Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫

‘এই আন্দোলন ডিসেম্বর নির্বাচনের দাবির লড়াই :আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২১ মে ২০২৫

আপডেট: ২৩:২৫, ২১ মে ২০২৫

প্রিন্ট:

‘এই আন্দোলন ডিসেম্বর নির্বাচনের দাবির লড়াই :আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই’

ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে সমর্থকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, তার দল যাতে নির্বাচনে আসতে না পারে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে না পারে সেজন্য ’ষড়যন্ত্র’ চলছে।

বুধবার রাতে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে তিনি বলেন, চলমান এই আন্দোলন ডিসেম্বরে দেশে একটি নির্বাচন হবে কি না সে দাবি আদায়ের লড়াইও।

তার অভিযোগ, ”আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম উপদেষ্টার পদে থেকে ষড়যন্ত্র করছেন। আরও দুয়েকজন উপদেষ্টা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছেন যেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আগামীতে যেন নির্বাচনে না আসতে পারে।

“বিএনপি যেন ভালো না করতে পারে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে না, আমাদের নেতা দেশে এসে দেশ সংস্কারের ৩১ দফা যেন বাস্তবায়ন করতে না পারে সেই অপচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে।”নগর ভবনের সামনে গত ১৪ মে থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসা ইশরাকের সমর্থকদের কিছু অংশ বুধবার সকালে মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মসজিদ মোড়ের সড়কে অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর মৎস্য ভবনে অবস্থান করা সমর্থকরা চলে গেলেও কাকরাইলের সড়কে রয়ে যান বাকিরা।
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার অদূরে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সমর্থকদের এ অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে রাতে উপস্থিত হন আদালতের রায়ে মেয়র পদে জয়ী ঘোষিত ইশরাক।

পরে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের সামনে তার সমর্থকদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, অনেকেই হয়তো মনে করতে পারেন ঢাকায় নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুধু একজন ব্যক্তিকে মেয়রের পদে বসানোর জন্য। কিন্তু আসলে তা নয়।

“এই আন্দোলন কোনো এক ব্যক্তির ক্ষমতা বা কোনো একটি পদের জন্য লড়াই নয়। আজকের এই লড়াই নির্ধারণ করে দেবে যে এই বছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমরা আদৌ একটি নির্বাচন দেখতে পাব কি না। যেখানে দেশের জনগণ ভোটদানের মাধ্যমে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে এটি সেই আন্দোলন।”

ইশরাক বলেন, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কথা বললেই একটা পক্ষ সমালোচনা করত। এখন ষড়যন্ত্র পরিষ্কার হয়ে গেছে।

“তারা মনে করত আমরা ক্ষমতায় যেতে উদগ্রীব। আমাদের নেতৃবৃন্দ আগে থেকেই বলছিলেন এ ধরনের একটা ষড়যন্ত্র হতে পারে, সেটির আলোকেই নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছিল। এখন এটা জনগণের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেল।”

তার অভিযোগ, মেয়র নির্বাচনের ফল নিয়ে রায় দেওয়ার সময় অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতর থেকে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের সময়ও একই ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি তা হতে দেবে না।

“আজকে নির্বাচন কমিশনকে এক প্রকার জিম্মি করা হয়েছে। পুরো ব্যুরোক্রেসি তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এই অবস্থায় আমি একজন প্রার্থীর সঙ্গে যদি এই আচরণ করে তাহলে যখন জাতীয় নির্বাচন হবে, রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রশ্ন চলে আসবে, তখন কি আপনারা আশা রাখতে পারেন যে নিরপেক্ষভাবে বাংলাদেশ জাতীয় জাতীয় নির্বাচন হবে? তারা এই সরকারে থাকা অবস্থায়?

”শেখ হাসিনা সরকারের আমলেও একই কাজ হয়েছিল। বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ, নির্বাচন কমিশন ধ্বংস, প্রশাসনকে ব্যবহার করেছ। আরেকটি স্বৈরাচারের উত্থান আমরা এই বাংলার মাটিতে হতে দেব না।”

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের উপদেষ্টা হিসেবে থেকে যাওয়ার সমালোচনা করেন ইশরাক হোসেন। বলেন, এনসিপি গঠনের পর আশাবাদী হলেও পরে দলের নেতাদের কার্যক্রমে হতাশ তিনি।

“নতুন একটি দল হচ্ছে তা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ভালো। তরুণরা এগিয়ে আসুক। কিন্তু দেখলাম দল গঠন করার পর এই সরকারের মধ্যে তাদের প্রতিনিধি সরকারে রয়ে গেল। তার মানে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম সেখান থেকে আমরা পেছনে গেলাম।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার কীভাবে নিরপেক্ষতা দেখাবে সেই পদক্ষেপ তাদেরকেই নিতে হবে। তবে প্রথম কাজ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলমের পদত্যাগ।

“তারা পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলের কাজ করুন। দলীয় পদে থেকে সরকারের ওপর আর হস্তক্ষেপ করা যাবে না, আমরা তা হতে দেব না। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই।”

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer