Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

কারাবাও কাপ

শেষ ষোলোর ম্যাচে ট্রাই ব্রেকারে টোটেনহ্যামের জয়

ভূঁইয়া ওয়াসেক ফয়সাল, স্পোর্টস এডিটর

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

আপডেট: ১৩:২২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

প্রিন্ট:

শেষ ষোলোর ম্যাচে ট্রাই ব্রেকারে টোটেনহ্যামের জয়

-বিজয়ের মুহূর্তে টোটেনহ্যাম হটস্পার্স

গতকাল রাতেই হয়ে গেলো কারাবাও কাপের রাউন্ড অফ সিক্সটিনের চেলসি বনাম টোটেনহ্যামের ম্যাচ যা কিনা লন্ডন ডার্বি বলে পরিচিত। ফ্রাঙ্ক ল্যামপার্ড ও তার সাবেক ম্যানেজার জোসে মৌরিনহোর মধ্যেকার মুখোমুখি এই নিয়ে চারবার । প্রথম তিনবার ল্যামপার্ড জয়ী হলেও এবার আর শেষ রক্ষা হল না।

প্রথমার্ধে চেলসি টোটেনহেমকে বেশ চাপে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে টোটেনহ্যাম বেশ ভালোভাবেই জবাব দেয়। চেলসি শুরু করে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে যেখানে গত ম্যাচে খেলা ট্যামি আব্রাহামের জায়গায় জিরুর্ড স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে নামেন। চেলসির হয়ে প্রথমবারের মত প্রথম একাদশ থেকে শুরু করেন ২২মিলিয়ন ইউরোতে দলে ভেরানো মেন্ডি এবং লেইস্টারসিটি থেকে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোতে কেনা ইংলিশ লেফট ব্যাক বেন চিলওয়েল । সেন্টার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কান্তেও নামেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ২৫ মিনিটের মাথায়।

চেলসি একাদশ

অপরদিকে স্পার্স মাঠে নামে ৩-৫-২ ফরমেশনে। এই মৌসুমে প্রথমবারের মত মাঠে নামেন ডিফেন্ডার তানগানগা। স্পার্সের আগামী বৃহস্পতি ইউরোপা লীগের কোয়ালিফায়িং রাউন্ডের ম্যাচ রয়েছে যার ফলে জোসে দলের প্রধান স্ট্রাইকার হ্যারি ক্যান এবং উইঙ্গার লুকাস মৌরা কে মাঠে নামাননি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শেষ ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষে ইনজুরির জন্য মাঠ ছাড়তে হয় প্রিমিয়ার লীগে খেলা একমাত্র কোরিয়ান সনকে। যিনি কিনা আগামী আন্তর্জাতিক বিরতি শেষ হওয়ার আগে ফিরবেন না।

স্পার্স একাদশ

খেলার শুরু থেকেই চেলসি বেশ প্রেস করে খেলে এবং টোটেনহ্যাম তাদের নিজের সাইডেই বসে থেকে রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করে। যেহেতু দুইদিন পরেই তাদের আরেকটি ম্যাচ এবং আগামী রবিবার তাদের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ সেহেতু জোসে চাইনি নতুন করে কেউ ইনজুরির স্বীকার হোক। প্রথমার্ধের ১৯ মিনিটের মাথায় চেলসি ক্যাপ্টেন সিজার আজপেলিকুয়েটার লেফট সাইড থেকে দেওয়া পাসে গোল করেন এ মৌসুমে আসা স্ট্রাইকার টিমো ওয়ারনার যেটা কিনা চেলসির হয়ে তার প্রথম গোল। টোটেনহ্যাম ও দ্বিতীয়ার্ধে দুইবার গোল করার সুযোগ পেয়েছিলো কিন্তু গোলকিপার মেন্ডি এবং সেন্টারব্যাক কার্ট জোউমা ডিফেন্সে গভীর মনযোগ এবং পারদর্শিতায় প্রতিহত হয়।

টিমো ওয়ার্নারের প্রথম গোল

স্পার্সের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা হয় একদম প্রথমার্ধের বিপরীত। প্রথম থেকেই তারা চেলসির উপর অনেক প্রেস করে খেলা শুরু করে যার ফলশ্রুতিতে চেলসির ডিফেন্সের কাঠামো কিছুটা নড়বড়ে হয়ে উঠে। এত প্রেসিং এর মাঝে চেলসির মেসন মাউন্ট এবং কলাম হাডসন ওডয় দুইটি গোলের সুযোগ মিস করেন। মেসন মাউন্ট টিমো ওয়ারনারকে অথবা হাডসন ওডয় ট্যামি আব্রাহামকে সহজ পাস দুটো দিলেই খেলার ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। বারবার আক্রমণ করেও যখন স্পার্স গোলের দেখা পাচ্ছিলো না ঠিক তখনই ৭০ মিনিটের মাথায় জোসে প্রথমবারের মত একাদশে স্ট্রাইকার হিসেবে হ্যারি ক্যানকে মাঠে আনেন এবং উইঙ্গার হিসেবে লুকাস মৌরা কে নিয়ে আসেন। স্পার্স আরো আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে তারই ফলশ্রুতিতে ৬০ মিনিটে বেন চিলওয়েলের পরিবর্তে খেলতে নামা লেফটব্যাক এমারসনের ভুলে ৮৩ মিনিটে এরিক লামেলা গোল করে বসে।

এরিক লামেলার গোল উদযাপন

এমারসনের পাশে থাকা লামেলাকে মার্ক না করে তিনি ডি বক্সের ভিতরে ঠায় দাড়িয়ে থাকেন, গোলকিপার মেন্ডির কিছুই করার ছিলো না এবং খেলার ফলাফল দাড়ায় ১-১। পরবর্তী ৭ মিনিটে আর কোনো গোল হয়নি ফলে নির্ধারিত সময়ের শেষে খেলা গড়ায় ট্রাই-ব্রেকারে। স্পারসের প্রথম পাঁচটি পেনাল্টিই জালে গড়ায় কিন্তু ঝামেলা বাধে চেলসির মেসন মাউন্ট পঞ্চম পেনাল্টিটি মিস করায়। যার ফলে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পারডের চেলসিকে।

এখানে ল্যামপার্ডের আমার মতে দুইটি ভুল ছিলো যার মধ্যে একটি হল বেন চিলওয়েলকে পরিবর্তন করা । কারন এই মাত্রার গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে ডিফেন্ডার পরিবর্তন করে নামানোটা কিছুটা বিলাসিতাই বৈকি । অপরদিকে চেলসির হয়ে এখন পর্যন্ত মেসন মাউন্ট পাঁচটির মধ্যে পাঁচটি ম্যাচই খেলেছে। গতকালের ম্যাচে ফ্রাঙ্ক চাইলেই মাউন্টের বদলে রস বার্কলিকে নামাতে পারতেন কারন খেলার প্রথম থেকেই মেসন মাউন্টকে খুবই ক্লান্ত দেখাচ্ছিলো এবং আক্রমণে আগের ম্যাচগুলোর মত তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। আগের ম্যাচগুলোয় মাউন্ট উইঙ্গার হিসেবে খেলেছে কারন চেলসির রাইট উইঙ্গে খেলার মত ফিট কেউ ছিলো না অথচ হাডসন ওডয় গতকাল রাইট উইং এ নামায় মেসন মাউন্ট সেন্টার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডে খেলেছে যেখানে খুব সহজেই রস বার্কলিকে খেলানো যেতো।

ল্যামপার্ডের প্রথমত উচিত একটি নির্দিষ্ট ফর্মেশন নিয়ে কাজ করা যাতে তার খেলোয়াররা কোনো নির্দিষ্ট ফর্মেশনে অভ্যস্ত হয়। এখন পর্যন্ত ল্যামপার্ড ৩-৪-৩, ৪-৩-৩, ৪-২-৩-১, ৪-২-২-২ ফর্মেশনে খেলেছেন। দলের অধিকাংশ খেলোয়ার নতুন তারসাথে এবার প্রি-সিজন ফ্রেন্ডলি ম্যাচগুলো না হওয়ায় নতুন দল এবং নতুন দলের ফরমেশন কি হবে তাই নিয়ে ল্যাম্পার্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চলেছেন। সেই সাথে সবাই মুখিয়ে আছে এই নতুন দলকে নিয়ে একজন নতুন ম্যানেজার হিসেবে ফ্রাঙ্ক জেমস ল্যাম্পার্ড চেলসিকে কোথায় নিয়ে যায়। 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer