Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাভারে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপেও নিয়ম মানছে না জনগণ

তুহিন আহামেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ৮ মে ২০২০

প্রিন্ট:

সাভারে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপেও নিয়ম মানছে না জনগণ

ছবি- বহুমাত্রিক.কম

নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সারাবিশ্বে এক মহামারির নাম। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন দেশে-বিদেশে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। সেই সাথে আক্রান্তও হচ্ছেন। সারাবিশ্বের মত এই ভাইরাসে বাংলাদেশেও প্রতিদিন আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছে মানুষ। এরপরেও টনক নড়ছে না সাধারণ মানুষের।

প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকা সত্বেও নিয়ম না মেনে জনসমাগম করছে, এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যাচ্ছে এবং কোনো না কোনো অজুহাত দেখিয়ে তারা বাইরে বের হচ্ছেই। আর এই আমজনতার মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে নিময় অনুযায়ী চলাফেরা করাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

সারাদেশের মত সাভারেও সব ধরণের গণ জমায়েত ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু মানুষজন এসব না মেনে বিনা প্রয়োজনে যত্রতত্র চলাফেরা করছে। আর এতে ঝুঁকি বাড়ছে করোনা বিস্তারে।

তারপরেও অনেকে সতর্কতা না মেনে চলে একসঙ্গে জড়ো হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নিয়ম মানাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন।

সাভার ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বাড়ইপাড়া। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা রোগী বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই সীমান্তবর্তী এলাকায় মানুষ উভয় উপজেলাতে দেদারছে চলাফেরা করছে। এতে উভয় এলাকার মানুষের মাঝেই করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে।

অন্যদিকে আবার ধামরাই উপজেলার মানুষ আশুলিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা আমতলা ও পাড়াগ্রাম হয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢুকছে। এতে করেও করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে।

এদিকে, সাভার উপজেলাকে করোনা মুক্ত রাখতে গত ১৩ এপ্রিল সাভারে সীমান্ত এলাকাগুলোর সড়কপথ পরিপূর্ণভাবে লকডাউন করার ঘোষণা দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।

কিন্তু এরপরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। মানুষজন নানা অযুহাত দেখিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছে। এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় চলাফেরা করছে দেদারচ্ছে। প্রশাসন যেন কিছুতেই তাদের রুখতে পারছে না। একপ্রকার হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

রাজধানীর মিরপুর এলাকাটি বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই এলাকাটি সাভারের বিরুলিয়ার খুব কাছেই। মিরপুর-বিরুলিয়া সংযোগ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ এই দুই এলাকায় যাতায়াত করছে। তাই সব সীমান্ত সড়কের মতো এই স্থানটিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষণার পরেও সাধারণ মানুষ পুলিশের কাছে নানা অযুহাতে মিরপুর থেকে সাভারে আসছে আবার সাভার থেকে মিরপুর যাচ্ছে। এই বিরুলিয়া সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছেন বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) অপূর্ব দত্ত।

তিনি বলেন, লকডাউনের নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই এই সড়কটিতে চেকপোস্ট বসিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা তাদের চেকপোস্টের কার্যক্রম চলে। একমাত্র জরুরি সেবার পরিবহন ছাড়া আর কোনো পরিবহন বা মানুষকে যাতায়াত করতে দেওয়া হয় না। কিন্ত কিছু মানুষ আছে যারা অসচেতনভাবে বাসা থেকে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করে। তাদের প্রশ্ন করা হলে কোনো না কোনো মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তাদের কাছ থেকে বেঁচে যায়।

অপুর্ব দত্ত বলেন, আমরা আমাদের পরিবারের কথা চিন্তা না করে দেশের মানুষের জন্য নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা থেকে বাঁচতে বর্তমানে সবার জন্য সামাজিক দূরত্ব থাকাটা বেশি জরুরি। কিন্তু আমার দ্বায়িত্ব পালনকালে দেখেছি অনেকই যেনো আমাদের সঙ্গে মজা করে। বিভিন্ন সময় গুজব ছাড়ায় এবং যেখানে সেখানে মানুষ জনসমাগম করছে। আমরা এখন কোনো জায়গায় অপারেশন গেলে মানুষ আমাদের দেখতে চলে আসে তারা একবারও ভাবে না তাদের জীবনোর ঝুঁকি রয়েছে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।

এদিকে, প্রশাসনের সঙ্গে মনে হয় লুকোচুরিই খেলছেন মানুষ। পুলিশ একদিকে টহল দিলে মানুষ অন্যদিকে জনসমাগম করে৷ আবার পুলিশ দেখলে সামাজিক দূরত্বের গুরুত্ব আছে পুলিশ না থাকলে এর কোনো বালাই নেই৷ এমন এক অভিজ্ঞতা কথা বলেন সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ।

তিনি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঢাকায় প্রবেশের একটি উল্লেখযোগ্য পথ। এই প্রবেশ পথে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন স্থানে টহলের ব্যবস্থা করছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে চেকপোস্টের আগে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছে আবার চেকপোস্টের পরে আবার গাড়িতে উঠছে। আসলে মানুষের মধ্যে যদি নিজ থেকে সচেতনতা না আসে তাহলে যত আইন করা হক না কেন, এটার বিপরীতে মানুষ নিজস্ব একটি পদ্ধতি বের করে নিয়ে আইন লঙ্ঘনের চেষ্টা করে৷

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer