Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

৩০ দালালের নিয়ন্ত্রণে যশোর জেনারেল হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

প্রিন্ট:

৩০ দালালের নিয়ন্ত্রণে যশোর জেনারেল হাসপাতাল

যশোর : যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৩০ দালালের অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা। হাসপাতালে ঢুকলেই তাদের খপ্পড় থেকে রক্ষা পাচ্ছে না চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারী ও পুলিশের সহযোগিতা থাকায় এসব দালালরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা বলছেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পোষ্টার, মাইকিং থেকে সর্বদা দালালদের খপ্পরে না পড়ার জন্য আহবান জানানো হয়। তারপরও ৩০ দালাল গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সাধারণ মানুষদের অতি কৌশলে তাদেরকে ক্লিনিক বা ডায়গনোষ্টিক সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসার নামে সর্বস্ব লুট করছে।
জানা গেছে, যশোর জেনারেল হাসপাতালের দীর্ঘদিন ধরে রুবেল, মিলন, উৎপল, রাসেল, ছলেমান, মোটা সুমন, ঘেনা, হাতকাটা আসাদ, নয়ন, তছির উদ্দিন, হিটু, হাসু, সজিব হোসেন উকিল, মনি, বিদ্যুৎ, জুয়েল, ভিটু, হাসান, লুঙ্গি সিরাজ, সোহেল, সুব্রত, জুলহাস, সিরাজ, আলম, মামুন, মিলন (বকচর) হাসপাতালে দালালি করছে। এদের অনেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হলেও জেলখানা থেকে বের হয়ে ফের দালালি করছে। আবার অনেকেই আছে রাজনৈতিক পরিচয়ে দালালি।

মাগুরার শতখালীর কলেজ শিক্ষক ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার জানান, যশোর জেনারেল হাসপাতালে সর্বত্রই সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। সিসি ক্যামেরার এসব ভিডিও দেখে একদিনেই পুলিশ চেষ্টা করলে হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মুল করতে পারে। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এবং হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার বিরামপুর এলাকার সোহেল রানা জানান, যশোর পুরাতন কসবার পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর শিহাবুর রহমান মাঝে মধ্যে হাসপাতালে আসে। তিনি প্রায় এসব চিহ্নিত দালালদের সাথে আড্ডা মারেন। তাহলে হাসপাতাল থেকে কিভাবে দালাল নির্মুল হবে সে প্রশ্ন করেন। একই সাথে তিনি দালালরা পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে খুশি করেন বলে অভিযোগ করেন।

হাসপাতালে দালালি করতেন তুহিন নামে এক ব্যক্তি। ভ্রম্যমাণ আদালত তাকে কারাদন্ডাদেশ দেন। জেলখানা থেকে বের হয়ে তিনি আর হাসপাতালে যান না। অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন তুহিন।

শনিবার রাতে তুহিন জানান, যশোর জেনারেল হাসপাতালের যারা দালালি করে তাদের তালিকা হাসপাতাল এবং পুলিশের কাছে আছে । এসব দালালরা যশোর পুরাতন কসবা ফাঁসির ইন্সপেক্টর শিহাবুর রহমানকে মাসোহারা দিয়ে দালালি করেন। যারা টাকা দেন না তাদেরকে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা করান। শিহাবুর রহমানের আগে যে পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতেন তাকে দিতে হতো এ মাসোহারা। এছাড়া হাসপাতালে কোতয়ালি মডেল থানার যেসব পুলিশ সদস্য জরুরী বিভাগের পাশে দায়িত্ব পালন করেন তাদেরকেও মাসোহারা দিতে হয় দালালদের। ফলে এক প্রকার অলিখিত চুক্তিতে দালালরা মাসোহারা দিয়ে হাসপাতাল এলাকায় দালালি করে।সেখানে যতই তাদেরকে নির্মুল করার চেষ্টা করা হোক না কেন তা হবে শুধুমাত্র লোক দেখানো।
আর এসব দালালদের পিছনে রয়েছে যশোরে ক্লিনিক ও ডায়গনোষ্টিক মালিকরা। ব্যবসায়িক কারণে তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, হাসপাতালের যোগদানের পর থেকে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি দালাল মুক্ত করতে। অনেকটা সফল হয়েছি। সম্প্রতি দালালদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে অচিরেই।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer