
ছবি : লেখক
এক.
বেড়ানো মানেই ভালোলাগা। সেই ভালোলাগার জন্য মানুষ হাজার হাজার লাখ লাখ টাকা খরচ করে থাকে। ২০১৭ সালের রমজানের ঈদের ছুটিতে আমরা সেই নীতিই অবলম্বন করেছি অনেকটা। আমরা বিশ্বাবিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিগণসহ ঈদের ছুটির আগেই এবারের ছুটির মধ্যে কক্সবাজারের নতুন চালুকৃত মেরিন ড্রইভে বেড়াতে যাব। সেজন্য আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইতোমধ্যে পারদর্শিতা অর্জনকারীদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেওয়া হল। এ টিমটিই বিভিন্ন সময়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুর অপারেটরের ভূমিকা পালন করে আসছে। এবারের ভ্রমণের অন্যতম শর্ত হলো পারতপক্ষে পরিবার ছাড়া যাওয়া যাবে না। যেই কথা সেই কাজ। যে কারণে ভিসি দপ্তরের সেকশন অফিসার জাহিদুল হোসেন তাঁর এক অসুস্থ মেয়েকে, প্রকিউরমেন্ট অফিসার আহসান উল্লাহ রাসেল তাঁর এক বছরেরও কম বয়সের এক বাচ্চা এবং আইন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তাঁর দুবছরের মেয়েকে নিয়ে দুঃসাহসিক এ অভিযানে যুক্ত হল। আর ডা. আশরাফ তালুকদার তাঁর সদ্য বিবাহিত নতুন বউ নিয়েই রওয়ানা দিল। কিন্তু যারা এখনো অকৃতদার তাঁরা কোথায় পাবে পরিবার! তারা পরিবার ছাড়াই। কিন্তু এমন দুয়েকজন সাথে জুটল যে পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে সপরিবারে সওয়ার হতে পারে নি। তবুও সব মিলে ৩০-৩৫ জনের একটি বহর হল।
সপরিবারে যেতে হবে বলার পরে আমি একটু দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলাম আদৌ সকলকে একসাথে রাজি করাতে পারি কিনা। কিন্তু একটি বিশেষ কারণে তাতে রাজী করা সহজ হয়ে গেল। যখন ট্যুর প্রোগ্রামটি একেবারে শুরুর দিকে ছিল তখন আমার গিন্নির সাথে আলাপ করলাম যে, ‘ঈদের ছুটিতে কক্সবাাজারে বেড়াতে যেতে হবে সপরিবারে’। তখন এ অনুজাত সে অনুহাত ছেলেদর স্কুল খোলা হতেই পরীক্ষা ইত্যাদি নানা অজুহাত হাজির করল। কিন্তু যখন বলা হলো যে, ‘এবারে ঢাকা-কক্সবাজার বিমানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে’। তখন বলল যে, ‘একটু সময় নিয়ে ভেবে দেখি’। পরেরদিন ঠিকই আমাকে জানাল যে তারাও আমার সাথে যেতে পারবে। শুনে খুশি হলাম এইভেবে যে অফিসে সবার দেওয়া শর্ত পালন করা যাবে। সাথে ট্যুর টিমকে বিমানের টিকেট কনফার্ম করার কথা বলে দিলাম। আমরা সপরিবারে যাচ্ছি শোনে হিসাব বিভাগীয় প্রধান নজরুল সাহেবও সপরিবারে যাওয়ার জন্য রাজি হলেন। কিন্তু ছেলের পরীক্ষা থাকায় এবং শেষ মুহূর্তে তিনি নিজেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় বিমানের টিকেট করেও যেতে পারেননি। এটির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আমাদেরও একটু মন খারাপ হলো।
আমাদের যাত্রা শুরু হবে ১-৪ জুলাই ২০১৭। বেলা সাড়ে ১১ টাকায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আমাদের ফ্লাইট। ফ্লাইটের টিকেট পাওয়া গেল রিজেন্ট এয়ারওয়েজের। ভিসি মহোয় ঢাকা থেকে তাঁর পরিবার নিয়ে আমাদের সাথে বিমানবন্দরে যোগ দেবেন। অন্যরা যারা ঢাকায় থাকেন তারাও ঢাকা থেকেই বিমানবন্দরে চলে আসবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে এবং ময়মনসিংহ শহর থেকে আমরা যারা যব তাদের জন্য একটি মিনি বাস ঠিক করা হলো। অনেক সকালে রওয়ানা করতে হবে অন্যথায় ময়মনসিংহ থেকে গিয়ে বিমান ধরা যাবে না। অনেক ভোরে রওয়ানা করতে হবে জেনেও আমার পরিবারের কারো মধ্যে কোন উদ্বিগ্ন হওয়ার চিহ্ন লক্ষ্য করলাম না। বরং সবার মধ্যেই একটি উষ্ণ অনুভুতি লক্ষ্য করলাম। এর একটি কারণ তারা বেড়াতে যাচ্ছে সেটি, আরেকটি হলো প্রথমবারের মতো বিমানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জিত হবে।
দুই.
সকাল ছ’টায় আমার বাসার নিকটবর্তী রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ড্রাইভার সাহেব এসে উপস্থিত হলেন। রাতেই ব্যাগ গুছিয়ে রাখা হয়েছিল। সকালে সহজেই সময় মতো বাসে উঠলাম এবং সময়ের আগেই আমরা ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছে যাই। দেখতে দেখতে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই এসে উপস্থিত হলেন। আমার এর আগে একবার কৃষি বিভাগে চাকরির সুবাদে অফিসিয়ালি সরকারিভাবে একটি ট্রেনিং প্রোগ্রামে ফিলিপাইনের ইরিতে যাওয়ার সুবাদে বিমানে যাতায়াতের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু আমার পরিবারের অন্যদের বিমানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এবারই প্রথম। সেজন্য প্রতিটি ধাপেই তারা মজা পাচ্ছে। বিশেষ করে নাফি ও তকি তো একেবারে বর্ডিং পাস করানো, লাগেজ পার্সেল করা এবং লাগেজ স্ক্যান করা ইত্যাদি প্রতিটি বিষয়ে খুবই আগ্রহভরে অবলোকন করছে। বিমানবন্দরের ফর্মালিটি সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা ফ্লাইটে উঠার জন্য একটি কানেকটিং বাসে করে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের বিমানটিতে যাচ্ছি। যেতে যেতে বাসে এবং বাস থেকে নেমে বিমানে উঠার সময় অনেক ছবি ও সেলফি উঠালাম। বিমানে উঠে বসেই মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই অন্য সবার মতো আমিও ফেসবুকে পোস্ট করে দিলাম।
বিমানে বসে নাফি, তকি এমনকি ওদের মায়েরও সেকি অনুভুতি! আমার যে ভালো অনুভুতি হচ্ছিল না তা কিন্তু নয়। প্রতি সারিতে প্রতিপাশে তিনটি করে সিট। সেজন্য নাফি, তকি ও তাদের মা এক সারিতে এবং আমি পরের সারিতে বসলাম। বিমান উঠা-নামার সময় একটু ঝাঁকুনি হয়। তখন ওরা বমি করে কিনা সেটা নিয়ে আমার একটু চিন্তা ছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তা কিছুই হয়নি। বরং বিমান উঠা-নামার সময়ে পাশের জানালা দিয়ে বাইরের নিচের দৃশ্যাবলী দেখে তারা বেশ মজা পাচ্ছিল। কীভাবে বিমান উপরে উঠার সময় বাড়িঘর, দালান কোঠা আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যায় এবং আবার বিমান নামার সময় নিচের বাড়িঘর, গাছপালা, নদীনালা আস্তে আস্তে কীভাবে বড় হয়ে যায় তা দেখে খুবই মজা নিতে লাগল তারা। এবারে প্রথম ধাপ সম্পন্ন করে ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে গিয়ে পৌঁছালাম। তবে বিমান বন্দরের ফর্মালিটিগুলো বেশ সময় সাপেক্ষ। যে কারণে মূল ভ্রমণ ৪০ মিনিটের হলেও ইন এবং আউটের সময়সহ আরো প্রায় দু’ঘণ্টা চলে যায়। তবুও ভালো যে কোন ট্রাফিক জ্যাম তো নেই!
আমরা আগে থেকেই সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট এবং সুগন্ধা পয়েন্ট- দুটি থেকেই কাছাকাছি পাঁচ তারকা হোটেল ‘দ্য কক্স টুডে’-তে সিট বুকিং দিয়ে রেখেছিলাম। যেকারণে আমরা বিমান থেকে নামার পরই সেই হোটেলেরই একটি গাড়ি গিয়ে হোটেলে পৌঁছে দেয়। হোটেলটি খুবই উন্নতমানের। পাশেই ‘হোটেল সী-গাল’সহ আরো কয়েকটি পাঁচ তারকা হোটেল রয়েছে। এরই মধ্যে আমোদের অগ্রবর্তী একটি টিম সেখানে পৌঁছেছিল। ব্যাচেলর হিসেবে যারা গিয়েছে তারা আগের রাতেই ময়মনসিংহ থেকে বাসে করে রওয়ানা করেছিল। তারাই সেখানে সকালে আমাদের আগেই পৌঁছেছে। আমরা সপরিবারে যে রুমটি পেলাম সেটির সম্মুখভাগ হলো হোটেলের সামনের দিকে, যেখান থেকে নিচে সুইমিং পুল এবং হোটেল লবির একটি অংশ দেখা যায়। তাছাড়া সামনের কক্সবাজার শহরের অনেক দৃশ্যও সেখান থেকে অবলোকন করা যাচ্ছে। বেলা দুটোর দিকে এসে হোটেলে উঠেছি। একটু ফ্রেশ হয়ে সকলে মিলে বাহিরে পাশেই ‘কাশবন’ নামের একটি খাবার হোটেলে খেতে গেলাম। খাওয়ার পর সারা বিকেল একেবারে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাবণী পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্রের ঢেউ, দৃশ্যাবলী দেখতে দেখতে সন্ধ্যার পর হোটেলে ফিরেছি।
তিন.
রাতে আবার সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করেছি। পরে হোটেল লবিতে বসে আমাদের সাথে যাওয়া সহকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সংগীত বিভাগের শিক্ষক জমিয়ে গান গেয়ে পুরো হোটেল মাতিয়ে তুলেছেন। সাথে অন্যান্যদের সাথে তকিও বেশ তাল দিল এবং মজা পেল। পরদিন সকালে উঠে হোটেল কর্তৃপক্ষের বুফে নাস্তা খাওয়ার পর আমরা আবারো সকলে লাবণী পয়েন্ট দিয়ে সমুদ্রের গর্জন দেখতে চলে গেলাম। এমনিতেতো সমুদ্র সবসময় গর্জনের মধ্যেই থাকে। কিন্তু এসময় সমুদ্র আরো বেশি উত্তাল ছিল। কারণ তখন সেখানে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত চলছিল, তাই বেশ বৃষ্টি ও বাতাস হচ্ছিল। একেতো ঈদের ছুটি দ্বিতীয়ত মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি ভ্রমণপ্রিয়। কাজেই এর ভিতরেও সৈকতে কিন্তু পর্যটকের কোন কমতি নেই। বরং বৃষ্টিতে ভিজে, বাতাসে কাতর হয়েও অন্য যেকোন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশিই মনে হল আমার কাছে। আমরাও নাফি, তকি ও নিশুসহ সকলে সাগরে ঢেউয়ে মিশেছি এবং ছবি তুলেছি। এভাবে দুপুর পর্যন্ত সৈকতে থেকে পরে হোটেলে আবার সুইমিং পুলে নেমেছি নাফি ও তকিকে নিয়ে। দুজনেই পানি দেখে ভয় পায়। তারপরেও নাাফিকে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক করে নামাতে পেরেছিলাম। কিন্তু তকিকে নামাতে পারিনি, আমাদের অন্য সহকর্মীরাও তকিকে নামানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু পাড়ে আমাদের সাথে সঙ্গ দিয়েছে।
সুইমিং শেষে হোটেল কক্ষে ফিরে তৈরী বের হয়েছি দুপুরের খাওয়ার জন্য। তারপর আমরা বার্মিজ মার্কেটে যাই কিছু কেনাকাটা করার জন্য। তার ফাঁকে ফাঁকে যেখানে যা চোখে পড়ছে কিনে নিয়েছেন গিন্নি। সেখান থেকে ফিরে শুনলাম ভিসিস্যারসহ অন্য অনেকে সুগন্ধা পয়েন্টের পাশের রাস্তায় সামুদ্রিক মাছ ভাজি খাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে দুটি মাছ ভাজা আমিও খেলাম। অতঃপর সামুদ্রিক মাছের সুটকি কেনার পালা। সহকর্মী রনি, সিদ্দিককে নিয়ে গেলাম নামকরা সুটকির দোকানে । সেখান থেকে লইট্টা, রূপচাঁদা, সুরির সুটকি এবং সামুদ্রিক বিশেষ আরেকটি জাটকা ইলিশসদৃশ মাছের চেপা কিনে সকলে মিলে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরে আসি। এসব কাজগুলো কিন্তু আমরা করছি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ভিতর। উল্লেখ্য এখানে এসে আমার জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে পারি। সেটি হলো কৃষি ক্ষেত্রে লেখালেখির মাধ্যমে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আমাকে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক-১৪২২’ এর জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সময় আমার মোইলটি সহকর্মী ফাহাদুজ্জামান শিবলীর কাছে থাকার কারণে তাঁরা যখন মোবাইলটি আমাকে ফেরৎ দিতে আসল তখনই সেই আনন্দ সংবাদের ফোনটি পাই। সাথে সাথেই শিবলীর ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে আমাকে চারিদিক থেকে অভিনন্দন জানাতে থাকে। পরে ঐ রাতে গানের আসরটি আমার পদক প্রাপ্তির জন্য উৎসর্গ করা হয়েছিল যা আমার জন্য খুবই সম্মানের ছিল। যে পদকটি পরবর্তীতে ১৬ জুলাই ২০১৭ তারিখে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করেছিলেন।
চার.
পর্যটন মানে পরিব্রাজন, ভ্রমণ। পর্যটন মানে বেড়ানো। বেড়ানোর মাধ্যমেও অনেক সময় অনেক কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। এ পর্যটন করতে গিয়েই কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন। এ সম্পর্কে অনেক ভেদবাক্য জনশ্রুতি হিসেবে রয়েছে। ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু’ তেমনি একটি জনশ্রুতি। এসব কথার একটি অন্তর্নিহিত তাৎপর্য রয়েছে। সেটি হল আমরা সাধারণত বেড়ানো বলতে শুধু বিদেশ বিভুইকে বুঝে থাকি। কিন্তু আমাদের দেশের অভ্যন্তরে যে কত-শত সুন্দর সুন্দর উপভোগ্য স্থান রয়েছে সেটা মানতে পারিনা। এ প্রসঙ্গে এখানে আমি একটি বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আগেই উল্লেখ করেছি, সম্প্রতি আমার নিজের কর্মস্থল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যে পর্যটক দল নিয়ে বাংলাদেশের পর্যটন নগরীখ্যাত কক্সবাজারে পরিভ্রমণ করি। সেখানে ভ্রমণের এক পর্যায়ে বিভিন্ন জনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সময় একজনকে বলতে শুনেছি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা। সেখানে রিক্সায় চড়ার সময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন সেই রিক্সাওয়ালা বলে উঠল, ‘এত দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ যে কেন এখানে ছোটে আসে বুঝি না। কী আছে এ বালি ও নোনা পানির ভিতর! কই আমরা তো জন্মের পর থেকে এখানেই আছি, তা তো কিছুই আমরা পাই না’। আবার যদি আরেকটি কথা চিন্তা করি তাহলে তা কেমন হবে! প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যায়। তারা দু-চার দিনের জন্য সেখানে গিয়ে মানসিক উত্তেজনার মধ্যে কাটায়। কিন্তু যারা সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা কিংবা যারা চাকুরীর পোস্টিং নিয়ে সেখানে যায় তারা হয়তো পর্যটকদের মতো উত্তেজনা অনুভব করবে না সেটাই স্বাভাবিক।
যাহোক, পর্যটন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মনের খোরাক জোগার করে এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে। আমাদের দেশে যে অনেক পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বৃহত্তর সিলেটের চা বাগন, সিলেট ও কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা, সারাদেশের বিভিন্ন পুরাকীর্তি, ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, বিশ্ব ঐহিত্য হিসেবে সুন্দরবন, সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা, সিলেটের লাউয়াছড়া প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, পাহাড়, নদী, খাল-বিল ইত্যাদি কত না কি। চট্টগ্রামে রয়েছে পতেঙ্গা সী বীচ। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এটির দৈর্ঘ হলো প্রায় ৯৬ মাইল বা ১২০ কিলোমিটার।
সম্প্রতি এর সৌন্দর্য সঠিকভাবে উপভোগ করার সুযোগ সৃষ্টির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি দৃষ্টিনন্দন দুই লেনের আধুনিক সড়ক উদ্বোধন করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন করছেন দেশবাসীর সাথে আমিও খবরটি মিডিয়ার কল্যাণে তখনই জানতে পেরেছি। এটি দেশের উন্নয়ন পরিক্রমায় আরেকটি সংযোজন হিসেবে উল্লেখ করে তখন আমার একটি কলামে লিখেওছিলাম। কিন্তু তখন এটি সম্পর্কে সত্যিকার অর্থে আমার পুরোপুরি কোন ধারণা ছিলনা। আমি মনে করেছিলোম, হয়তো সমুদ্রে কোন স্টিমার বা জাহাজ দিয়ে ড্রাইভ হবে। আমার মনে হয় দেশের অনেকেরই হয়তো একইরকম অনুমান কিংবা ধারণা হতে পারে।
পাঁচ.
সেজন্য এবার যখন আমি আমার পরিবারসহ সহকর্মীদের নিয়ে মেরিন ড্রাইভে যাব বলে ঠিক করেছি কক্সবাজার, তখনো আমার একই ধারণা বিরাজমান ছিল। যখন সেখানকার বিশেষ ধরনের চাঁন্দের গাড়িখ্যাত খোলা জিপে করে সারাদিনের জন্য ৮০ কিলোমিটার রাস্তা আসা-যাওয়ার জন্য উঠি তখন আমার ভুল ধারণা ভাঙ্গে। সে এক অসাধারণ অনুভুতি। আমাদের ভ্রমনের তৃতীয় দিন আমরা সবাই মিলে প্রায় ৩৬ জনের মতো ছিলাম। তিনটি চাঁন্দের গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ি বহু প্রত্যাশিত ও প্রতীক্ষিত মেরিন ড্রাইভে। আমাদের আগ্রহের কাছে দিনভর মুষলধারে বৃষ্টি কোন বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সেখানে গেলে কী যে এক অনুভুতির সৃষ্টি হয় তা বলে বুঝানো কঠিন। গর্বে বুকটা ফুলে উঠে এই ভেবে যে আমাদের বাংলাদেশে এমন একটি পর্যটন সম্পদ রয়েছে। পুরো ৮০ কিলোমিটার রাস্তা ধরেই চোখের দৃষ্টি অন্যত্র ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই।
কক্সবাজার থেকে টেকনাফ সীমান্ত হয়ে সাবরাং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বিস্তৃত এ মেরিন ড্রাইভের রাস্তাটি। কক্সবাজার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই উষ্ণ উত্তেজনা। উত্তেজনার প্রধান কারণ ও আকর্ষণ ছিল যাওয়ার পথে রাস্তার বামপাশে পাহাড় আর ডানপাশে সাগর। সাগরের ছোট ছোট ঢেউ মনের গহীনে তীব্র সমুদ্রের বিশালত্বের আনন্দের অনুভুতি এনে দিচ্ছিল বারবার। অপরদিকে পাহাড়গুলি মনে হলো পর্যটকদের দিকে মাথা হেলিয়ে কুর্নিশের ভঙ্গিতে তাকিয়ে রয়েছে। নতুন নির্মিত রাস্তাটিতে এমনভাবে যেন গাড়ী চলছে যেখানে পিন পতনের শব্দ ও ঝাঁকুনিটি পর্যন্ত নেই। মনে হলো পর্যটনকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এমন একটি উদ্যোগেরই প্রয়োজন ছিল এতদিন।
উপাচার্য মহোদয়সহ একটি চাঁন্দের গাড়িতে সপরিবারে আমরা ১২ জন উঠেছিলাম। গাড়িতে যাওয়ার সময় আমরা উত্তেজনায় একেকজন একেক কথা বলছিলাম। ডানপাশে সাগরের অংশে মাঝে মাঝেই ঝাউ গাছের সারি। জানা গেছে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর বঙ্গবন্ধুই নাকি সাগরের কুল রক্ষার জন্য সারি সারি ঝাউবন সৃজন করেছিলেন। ঝাউবন দুটি কাজ করে থাকে। একটি হলো সামুদ্রিক ঝড়ের বাতাস থেকে কিছুটা হলেও উপকূলবাসীকে রক্ষা করে থাকে, অপরদিকে ঢেউয়ের তোড়ে যাতে পাড় ভাঙ্গতে না পারে সেটিার নিরাপত্তা বেষ্টনি হিসেবে কাজ করে থাকে। অনেককে বলতে শুনেছি, সাগর পাহাড় ইত্যাদি স্থানে নাকি শুষ্ক বা শীতকালে বেড়াতে হয়। কিন্তু বর্ষাকালে যে অন্যরকম অভিজ্ঞতা সেটা সেসময় সেখানে গিয়েই বুঝতে হবে। যদি মানুষের কথা শুনে ভয়ে এসময়ে সেখানে বেড়াতে না যেতাম তাহলে আরেকটি অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত থেকে যেতাম।
ছয়.
এমনিতে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রথাগত লাবণী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট এবং একটু অদূরে ইনানী ও হিমছড়ি বীচের দিকেই পর্যটকদের ঢল সবচেয়ে বেশি। আর সেজন্য এসব বীচ পয়েন্টকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন তারকা বিশিষ্ট হোটেল, মোটেল, রেস্ট হাউজ ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। বেড়ানোর জায়গার তুলনায় পর্যটক সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে এসব স্থানে অনেক ভীড় হয়ে পড়ে। কিন্তু মেরিন ড্রাইভের মাধ্যমে যে রাস্তা করা হয়েছে সেখানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৮০ কিলোমিটার একসাথে সমুদ্র ও পাহাড় দর্শন একত্রে হয়ে যাচ্ছে। সেখানে যেতে যেতে সৈকতে সাম্পান নৌকার মাধ্যমে মাছ ধরার দৃশ্য দেখার দৃষ্টান্ত বিরল।
পৃথিবীর এমন অনেক দেশ আছে যেখানে তাদের মোট দেশজ অর্থনীতির প্রধান আয় আসে পর্যটন খাত থেকে। দূরদেশ ইউরোপ আমেরিকা ছাড়াও আমাদের পাশ্ববর্তী ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, চীন ইত্যাদি প্রধান। বাংলাদেশের যে পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে সর্বশেষ সম্ভবনাময় সংযোজন হলো এ মেরিন ড্রাইভ। এখন সেখানে প্রয়োজন শুধু দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য তাদের উপযোগী সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন ভৌত অবকাঠামো তৈরী করা।
একটি জিনিস আমরা সবাই জানি, পর্যটন একটি বিরাট খাত। সেখানে শুধু সরকারের পক্ষে এর সপক্ষে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা সম্ভবপর নয়। বিশ্বের কোন দেশেই তা একা সরকারের পক্ষে সম্ভবপর হয়ে উঠেনি। সরকার শুধু একটি পথ বাতলে দিতে পারে মাত্র। কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভের রাস্তাটি তৈরী করে দেওয়া সেই উদ্যোদেরই একটি অংশ মাত্র। সরকার সেখানে সেকাজটিই করে দিয়েছে। কাজেই এ খাতের দ্রুত উন্নয়নের জন্য ব্যাপক দেশি বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। সেটির উন্নয়নের দায়িত্ব নিতে হবে বেসরকারি খাতকেই।
সেখানে বেসরকারীভাবে পর্যটকদের জন্য বিনিয়োগ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আশি কিলোমিটার রাস্তার পাহাড়ের অংশে অনেক ফাঁকা জায়গা রয়েছে যেখানে ইচ্ছে করলেই পরিকল্পিতভাবে পর্যটনবান্ধব স্থাপনা, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি গড়ে তোলা সম্ভব। সরকার শুধু এসবের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করবে এবং তদারকি করবে। তবে আমরা মেরিন ড্রাইভের সময় রাস্তার পাশে কিছু দখলী সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেন্টুন ইত্যাদি দেখেছি। এগুলো যদি সত্যি সত্যি পরিকল্পিতভাবে পর্যটন সহায়ক স্থাপনা তৈরীর উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। আর যদি সেগুলো অবৈধ দখলদার হয়ে থাকে তাহলে কোন বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টির আগেই সেগুলোর বিষয়ে সরকারকে কঠোর ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। তা না হলে পর্যটনের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা শুরুতেই হোঁচট খাবে।
সাত.
এমনিতেই বিভিন্ন অজুহাতে সারাদেশে সরকারি সম্পত্তি ও জায়গা দখলের যেমন মহোৎসব চলে এখানে যেন তা না হয় দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সচেতন সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি এখন থেকে মাত্র ৫ বছর আগে ২০১২ সালে একবার কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলাম। মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের। এখনকার ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী আরো ৫-১০ বছরে উল্ল্খেযোগ্য উন্নয়ন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এভাবেই বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে। সেই ধারা আরো বেগবান হয়ে পুরো বাংলাদেশ একটি পর্যটন নগরীতে পরিণত হোক- এটাই তো আমাদের স্বপ্ন হওয়া উচিত।
এ বৃষ্টির ভিতরেই আমরা মেরিন ড্রাইভের মতো আনন্দময় কাজটি শেষ করলাম। আমাদের টিমটি সেখান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য টেকনাফে গিয়ে সেখানেও কিছু কেনাকাটা করা হলো। তারপর ফেরার পথে সাগরের পাড়ে একটি হোটেলে বৃষ্টির মধ্যে বসে থেকে অর্ডার দিয়ে সামুদ্রিক মাছ রান্না করিয়ে খেয়েছি। ভ্রমণ আমরা একেকজন ভিজে ভিজে এমন অবস্থা হয়েছে যে কাউকেই যেন চেনা যাচ্ছে না। কিন্তু আশ্চর্যেও নাফি, তকিতো নয়ই অন্য আরো ছোট বাচ্চারাও কেউ অসুস্থ হয়নি ইনশাল্লাহ। ফিরতে ফিরতে একবারে সন্ধ্যা হয়ে গেল। যেহেতু পরদিন আমরা ফিরে আসব এবং বেলা আড়ইটায় আমাদের ফিরতি ফ্লাইট। আমাদের বারোটার মধ্যে হোটেল থেকে চেক আউট হতে হবে।
বৃষ্টির মধ্যে ভিজেই রাতের খাবার বাহির থেকে খেয়ে আসলাম। এমেিনতো প্রতিরাতেই ড. জাহিদুল কবীর সাহেবের কণ্ঠের ঝড় তুলে চলেছেন। বিশেষ করে তাঁর লোকজ সংগীতের দ্বরাজ কণ্ঠ। আমরা প্রতিরাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এ সংগীতের আসরটি বসাতাম। ওনার গান শুরু হলেই হোটেলের অন্যান্য বোর্ডাররাও এসে জড়ো হতেন। যাহোক, শেষ রাত হিসেবে আসরটি আবারো বসানো হলো যেখানে সহকর্মীদের কয়েকজন নাচেও অংশ নিলেন। এমনিতেই তো তকি তার স্বভাবজাত ব্যবহারে সবার চোখের মণি হয়ে উঠেছে, তারপর সে ওখানে দুটি গান করল এবং সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হলো। পরদিন সকালে ফিরতে হবে তাই যেসব কেনাকাটা করতে হয়েছে সেগুলো আস্তে আস্তে গুছানো হলো। যেহেতু আমরা আসার পর থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছি, সেজন্য যেদিন কাপড়ের যে সেটটা পড়েছি সেটি আর শুকায়নি। কাজেই ভিজা কাপড়ের আলাদা একটি স্তুপ হয়েছে। শেষ সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষের বুফে নাস্তা পূর্বে ঘোষিত সময় সকাল ৯ টার মধ্যে সেরে আবারো শেষবারের মতো লাবণী পয়েন্টে গমণ করি। সেখানে বৃষ্টি ভেজা সমুদ্র সৈকতে আরো কিছুক্ষণ কাটিয়ে হোটেলে ফিরে আসি। বৃষ্টির ভিতরেও সৈকতে গেলাম কারণ আমরাতো এত কষ্ট করে এজন্যই সেখানে বেড়াতে গিয়েছি।
বারোটার মধ্যে হোটেল থেকে চেক আউট হলে, হোটেলের গাড়িটি দিয়েই আমাদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়। বিমানবন্দরে গিয়ে সেখানকার ফর্মালিটিগুলো করতে করতে প্লেনের সময় হয়ে গেল। তারপর আস্তে আস্তে আবারো প্লেনে উঠে যথারীতি ৪০ মিটিটের মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে গেছি। এবারো বর্ডিং পাস ও সিটিং এরেঞ্জমেন্ট আগের মতই রইল। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফেরার জন্য আমরা আগের মতই একটি গাড়িযোগে বিকাল চারটায় ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। রাস্তায় হালকা চা-নাস্তা খেয়ে সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে সবাই যার যার বাসায় এসে পৌঁছে গিয়েছি। যাই হোক না কেন এবারের ট্যুরটি একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। তার সাথে ঈদের আনন্দ যোগ হয়ে পুরো বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি রোমাঞ্চকর অনুভুতি হয়েছে। কর্মব্যস্ততার মধ্যে মানসিক অবকাশের জন্য মঝেমধ্যে এমন ভ্রমন খুবই কাঙ্খিত। আর সেখানে বাচ্চারা থাকলে তো কথাই নেই।
লেখক: ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
বহুমাত্রিক.কম