১৯৯৪ সালে আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে, তাদের চাকরিতে পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
১৯৯৪ সালে আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া এসব আনসার সদস্য চাকরি ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আনসার ভিডিপি মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, কামাল উল আলম।
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়, যা পরে বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এ ঘটনায় পর ২ হাজার ৬৯৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে কয়েকজনকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলেও বাকি ২ হাজার ৪৯৬ আনসার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
পরে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক সাতটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ১৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা বিচারে খালাস পান। এ অবস্থায় তারা চাকরি ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু তাদের চাকরিতে ফিরিয়ে নেয়া হয়নি।
এ কারণে ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময়ে ২ হাজার ৩৬৩ জন চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন। হাইকোর্ট তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দিয়েছিলেন।
রায়ের পর আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর সংঘটিত আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় চাকরিচ্যুত আনসার সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে যাদের শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে, তারাই চাকরি ফেরত পাবেন। কিন্তু যাদের সক্ষমতা নেই, তারা যত দিন চাকরিতে ছিলেন, তাদের তত দিনের পেনশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের এ নির্দেশ রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এরপর আনসার-ভিডিপির মহাপরিচালক আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন।