ঢাকা : ইরানে শনিবার এক সামরিক কুচকাওয়াজে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে যে গোষ্ঠীটি, তারা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট উপসাগরীয় দেশগুলির সহযোগিতা পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
রুহানি এসব দেশের নাম উল্লেখ করেন নি। তবে তিনি বলেছেন, আইনগতভাবেই এরকম যে কোন হামলার জবাব দেবে তার দেশ।
শনিবার ইরানে ঐ হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে ১২ জন সৈন্য এবং বাকিরা কুচকাওয়াজ দেখতে আসা সাধারণ নাগরিক। নিহত বেসামরিক লোকজনদের মধ্যে চার বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে।
এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের এক সাধারণ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে হাসান রুহানির দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুটো গোষ্ঠীর দাবি
ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে গতকালের ঐ সন্ত্রাসী হামলার পরই দুটি গোষ্ঠী এই হামলার কৃতিত্ব দাবি করেছিল।
এর একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস বা ইসলামিক স্টেট। অন্যটি খুজেস্তান-ভিত্তিক একটি স্থানীয় আরব মিলিশিয়া গোষ্ঠী, যারা দাবি করে ইরানে আরবদের অধিকারের পক্ষে তারা লড়াই করছে।
তবে কোন গোষ্ঠীর তরফ থেকেই তাদের দাবির পক্ষে কোন তথ্য প্রমাণ হাজির করা হয়নি।
অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের একজন উপদেষ্টা টুইট করেছিলেন, ইরানের এই সামরিক কুচকাওয়াজ একটি সামরিক টার্গেট, কাজেই এর উপর হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে চালানো যাবে না।
ইরানের হুঁশিয়ারি
স্বাভাবিকভাবেই ইরানে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি রবিবার বলেছেন, কারা এই হামলার পেছনে আছে, এদের সঙ্গে কাদের সম্পর্ক, তা তাদের কাছে পরিষ্কার।তিনি অভিযোগ করেছেন, উপসাগরীয় এসব রাষ্ট্র আর্থিকভাবে, অস্ত্র দিয়ে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এই হামলাকারীদের সমর্থন করেছে।
তার ভাষায়, এসব ক্ষুদ্র পুতুল রাষ্ট্র আমেরিকার মদত পাচ্ছে, আমেরিকা তাদের উস্কানি দিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট রুহানি এসব `পুতুল রাষ্ট্রের` নাম উল্লেখ করেন নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা যে তিনি ইরানের আঞ্চলিক শত্রু সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন।
কেন সৌদি ইরান বিরোধ
এর আগেও তেহরান সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ তুলে বলেছে যে দেশটি ইরানের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতায় সমর্থন দিচ্ছে।
ওই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার ও বড় ধরনের শক্তি হয়ে ওঠার লক্ষ্যে দুটো দেশের মধ্যেই গত কয়েক দশক ধরে প্রতিযোগিতা চলছে।বলা যায় সিরিয়া ও ইয়েমেনকে কেন্দ্র করে এই দুটো দেশ কার্যত একধরনের ছায়া-যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে এই দুটো দেশের মধ্যে উত্তেজনা সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সম্প্রতি ইরানের নতুন করে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিলে এই উত্তেজনা আরো বেড়েছে।এর পরপরই ওয়াশিংটন ইরানের ওপর নতুন করে আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
বিবিসি বাংলা