Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ২৫ ১৪৩২, শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫

‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০২, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

প্রিন্ট:

‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না’

ফাইল ছবি

দেশজুড়ে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সারা দেশে বছরজুড়ে পরিকল্পনা নিতে হবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক রয়েছে। এ নিয়ে আপনারা কী করতে চাচ্ছেন কিংবা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনাদের কোনো অবহেলা আছে কিনা, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৌরসভা কিংবা সিটি কর্পোরেশনকে এই প্রশ্নটি করলে সেটা যৌক্তিক হতো। অবহেলা থাকলে সেটা যারা মশা নিধন করেন, যারা ময়লা ও ড্রেন সাফ করেন এবং যারা ময়লা গাড়িতে করে নিয়ে যান--এটা তাদের দায়িত্ব। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব এটা না। কাজেই এ প্রশ্ন স্বাস্থ্যবিভাগে করবেন না।

মন্ত্রী বলেন,আমাদের প্রশ্ন করবেন, চিকিৎসায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিংবা চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি আছে কিনা? এই প্রশ্ন আমাদের করতে পারেন। চিকিৎসার বিষয়ে বলতে পারি, এখানে কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, হাসপাতালগুলোতে যথেষ্ট শয্যা আছে। কেবল ঢাকায় না, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গুর জন্য আলাদা শয্যা তৈরি করেছি। সব জায়গায়, যাতে যথেষ্ট পরিমাণ, ফ্লুইড, মানে স্যালাইন থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা নিজেরা স্যালাইন আমদানি করেছি, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আমদানির অনুমোদন দিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রায় ৫০ লাখ প্যাকেট স্যালাইন তৈরি করে। স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই। আমার অনুরোধ, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা সময়মতো পরীক্ষা করে নেবেন, তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসবেন, চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যাবেন। দেরি করে এলে আর কিছু করার থাকে না

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন মেয়রদের একটা লম্বা অর্থাৎ সারা বছরের পরিকল্পনা থাকতে হবে। আমি যখন মানিকগঞ্জে গেলাম, সেখানে দেখলাম ৫০০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে। আগে পাঁচটা রোগী ছিল না। এতো রোগী কোথা থেকে এসেছে? আশপাশের জেলা থেকে এসেছে। সেখানে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে, সেখানে ড্রেন আছে, ময়লা পড়ে আছে। এগুলোতে যদি ওষুধ ব্যবহার করা না হয়, তাহলে তো আর ডেঙ্গু কমবে না।

মন্ত্রী বলেন, বড় বড় কথা বললে তো আর ডেঙ্গু কমবে না। ডেঙ্গুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যে পদক্ষেপগুলো নেয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত না। যদি পর্যাপ্তই থাকত, তাহলে আড়াই লাখ লোক এ রোগে আক্রান্ত হবেন না। এখন পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। কাজেই এটা বড় সংখ্যা, আমরা খুবই দুঃখিত। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে যে পরামর্শ দেয়ার, কিংবা চিকিৎসা দেয়ার, সেটা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যেখানে গিয়ে বলা দরকার বা যাদের পদক্ষেপ নেয়া দরকার--স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়--সেখানে গিয়ে বলবেন। তারা কী পরিকল্পনা নিয়েছে? বছরব্যাপী পরিকল্পনা নেয়া দরকার। কেবল ঢাকা না, সারা দেশে পরিকল্পনা নেয়া দরকার। তবেই ডেঙ্গু কমবে। তাছাড়া ডেঙ্গু কমবে না।
 
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৮৯ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯২ হাজার ৫৪৪ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৪৫ জন ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ১৮১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৭৩৫ জন এবং ঢাকার বাইরের ৪৪৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, রোববার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৭৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৫৩৯ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৯৩৬ জন। একই সময়ে মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ৫ জন ঢাকার আর ঢাকার বাইরের ৭ জন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer