ছবি- সংগৃহীত
অব্যাহত লোকসানের পরও এবছর চালু হচ্ছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। আম পরিবহনের জন্য বিশেষায়িত ট্রেনটি চলবে ১০ জুন থেকে। তবে এবার লোকসান এড়াতে কুরিয়ার সার্ভিসের আম পরিবহন করতে চায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যদিও এখন পর্যন্ত কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর সাড়া মেলেনি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো চালু করা হয় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। চার বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই ট্রেনে ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। এর ভাড়া বাবদ রেলওয়ে আয় করেছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা। ওই চার বছরে ট্রেনটি চালাতে শুধু জ্বালানি খরচই হয়েছে ৯২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। ফলে রেলের লোকসান হয়েছে ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে এবার চাঁপাইবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে যে সব কুরিয়ার সার্ভিস আম পরিবহন করে, তাদের আম ঢাকা পর্যন্ত ট্রেনে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে বিপুল পরিমাণ আম দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। এ আমগুলো ঢাকা পর্যন্ত ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে নিয়ে যেতে আগ্রহী তারা। তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কাভার্ডভ্যানের মাধ্যমে আম পরিবহন করে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো। এই আম তারা প্রথমে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে পাঠানো হয় বিভিন্ন ভাবে।
তিনি বলেন, যদি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত আম ট্রেনে পরিবহন করা হয় তাহলে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো খরচ কমে যাবে। অন্যদিকে রেলের আয় বাড়বে। ঢাকায় নির্ধারিত স্টেশন থেকে তারা আম বিভিন্ন ভাবে পাঠিয়ে দিবে। ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে এ বছর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত বিশেষ লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে আম পরিবহন করা হবে। এতে আম নষ্ট হবে না। পাশাপাশি যমুনা সেতু ও পদ্মা সেতু দিয়ে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন ঢাকায় যাবে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছাবে বলে আশা তাদের।
কুরিয়ার সার্ভিসের আম ট্রেনে পরিবহনের বিষয়ে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসের উপ মহাব্যবস্থাপক আলতাব হোসেন। তিনি জানান, এ নিয়ে তাদের প্রধান কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান জানান, গত ১৬ মে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন এবং নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন, বাজারজাতকরণ বিষয়ক সভায় রেলওয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রস্তাব। সভার রেজ্যুলেশনে প্রস্তাবটি লিপিবদ্ধ করা হবে এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে।