
ফাইল ছবি
ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আকাঙ্ক্ষিত খনিজসম্পদ চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের নতুন খনিজসম্পদ প্রকল্পে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার পাবে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং ইউক্রেনের পক্ষে ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ইউলিয়া সভিরিডেনকো এই চুক্তি সই করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের একটি ছবি দিয়েছেন বেসেন্ট। ছবির সঙ্গে সংযুক্ত পোস্টে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন একটি স্বাধীন, সমৃদ্ধ ও সার্বভৌম ইউক্রেন দেখতে চায়। এই চুক্তিতে হোয়াইট হাউজের সেই অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে।
এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে উল্লেখ করে সভিরিডেনকো বলেছেন, সরাসরি আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি আকাশ প্রতিরক্ষা খাতের মতো কিছু ক্ষেত্রে আমরা নতুন সহায়তাও পেতে পারি।উল্লেখ্য, সভিরিডেনকোর বক্তব্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কোনও মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।
চুক্তির একটি খসড়া যাচাই করে দেখেছে রয়টার্স। খসড়া বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছে, পূর্ববর্তী মার্কিন সহায়তার জন্য ট্রাম্প অর্থ ফেরত চাইছিলেন, সেটা চুক্তিতে বাদ পড়েছে। ইউক্রেনের আপত্তি থাকা এই বিষয়টি বাদ পড়লেও তাদের চাওয়া অন্য একটি ইস্যু এতে অন্তর্ভুক্ত দেখা যায়নি।খনিজসম্পদ চুক্তির বিনিময়ে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কোনও শর্ত দেখতে পায়নি রয়টার্স।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রায় তিন বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেন পুনর্গঠনে যৌথ বিনিয়োগ তহবিল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে এই চুক্তি ইউক্রেনের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন ঘটনায় ওয়াশিংটন এবং কিয়েভের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের আশা, রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য মার্কিন সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
জার্মানির কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে দেশটিতে এককভাবে সর্বোচ্চ সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহায়তার আর্থিক পরিমাণ সাত হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।
ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টা উদ্যোগ ও খনিজসম্পদ বিষয়ক চুক্তি দুটি ভিন্ন বিষয়। তবে এদুটো ক্ষেত্রেই ইউক্রেন যুদ্ধে ওয়াশিংটনের সামগ্রিক কৌশল প্রতিফলিত হয়। ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় এসেই মার্কিন নীতিতে আমূল পরিবর্তন এনে রাশিয়ার প্রতি নমনীয় অবস্থান নিয়েছেন। তিনি একাধিকবার বিভিন্ন কথায় সরাসরি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে যুদ্ধের জন্য দায়ী করেছেন। এমনকি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রুশ অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূমি ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিতেও কোনও রাখঢাক করেননি।