
-গাজীপুর জেলা প্রশাসন একবছরের অধিক সময় ধরে নাটমন্দিরকে পুরানো ফার্ণিচার রাখার জন্য স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করছেন। জেলা শিল্পকলার সন্নিকটে এ মঞ্চ জেলা শিল্পকলা একাডেমিও জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারছে না।
জমজমাট পরিবেশে গাজীপুর জেলা পর্যায়ে জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০০৩ অনুষ্ঠিত হলেও নানা বিষয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা জেলা শিল্পকলা একাডেমি, গাজীপুর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়।
নৃত্য, অভিনয়, আবৃত্তি ও সংগীত বিষয়ে এ প্রতিযোগিতায় গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূতর্ অংশগ্রহণ করে। ভাওয়াল রাজবাড়ীর ছাদে কয়েকটি চিলে কোঠা নিয়ে কার্যক্রম চালানো জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের ষান্মাসিক পরীক্ষা চলাকালীন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যথাযথ হয়নি বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন অভিভাবকদের অনেকেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নৃত্য ও অভিনয় বিষয়ে প্রতিযোগীদের উপস্থিতির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিলো। তবে শুক্রবার সংগীত বিষয়ে প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকদের উপস্থিতির সংখ্যা ছিলো উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আবৃত্তিতে ততটা উপস্থিতি ছিলো না।
সংগীত “খ” গ্রুপের প্রতিযোগী প্রভার বাবা বিবেক জানান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির স্বল্প পরিসরে এ আয়োজন নিয়ে অভিভাবকগণ নানা সমালোচনা করেন। গরমের মধ্যে খোলা ছাদে প্রতিযোগী ও অভিভাবকদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করাটা কষ্টকর ছিলো। এর মধ্যে বৃষ্টির কারণে কিছুক্ষণ ভিজতে হয়েছে তাদের। পরে অবশ্য শিল্পকলার ছোট্ট জায়গায় গাদাগাদি করে আশ্রয় নেন তারা।
সাংস্কৃতিক কর্মীরা জানান, আর কোনও স্থান না পেলেও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরে শতবর্ষী মঞ্চ নাটমন্দিরে এসব আয়োজন করা যেতো। কিন্তু জেলা প্রশাসন একবছরের অধিক সময় ধরে নাটমন্দিরকে পুরানো ফার্ণিচার রাখার জন্য স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করছেন। ফলে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে নানা অনুষ্ঠান করবার মতো উপযোগী করে নাটমন্দিরকে সংস্কার করা হলেও তা এখন অবহেলা ও অযতেœ নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া জেলা শিল্পকলার নিজস্ব কোনও ভবন নেই। ভবন নির্মাণের জন্য দুইদফা টাকা বরাদ্দ আসলেও প্রশাসন কোন জায়গা ঠিক করে দিতে না পারায় বরাদ্দের সে অর্থ ফেরত গেছে।
এদিকে নাটমন্দিরেও কোন অনুষ্ঠান করা যায় না। জেলা শিল্পকলার সন্নিকটে এ মঞ্চ জেলা শিল্পকলা একাডেমিও জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারছে না। তাদের অনুষ্ঠান করতে অন্য কারও দ্বারস্থ হতে হয়, নয়তো মোটা অংকের টাকা গচ্চা দিয়ে অডিটোরিয়াম ভাড়া করতে হয়।
অন্যদিকে এ প্রতিযোগীতার বিচার কাজে প্রতিটি বিষয়ে দুইজন করে বিষয় সংশ্লিষ্ট বিচারক থাকলেও তাদের সাথে একজন করে ম্যাজিস্ট্র্যাট দেওয়া নিয়েও নানা আপত্তির কথা ও সমালোচনা শুনা যাচ্ছে। বিচার কাজে কোনও কোনও ম্যাজিস্ট্রেটের দেরী করে আসা এবং কেউ কেউ না আসার কারণে এ কার্যক্রম ক্ষেত্র বিশেষ হোচট খেয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যিনি যে বিষয়ে ভালো করে জানেন না তাকে সে বিষয়ে বিচারক করাও এক রকমের অবিচার। বিষয় সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের প্রতি এটা অবমাননাকর এবং প্রতিযোগীদের মেধা মূল্যায়নের অন্তরায়ও।