
ছবি: বহুমাত্রিক.কম
গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর এলাকায় শ্যামলীমোড়ের পাশে গজারী বনে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী পোশাক শ্রমিক (২৪) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ছয় জনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের (মামলা নম্বর ১৪) করেন। মামলার পর পরই এ ঘটনায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত চার জনকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু ঘটনার মূল মাষ্টারমাইন্ড স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর ছেলেসহ দুজন এখনো পলাতক রয়েছে।
আটককৃত আসামীরা হলেন, মুহাম্মদ হান্নান (৩০), পিতা— সাইফুল ইসলাম, গ্রাম— বারোদা, থানা— বেড়া, জেলা— পাবনা, নীরব হোসেন (২১) পিতা— লাল চান মিয়া, গ্রাম— মনিপুর, থানা— জয়দেবপুর, জেলা— গাজীপুর, মুহাম্মদ সোহাগ হোসেন, পিতা— মুহাম্মদ কামাল হোসাইন, গ্রাম— মনিপুর জৈনাতলা রোডের জহিরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, আযহার (১৯) পিতা— মুহাম্মদ রুহুল আমিন, গ্রাম— মনিপুর, থানা— জয়দেবপুর, জেলা— গাজীপুর, মনিপুর শহীদের মোড় আব্দু রাজ্জাকের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম বছর খানেক আগে গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর এলাকায় স্থানীয় একটি কারখানায় হেলপার পদে চাকরি নেন। এ সুবাদে তার একই কারখানায় হানজালা নামে এক অপারেটরের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা দু'জন শেরপুর জেলার বাসিন্দা। গত সোমবার (২১ আগস্ট) মনিপুর শ্যামলী মোড় এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডিউটি শেষ করে চটপটি খেতে বাসা থেকে বের হন। পরে সহকর্মী হানজালার সাথে দেখা হলে দুজনে কথা বলার জন্য রাস্তার দক্ষিণে বনের বাগানের ভিতর দিয়ে দুই পায়ের চলাচলের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকে। হঠাৎ আটককৃত আসামীরা ও পলাতক আসামীরা মিলে দুজনকে প্রথমে ধরে গজারী বনের ভিতরে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। হানজালাকে বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে এবং বিশ হাজার টাকা দাবী করেন আসামী হান্নান। বাকি আসামী ও ঘটনার মূল হোতা পলাতক আসামীরা মিলে ওই নারী শ্রমিককে ভয়—ভীতি দেখিয়ে গজারী বনের ভিতরে স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীর ছেলের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। পরে রাত ১২টার সময় স্থানীয়রা গজারী বনের ভিতরে লোকজনের আনা গোনা দেখে এগিয়ে আসলে ঘটনা কাউকে বললে ভিকটিমকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে পথচারীরা ভিকটিমকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র সরকার জানান, ২১ আগষ্ট ভিকটিম সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। অসুস্থ থাকায় থানায় মামলা করতে দেরি হয়। আমরা বিষয়টি জানার সাথেসাথে মামলা রেকর্ড করে অভিযুক্ত চারজনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদেরকে দ্রুত সময়ে গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। ভিকটিমকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যপারে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন জানান, ভিকটিমের থানায় অভিযোগ পাওয়ার চার ঘন্টার ব্যবধানে চার আসামীকে গ্রেফতার করেছি। অপর দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে।