রাক মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপেক্ষমাণ জনতার ওপর উল্টে পড়ে।
বুধবার খবরে বলা হয়, খাদ্য সংকটে দিন কাটানো হাজার হাজার মানুষ ত্রাণ সহায়তার জন্য জড়ো হন। ত্রাণবাহী গাড়ির দিকে ছুটে যান অনেকেই। কেউ কেউ গাড়ির ওপর উঠে পড়েন। এতে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
গাজা পুরোপুরি দখলে নিতে নেতানিয়াহুল পরিকল্পনা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ বলেছেন, গাজায় সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক নেতৃত্বই নেবে এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
অন্যদিকে ইসরাইলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেছেন, গাজা দখলের পরিকল্পনা একটি ভুল সিদ্ধান্ত। বেশিরভাগ ইসরাইলি নাগরিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে নন এবং এই মুহূর্তে গাজা পুরোপুরি দখলের চিন্তা বাস্তবিক নয়। লাপিদ বলেন, এই পথে হাঁটলে ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে।
এদিকে নেতানিয়াহুর গাজা দখল ও যুদ্ধ সম্প্রসারণ পরিকল্পনার বিরোধীতায় বিক্ষোভ চলছে খোদ ইসরাইলেই। বিক্ষোভকারীরা কাঁধে আটা ও চালের বস্তা এবং ‘ক্ষুধার্ত শিশুদের’ ছবি নিয়ে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। তাদের দাবি, গাজায় সামরিক আগ্রাসন চলতে থাকলে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর পাশাপাশি ইসরাইলি জিম্মিদের জীবনও হুমকির মুখে পড়বে।