চলতি বছরের শুরুতে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দেড়শ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন বিলিওনিয়ার এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেলসা। ফলে হু হু করেছে বেড়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম।
মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানও তাদের বিভিন্ন সফটওয়ার কেনার ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে মূল্য হিসেবে নিধার্রণ করেছে।
এই ব্যবস্থায় লেনদেনের ক্ষেত্রে থাকে না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা। লেনদেনের তথ্য ব্ল্যাকচেইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সুরক্ষিত ও গোপন থাকায় এ ব্যবস্থা দিন দিন আরও জনপ্রিয় হচ্ছে।
তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষক সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে এটাকে দ্বার করানোর জন্য এটার পেছনে অনেক নীতিনির্ধারকরা কাজ করছেন। সেদিক থেকে যদি আমরা পিছিয়ে পড়ি, তাহলে আমরা সারা পৃথিবী থেকে পিছিয়ে পড়ব। আইন দিয়ে এটা আটকানোর চেয়ে এটা নিয়ে বিশ্লেষণ করা দরকার।
বিশ্বে ক্রমেই বাড়ছে বিটকয়েনের ব্যবহার। তাই বিটকয়েনের প্রয়োজনীয়তা পুরোপুরি অস্বীকার না করে এই মুদ্রার যৌক্তিকতা-অযৌক্তিকতা যাচাইয়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নিয়ে গবেষণা করা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ বলেন, বিটকয়েনসহ সব ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা কী হয়েছে, কী ধরনের সমস্যায় তারা পড়েছে বা কী সুযোগগুলো তারা পাচ্ছে- সেটা দেখা দরকার। কারণ এটা যেহেতু একটি সম্পদ, এটার মূল্য বাড়ছে,
মানুষ এখানে বিনিয়োগ করছে-কাজেই এটাকে অবৈধ রাখা হলে মানুষ অবৈধভাবেই এটা করবে।
তবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে খুব সহজে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং জঙ্গি অথার্য়নের সুযোগ রয়েছে। তাই বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী বিট কয়েনে লেনদেন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বিন্স, জেমস ও বিটকয়েন কেনাবেচার অভিযোগে সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, যেহেতু বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ হয়, বাংলাদেশে এটা বেচাকেনার জন্য কোনো সুযোগ নেই।
২০০৮ সালে সাতোশি নাকামতো ছদ্মনামধারী কেউ বা একদল সফটওয়ার বিশেষজ্ঞ বিটকয়েন নামে নতুন এক ক্রিপ্টোকারেন্সির উদ্ভাবন করেন। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী বিশ্বের অনেক দেশই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে নিয়ন্ত্রণ রেখে চীন চালু করেছে নিজস্ব ভার্চুয়াল বা ডিজিটাল মুদ্রা।