চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চলমান ধর্ম ঘটের প্রেক্ষিতে ইউনিয়নের নেতাদের সাথে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দীর্ঘ বৈঠকে কোনো সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। দৈনিক ৩০০টাকা মজুরীর দাবি না মানায় শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভাকক্ষে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত আমাদের সাথে আলোচনা হয়। শ্রম অধিদপ্তরের মহা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসির সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, আমাদের ৩০০ টাকার মজুরীর দাবি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি না কর্মকর্তারা। শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বিষয়ে আগামী ২৩ আগস্ট আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করার প্রস্তাব দেন। পরে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। এই প্রস্তাব কেউ মানতে রাজি না। আমাদের আলোচনা এবং আন্দোলন দুটোই চলবে।
এর আগে চা শ্রমিক নেতাদের নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসিসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের প্রথম পর্ব চলে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। তবে এসময়ে শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সমাধানে পৌছতে পারেননি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, শ্রম অধিদপ্তরের ডিজি খালেদ মামুন চৌধুরী এন ডি সি ও বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) নাহিদুল ইসলামসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা রামভজন কৈরি, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নৃপেন পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরাসহ বিভিন্ন ভ্যালির ৩০ জন চা শ্রমিক নেতা সভায় অংশ নেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরী ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা জানান আমরা ৩০ জনের একটি প্রতিনিধি দল সভায় অংশ নেই । দুপুর ২ টা পর্যন্ত উনারা আমাদের কথা শুনেছেন। তবে আমাদের ৩০০ টাকা মজুরীর বিষয়টি আলোচনা করতে রাজি হননি মহাপরিচালক।
উল্লেখ্য, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে দেশের ৭৩ ফাঁড়ি বাগানসহ ২৬৭টি চা বাগানে লাগাতার আন্দোলন করছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। কর্মসূচি চলাকালে আজও বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ পথসভাসহ সহ নানা কর্মসূচি পালন করছে চা শ্রমিকরা।
এর আগে গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন ২ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করে চা শ্রমিকদের সংগ্রাম বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। তাদের ৩০০ টাকা মজুরীর দাবি না মানায় ১৪ আগস্ট শনিবার পূর্ণদিবস ধর্মঘট পালন করেছে তারা।
বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আগামী ২৩ আগষ্ট চা বাগান মালিক–শ্রমিকদের সাথে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর ত্রি-পাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠকে শ্রমিকদের দাবীর পক্ষে তিনি কথা বলবেন। তিনি শোকের মাস, চা শিল্প ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে আগামী ২৩ তারিখ পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহারেরঅনুরোধ জানান।
এদিকে চা শ্রমিক ইউনিয়নের অপর একটি অংশ দুপুরে চা শ্রমিক ইউনিয়নের এডহক কমিটির ব্যানারে নগদ এবং সুযোগ-সুবিধা সহ দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরীর দাবীতে শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমোহনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
বহুমাত্রিক.কম