ছবি- বহুমাত্রিক.কম
গাজীপুরে এক নারী পার্লার কর্মীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে চিহ্নিত দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় প্রভাবশালী সরকার পরিবারের ভাগিনা ও আওয়ামীলীগের কর্মী পরিচয়ে এরা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। অভিযোগ, এঘটনায় জড়িত এক যুবলীগ ক্যাডারসহ আরও কয়েকজনের নাম উঠলেও তাদের বাঁচাতে প্রভাবশালীরা জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে দৌঁড়ঝাপ করছে।
গত শুক্রবার উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের বলদীঘাট বাজারে এই ঘটনা ঘটে। পরে থানায় এ বিষয়ে একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়। ভুক্তভোগী নারী ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি বিউটি পার্লারে কাজ করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন শিমুলতলা গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে কামরু ও একই ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের গোলাপ মিয়া।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১৫ অক্টোবর রাত দশটার দিকে কাওরাইদ বাজার থেকে সিএনজি যোগে ত্রিশালের উদ্দেশে রওনা হয় ভুক্তভোগী নারী। একপর্যায়ে শিমুলতলা এলাকায় গ্রেপ্তারকৃতরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন একত্রিত হয়ে ভুক্তভোগী নারীর সিএনজি আটকায়। এরপর নারীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তার ধর্ষক বখাটে কামরু স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজউদ্দিন সরকার এবং বর্তমান ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদল সরকারের ভাগিনা। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই বখাটে কামরু এলাকায় সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সরকার পরিবারের বিরুদ্ধে স্থানীয় বলদীঘাট বাজারের অন্যের দোকানঘর জোরপূর্বক জবরদখল, বেপরোয়া চাঁদাবাজি, সরকারি জমিতে ঘর তুলে বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে এই চক্রের দৌরাত্ম্যে স্থানীয়রা প্রায় সময় আতঙ্কে থাকেন। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদল সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে গ্রেপ্তার হওয়া বখাটে কামরুসহ অন্য সহযোগিরা এলাকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছিল।
জড়িত এক যুবলীগ ক্যাডারকে বাঁচাতে দৌঁড়ঝাঁপ
আলোচিত এই ধর্ষণের ঘটনায় অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় দুই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হলেও জড়িত এক যুবলীগ নেতাসহ আরও কয়েকজনকে বাঁচাতে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ধর্ষক কামরুর আত্মীয় এক যুবলীগ ক্যাডারও এই ঘটনায় জড়িত। গ্রেপ্তারকৃত ২ জনকে সামনে রেখে বাকীদের আড়াল করতে প্রভাবশালী একটি মহল জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। বিশেষ করে ওই যুবলীগ ক্যাডার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঘনিষ্ঠ ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার জামাতা হওয়ায়ে তাকে বাঁচাতে নানা প্রচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি।
শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দু’জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বহুমাত্রিক.কম
