ঢাকা :সূর্যের কড়া চাহনি এড়ানোর পথ নেই।বিশেষ করে যাদের রোজ রাস্তায় বেরোতে হয়, তারা জানেন চোখ ঝলসানো রোদ্দুর ছেড়ে কথা বলবে না। তবে ক্ষতির খতিয়ান অনেকেরই অজানা।
সূর্যের আলো যে রেটিনাটাই নষ্ট করে দিতে পারে, এ কথা অনেকে ভাবতেও পারেন না। দাবদাহের সময় চলছে। এই সময়ে চিকিৎসকরা বলছেন, সাধু সাবধান। তাদের পরিষ্কার কথা, জ্যোতিই কেড়ে নিতে পারে অতি বেগুনি রশ্মি।
একটু বুঝিয়ে বলা যাক। গরমের তিন মাস সূর্য থাকে মাথার ওপর। শীতের তেড়চা আলোর সঙ্গে এই আলোর তীব্রতার পার্থক্য রয়েছে। তাপের তারতম্যই শুধু নয়, এই কড়া রোদ সরাসরি চোখে পড়া মানে অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণে মুখোখি হওয়া বারবার।
গরমকালে অতি বেগুনি রশ্মির বিরিকণ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।
ভারতীয় চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, “সব থেকে ভয় ছোটদের। শিশুদের চোখ ইউভি রশ্মি ছাঁকতে পারে না বলে তাদের রেটিনায় বেশি বিকিরণ পৌঁছয়। এই রশ্মির চোখে দীর্ঘকালীন প্রভাব আরও মারাত্মক। ক্যাটারাক্ট বাড়িয়ে রেটিনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।”
এর থেকে বড়দেরও কিন্তু নিস্তার নেই। অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণ তিন ধরনের— ইউভি-এ, ইউভি-বি এবং ইউভি-সি। এর মধ্যে ইউভি-এ ও ইউভি-বি চোখের উপরিতলের কোষ-সহ কর্নিয়া ও লেন্সের দফারফা করতে পারে। অল্প সময়ে বেশি মাত্রায় ইউভি রশ্মি চোখে পড়লে কর্নিয়া ফুলে গিয়ে ‘ফটোকেরাটাইটিস’ হতে পারে। একেই চোখের সানবার্ন বলে।
ফটোকেরাটাইটিস-এর লক্ষণ
• চোখ লাল হয়ে যাওয়া
• চোখ ভারী লাগা
• অনবরত চুলকনো
• চোখে বালির মতো কিছু অনুভূতি হওয়া
• আচমকাই চোখ থেকে জল পড়া এর লক্ষণ।
আগামী মাস চারেক এই অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে বাঁচবেন কী ভাবে? রইল চিকিৎসকের পরামর্শ:
• সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা এই সময়টায় এই অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণ সবচেয়ে বেশি হয়। এই সময়টায় রোদ এড়িয়ে যেতে পারলে ভাল।
• না এড়াতে পারলে চোখে বড় আকারের সানগ্লাস দিন।
• দিনে তিন-চার বার চোখে জলের ঝাপটা দিন।
• স্কুল যাওয়া ও ফেরার পথে শিশুও যেন সরাসরি রোদের মুখে না পড়ে, সেই বিষয়ে সতর্ক হন।
-আনন্দবাজার পত্রিকা