ঢাকা : সিলেটে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। ধারণক্ষমতা অনুযায়ী প্রথমবারে ৯৪টি ও এরপর থেকে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কাছে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার জন্য প্রচুর নমুনা এসেছে। প্রথমে তিনটি লেভেলের প্রসেস শেষে পিসিআর মেশিনে দেয়ার পর ১৪৫ মিনিট সময় লাগবে এই টেস্ট করতে। সবমিলিয়ে চার ঘণ্টা লাগবে এই টেস্ট সম্পন্ন করতে। একই সাথে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। বিকালের মধ্যে আশা করি আরও অনেক স্যাম্পল আসবে।
তবে সিলেটে শনাক্তকরণ পরীক্ষা হলেও প্রথমদিকে পরীক্ষার ফলাফল সিলেট থেকে দেয়া হবে না। পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হবে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। তারা প্রাত্যহিক ব্রিফিংয়ে এই রিপোর্টগুলো প্রকাশ করবেন।
সিভিল সার্জন জানান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটে করোনাভাইরাসে শনাক্তের ল্যাবের জন্য ২০ জোড়া জুতা প্রদান করেছেন, যা আমাদের ল্যাবের জন্য খুবই দরকারি ছিল। তিনি এজন্য নগর পিতাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, উনার প্রচেষ্টায় আমরা সিলেটেও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে এখন ১ হাজারের উপর কিট মজুদ আছে। তবে আমাদের এন-৯৫ মাস্কের কিছুটা সঙ্কট রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করবেন টেকনোলজিস্টরা।
প্রবাসীবহুল সিলেট অঞ্চল করোনা সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হলেও এখানে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার সুযোগ ছিলো না। এতে ক্ষোভ ছিলো এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে। এ অবস্থায় গত ১ এপ্রিল সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআরসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনা হয়। মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি ল্যাবকে পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
এদিকে, গত ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। পেশায় চিকিৎসক ওই ব্যক্তি ওসমানী হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন। এছাড়া বিভাগের মৌলভীবাজারের রাজনগরে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
পরীক্ষার জন্য ল্যাবে মেডিকেল কলেজের ৪ জন অধ্যাপক ও ১০ জন টেকনিশিয়ান প্রতিদিন কাজ করবেন। এই পরীক্ষা করাতে কোনো ফি নেয়া হবে না।
তবে এই পরীক্ষা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। চিকিৎসকরা যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন মনে করবেন এবং সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে যে নমুনাগুলো আসবে সেগুলো এখানে পরীক্ষা করা হবে।