ঢাকা : চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরও অপসারণ চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বহিষ্কারই যথেষ্ট নয়, একই অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেও অপসারণ করা উচিত।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে। সিনিয়র সহসভাপতি আল নাহিয়ান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমার কাছে একটি নতুন খবর আছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘুষ চাওয়ার অপরাধে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে পদচ্যুত করা হয়েছে, এটাকে আবার নতুন নাম দিয়েছে তারা। কি দিয়েছে বলুন তো? ফেয়ার শেয়ার। ৫%-১০% ঘুষ যে নেবে, এটা হলো ফেয়ার শেয়ার। এই ফেয়ার শেয়ারের মধ্যে আবার এখন ভাইস চ্যান্সেলরের নাম চলে এসেছে। উনি নাকি ইতোমধ্যে এক কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছেন। দ্রুত তার পদত্যাগ করা উচিত। না হয় তাকে অব্যাহতি দেয়া দরকার।
সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি চলছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বের করে দিয়ে তারা স্বীকার করেছেন যে দুর্নীতি চলছে। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, হাজার চেষ্টা করেও থলের বিড়াল ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। কালো বিড়ালের মতো বের হয়ে আসছে এবং এগুলো এখন জনগণের কাছে পুরোপুরি চলে গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছাত্র ভর্তি করছেন রাতের বেলায়। কোথায় আছে দুর্নীতিমুক্ত জায়গা? প্রতিটি জায়গায় পরীক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, বিচারালয় কোথাও যাওয়া যায় না।
ফখরুল বলেন, কালকে আমাদের পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি কমিশনার) ভালো ভালো কথা বলেছেন। তার একটা কথা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। যদি কেউ কোনো কাজ না করে এবং সেবার বিনিময়ে যদি কোনো অর্থ দাবি করে, তা হলে আমাদের জানাবেন, আমরাই গিয়ে সেখানে বসব।
ফখরুল বলেন, যারা মিথ্যা বলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, জোর করে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে থাকে, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। এটি অবৈধ সরকার, অবৈধ পার্লামেন্ট।
খালেদা জিয়া জুলুমের শিকার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হত্যার জন্যই খালেদা জিয়াকে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। যে মামলায় তাকে আটক করে রাখা হয়েছে, সাজা দেয়া হয়েছে, এ রকম মামলায়ই আওয়ামী লীগের বহু নেতা জামিন নিয়ে বাইরে আছেন। অথচ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া যদি বের হয়ে আসেন, তা হলে জনগণকে সংগঠিত করে এই অপশাসন, অন্যায়-অত্যাচার, গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন, তা মোকাবেলা করার মতো ক্ষমতা তাদের নেই বলেই তাকে জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।