বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান (৫৩) মারা গেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমান খান গত ২৭ নভেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। প্রথমে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে তার চিকিৎসা চলছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পাঁচ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১০ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনা জোনে রেখে তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এরপর ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে তাকে সবুজ জোনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতদিন তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তার ফুসফুসের ৯৬ শতাংশ সংক্রমিত। তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি তার অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস) দেওয়া হয়। তার রক্তচাপও কমে যায়। এর মধ্যেই সন্ধ্যা সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক করে। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশালের বিএম কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। মিজানুর রহমান খান তিন দশক ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংবিধান ও আইন নিয়ে লেখালেখি করতেন। তার উল্লেখযোগ্য বই সংবিধান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক, ১৯৭১: আমেরিকার গোপন দলিল।
মিজানুর রহমান খান মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।