Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

খালেদা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঘুমিয়ে ছিলেন: শেখ হাসিনা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০০, ২২ মার্চ ২০২৩

প্রিন্ট:

খালেদা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঘুমিয়ে ছিলেন: শেখ হাসিনা

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও তারা প্রতিরোধমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।

বুধবার সকালে গণভবন থেকে চতুর্থ ধাপে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে স্বাগত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় আসার সময় যে ব্যবস্থা নিতে হবে, সে সময় বিএনপি সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যেহেতু আমাদের সংগঠন (আওয়ামী লীগ) সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে, আমি প্রথমে ফোন পাই। আমাদের চট্টগ্রাম, বিশেষ করে দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চল পুরোপুরি তছনছ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ প্রথম ছুটে গিয়েছিল মানুষের কাছে। লাখ লাখ মানুষ মারা যায়, আমরা নিজ চোখে দেখেছি।’

‘আমরা ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে দেখি মানুষ এবং পশু-পাখির মরদেহ একসঙ্গে ভাসছে। আমরা সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মানুষের পাশে দাঁড়াই, তাদের সাহায্য করি। তখনকার যে সরকার, আমরা যখন সংসদে বিষয়টা তুললাম, তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন, কিছুই জানতেন না। আর আমাদের তিন বাহিনীর প্রধান গলফ খেলছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ে যে এত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে, তা-ও তারা জানতেন না,’ বলেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিমান ও নৌবাহিনীর সব কিছু চট্টগ্রামে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়ে। রাস্তাঘাট বন্ধ ছিল। তারপরও আমরা ছুটে গিয়েছিলাম, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সেসময় অনেক মানুষ উদ্বস্তু হয়ে কক্সবাজারে বস্তিতে থাকত। আমরা তাদের পুনর্বাসন করেছি।’  

বর্তমান সরকার ছিন্নমূল ও ভাসমানসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে চলেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা ভাসমান জীবনযাপন করে, বিশেষ করে রবগুনার রাঙ্গাবালী এলাকায় তাদের দেখা যায়। যারা মানতা শ্রেণি নামে পরিচিত। যারা শুধু মাছ ধরে জীবনযাপন করে; তাছাড়া হিজরা সম্প্রদায় আছে যাদের সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত দেয়া হয়েছে এবং বেদে শ্রেণি সবাইকে পুর্নবাসন করে দেয়া হচ্ছে।’

যখন কোনো প্রকল্পের জন্য জমি নেয়া হচ্ছে, তাদেরও পুর্নবাসন করা হচ্ছে। প্রতিটি প্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গে ওই সব মানুষ যেন উদ্বাস্তু হয়ে না যায় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘শুধু ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে তা কিন্তু না; পাশাপাশি সুপেয় পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করে দেয়া হচ্ছে। তাদের ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে কারণ, যে যে ধরনের কাজ করতে চায়; সেটা যেন তারা করতে পারে তার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা সেখানকার মেয়েরাও কাজ করছে।’  

অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে আরও যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি তিনটি উপজেলায় উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। উপজেলা তিনটি হলো, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশাল জেলার বানারীপাড়া পৌরসভার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প।

সারা দেশের সব উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ৩৯ হাজার ৩৬৫টি গৃহ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের কাছে হস্তান্তর করা হলো আজ। এর আগে প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। আজকের পর হস্তান্তরিত মোট গৃহের সংখ্যা দাঁড়াবে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৭টি। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এসব তথ্য জানান। 

মুখ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের ৭টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন। এর আগে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে তিনি ভূমিহীন-গৃহহীন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। আজ গৃহ হস্তান্তরের পর দেশে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলার সংখ্যা দাঁড়াল ৯টিতে।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer