ছবি- সংগৃহীত
মালয়েশিয়ায় অভিবাসন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮৫ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিককে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। স্থানীয় সময় বুধবার দেশটির সেরেমবান এলাকায় ও সেনাই এলাকার কয়েকটি কারখানায় তাল্লাশি চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।
আটকদের মধ্যে বুধবার সেরেমবান থেকে ১১০ বিদেশিকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি রয়েছে বলে দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টার জানিয়েছে।
দেশটির আরেক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম মালয় মেইল জানিয়েছে, জোহর প্রদেশের অভিবাসন বিভাগ সেনাইয়ের কয়েকটি কারখানা থেকে ৬৯ বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়। তাঁদের কেউেই বৈধ ওয়ার্ক পারমিট দেখাতে পারেনি।
দুটি গণমাধ্যমে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ৮৫ জন বাংলাদেশিকে আটকের তথ্য জানা গেছে।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের পরিচালক কেনিথ তান আইক কিয়াং বলেছেন, গতকালের (বুধবার) অভিযানে আটক ১১০ বিদেশির মধ্যে ৯১ জন পুরুষ।
অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে এসব প্রবাসী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছে। কেনিথ তান আরও জানান, আটক ১১০ বিদেশির মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি ছাড়াও রয়েছেন ৬৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক, ইন্দোনেশীয় ১৩, ভারতীয় ৬, পাকিস্তানি ৯, শ্রীলঙ্কান ৬ জন। নেপালি ২ জন নাগরিকও রয়েছেন।
তিনি বলেন, চলতি অভিযানে এ পর্যন্ত পাঁচ শিশুসহ ৬২৮ বিদেশিকে আটক করা হয়েছে।তবে যাদের বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল, তাঁদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ৬২৮ জনের মধ্যে ৫৮৪ জনই পুরুষ। রাজ্য এবং সংস্থাগুলিসহ ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী নিয়ে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তান জানান, অভিযানের খবর পেয়ে অবৈধ অভিবাসীদের কেউ কেউ ভবনের তলা থেকে লাফ দিয়ে বা ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। অভিযান থেকে বাঁচতে দ্বিতীয় তলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পরে ৩৫ বছর বয়সী একজন নারী মাথায় আঘাত পাওয়ার ঘটনাও ঘটে।এ সময় এসব অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগকর্তা ও আশ্রয়দাতাদের হুঁশিয়ারি দেন এই অভিবাসন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, আমি জনসাধারণ এবং নিয়োগকর্তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, তাঁরা যেন অবৈধদের আশ্রয় না দেয় বা ভাড়া না দেয়। কারণ এটি করার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিবাসন আইনের ৫৫ এবং ৫৬ (১ ডি) ধারার অধীনে তাঁদের শাস্তির বিধান হবে।
অন্যদিকে জোহর অভিবাসন বিভাগের পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহির বলেছেন, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা পাস ছাড়া বিদেশি শ্রমিকরা কাজ করছেন বলে তথ্য পাওয়ার পর বুধবার বিকেলে সেনাইয়ের খাদ্য কারখানা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময়
আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তারা মোট ১১০ জন বিদেশি ও স্থানীয় বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তাদের মধ্যে ৪০ জনকে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে আটক করা হয়। ’’
বাহারউদ্দিন তাহির বলেছেন, আটকদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৯ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী, মিয়ানমারের ২ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী, বাংলাদেশের ৬ জন, পাকিস্তানের দুজন, নেপাল এবং ভারতের একজন করে নাগরিক রয়েছেন।