
ফাইল ছবি
চলতি বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। স্থানীয় সময় শনিবার দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত কুয়ালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রায় ৯৩ হাজার ৮৯৫টি পাসপোর্টের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫২ হাজারের অধিক পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হয়েছে। বাকি প্রায় ২৫ হাজার পাসপোর্ট ঢাকাস্থ ডিআইপি’র প্রিন্টিংয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এর মধ্যে প্রক্রিয়াগত জটিলতায় ঢাকায় পাসপোর্ট প্রিন্টিং ২৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকায় পথিমধ্যে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। তবে, হাইকমিশনের সক্রিয় প্রচেষ্টায় এই জটিলতা নিরসন সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এম.আর.পি সিস্টেম পুরাতন হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে সার্ভার জটিলতায় পাসপোর্ট প্রিন্টিং প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়
তবে চলতি বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া চলমান বৈধকরণ প্রকল্প রিক্যালিব্রেশন ২.০ প্রক্রিয়ায় কোন প্রবাসী যাতে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় হাইকমিশন সে ব্যাপারে সচেতন রয়েছে। সেই সঙ্গে দালাল এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দোরাত্ম্য থেকে অসহায় প্রবাসীদের রক্ষার্থে হাইকমিশন বদ্ধ পরিকর। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করে কুয়ালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ ত্বরান্বিত করার ব্যপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়।
এরপর চলতি বছরের ২৬ মে পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ৩৪৯টি ডিমান্ডের বিপরীতে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৭৭৯ জন নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদন মালয়েশিয়া সরকার অনুমোদন প্রদান করেছে। এরই মধ্যে প্রায় দুই লক্ষাধিক বাংলাদেশি নতুন কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে পৌঁছেছে। বাকি প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার নতুন কর্মীর আগমন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানানো হয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসা নিয়ে আসা কিছু সংখ্যক কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়ার ঘটনাটিও হাইকমিশনের নজরে এসেছে। এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডিমান্ড অনুমোদন প্রক্রিয়ার দুর্বলতা ও কিছু কিছু এজেন্সির গাফিলতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়া ভাগ্যবিড়ম্বিত কর্মীর সংখ্যা মোট আগত কর্মীর তুলনায় খুবই নগণ্য এবং এটি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণযোগ্য সীমার মধ্যে রয়েছে।
এ সকল বাংলাদেশি কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা, মালয়েশিয়া সরকারি দফতর এবং নিয়োগকারী এজেন্টের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশন নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে যাতে বৈধভাবে আগত একজন বাংলাদেশি কর্মীও মালয়েশিয়াতে বিড়ম্বনার শিকার না হয়। তবে এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার ডিমান্ড অনুমোদনকারি কর্তৃপক্ষ ও উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ারর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে হাইকমিশন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশির বসবাস বিশেষ করে খেটে খাওয়া সাধারণ কর্মী ভাইদের স্বার্থ সংরক্ষণে স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ হাইকমিশন সকল প্রকার মিথ্যা ও অপপ্রচার ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিয়ে সত্য ও সুন্দরের চর্চার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছে।