গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর দেয়া আগুনে দ্বগ্ধ হয়ে শিউলী আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধরূ প্রাণ প্রদীপ চিরতরে নিভে গেল। গত সোমবার রাতে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের মাজমআলী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ শিউলী আক্তার ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার ডাকাতোয়া গ্রামের শুক্কুর আলীর কন্যা।
নিহত শিউলি আক্তার (৩২) ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের শুক্কুর আলীর মেয়ে এবং বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মো. সহিদ হাওলাদার (৩৯)-এর স্ত্রী। তারা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মাফিয়া আক্তারের বাড়িতে ভাড়াটে। শিউলি স্বামীর সাথে ওই ভাড়াবাসায় থেকে স্থানীয় ডেনিমেক কারখানার শ্রমিক হিসেবে চাকুরী করতেন।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক জানান, ৯ বছর আগে প্রেম করে তাদের বিয়ে হয়। এটি ছিল সহিদ ও শিউলী উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে। বেশ কিছুদিন ধরে তারা মুলাইদ এলাকার মাফিয়া আক্তারের ঘর ভাড়া নেন। পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। স্বামী তাকে মারধরও করত। সোমবার রাতেও কারখানা থেকে পাওয়া বেতন স্বামী কেড়ে নিতে চাইলে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মধ্যরাতে নিজ কক্ষে যখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্ত্রী শিউলি আক্তার তখন পেট্রোল ঢেলে শিউলির শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় স্বামী। এ সময় স্বামী পালাতে গেলে শিউলী তাকে ঝপটে ধরে মেঝেতে পড়ে যায় এবং স্বামীর শরীরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্বামীর দুই হাত দ্বগ্ধ হয়।
বাড়ির মালিক মাফিয়া আক্তার জানান, সোমবার মধ্যরাতে আমরা শিউলির ঘর থেকে কান্নার শব্দ শুনে গিয়ে দেখি তাদের রুমের দরজা ভেতর থেকে আটকানো। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মুমূর্ষু অবস্থায় শিউলি ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আগুনে স্ত্রীর শরীরের ৯৫ ভাগ দ্বগ্ধ হয়।
স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাদেরকে শ্রীপুর উপজেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার শিউলীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার সময় শিউলী আক্তার মারা যান। নিহত শিউলীর স্বামীও সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশের নজরদারীতে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী সাহিদ স্ত্রীর শরীরে আগুন দেয়ার কথা স্বীকার করেন। শ্রীপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, নিহতের স্বামী পুলিশ হেফাজতে আছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বহুমাত্রিক.কম