ঢাকা : শীত মৌসুমে ট্রেন দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ইঞ্জিন চালক, ট্রেনের গার্ড এবং স্টেশন মাস্টারদের জন্য ১১টি নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এ সময়ে ঘন কুয়াশার কারণে সিগন্যাল অস্পষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রেল লাইন এবং ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতি পিচ্ছিল হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকে যায়। যে কারণে ইঞ্জিনের উইন্ডশিট, সিগন্যাল বাতির গ্লাস পরিষ্কার এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী রেললাইনের গাছও ছেটে ফেলতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শীতের সাথে সাথে যেন জেঁকে বসছে রেল দুর্ঘটনার শঙ্কা। বিশেষ করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে চলাচলকারী ২০৭টি যাত্রীবাহী ট্রেনের বেশির ভাগই চলাচল করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাতের মধ্যে। আর এ সময় শীত মৌসুমের কুয়াশায় ঢেকে পড়ে চারদিক। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার মাত্রা এতোটাই গভীর থাকে এক হাত দূরত্বের দৃশ্য নজরে আসা কঠিন। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয় যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোকে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ের গার্ড সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা আর কালার লাইটের কারণে সিগন্যালটা ডাউন না আপ সেটা বুঝতে সমস্যা হয়। কুয়াশাই বড় সমস্যা।
এ অবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ফগ সিগন্যাল ব্যবহার এবং ট্রেন যাওয়ার আগে প্রসিড সিগন্যাল দেখাতে স্টেশন মাস্টারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা যারা রানিং স্টাপ যারা অপারেশনের সঙ্গে সক্রিয় বা সংশ্লিষ্ট তাদের আরও বেশি সতর্ক করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, প্রতিটি স্টেশনে মাস্টার ও গার্ডদের এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কোথায় কোনো সমস্যা আছে কিনা। তাছাড়াও কন্ট্রোল অফিসে কোথায় ট্রেন ক্রসিং হবে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এ সময়ে কোন কোন এলাকায় রাতে ও ভোরে কুয়াশা আছে এসব তথ্যগুলো নেয়া হচ্ছে।
এদিকে রেল পরিচালন দপ্তর থেকে জারি করা ১১ দফা নির্দেশনায় ট্রেন চলাচলের আগেই ইঞ্জিনের গিয়ার ফিটিংস কার্যকর রয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে বলে জানান উপ প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জাকির হোসেন।
সবশেষ গত ১২ নভেম্বর মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দভাগে দু’টি ট্রেনের সংঘর্ষে ১৬ জন মারা যান। এ দুর্ঘটনায় ৫০ জনের মতো আহত হন।