বগুড়া : বগুড়া শাজাহানপুরের জালশুকা উত্তরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের রুপা আকতার নামে ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাল্য বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বাল্য বিয়ের প্রতিবাদ বা আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, বিয়ের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগদান করে ভোজনে অংশ নেন বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক এবং ম্যনেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য।
সোমবার সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে এমন তথ্য জানা যায়। স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন পুর্বে ওই বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সদস্য মোঃ উমর আলী তার মেয়ে বিদ্যালয়টির ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রুপা আকতারকে গোপনে বিয়ে দেয়। বিয়ের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগদেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন, প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু জোহা মোঃ ইত্তাক আহমেদ ও ম্যনেজিং কমিটির সদস্য আবদুল মজিদ সহ কয়েকজন। সেখানে তারা খাওয়া-দাওয়া করে গোপনে চলে আসেন।
বাল্যবিয়ের কারণে ছাত্রী রুপার বাবা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ উমর আলীর নিকট রুপার জন্ম নিবন্ধন কার্ড দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, বিয়ের বয়স হয়ে গেছে তাই বিয়ে দিয়ে দিলাম।
বাল্যবিয়ের প্রতিকার না করার কারন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু জোহা মোঃ ইত্তাক আহমেদ বলেন, মেয়েটি তার বিদ্যালয়ের না বিধায় তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তবে গত বছর বিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য আনা হয়েছিল কিন্তু আমরা ভর্তি করিনি।
এমন সুপরিকল্পিত চাতুরতা ও গোপনীয়তার কারণ উদঘাটনে দেখা যায়, বর্তমানে ছাত্রী রুপা ঐ বিদ্যলয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী এবং ২০১৭ সালে রুপা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আর এ কারনেই রুপার বাবা উমর আলী ২০১৭ সালের বিদ্যালয় ম্যনেজিং কমিটি নির্বাচনে ভোটার তালিকায় তার নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয় এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়। এই সুবাদে বিদ্যালয়টির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও কয়েকজন সদস্যের সাথে আন্তরিকতা হওয়ায় তাদেরকে এই বাল্যবিয়েতে দাওয়াত দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য বিদ্যালয়টির সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীনের নিকট বারবার ফোন করা সত্ত্বেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এদিকে বাল্যবিয়ের কঠোর আইনের ব্যাপারে স্কুলগুলোতে নানা ধরনের সভা সমাবেশ সেমিনার ও শিক্ষকদের প্রতিকারের দায়িত্ব দেয়া সত্ত্বে¡ও তা পালন না করায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে এলাকার সর্বত্র।
বহুমাত্রিক.কম