Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে এশিয়া অস্থিতিশীল হবে : রাষ্ট্রপতি

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৩৩, ১৫ জুন ২০১৯

প্রিন্ট:

রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে এশিয়া অস্থিতিশীল হবে : রাষ্ট্রপতি

ঢাকা : রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে তা পুরো এশিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শনিবার কনফারেন্স অন ইন্টারেকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়ার (সিআইসিএ) পঞ্চম সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।

তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে নাভরুজ প্যালেসে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এখন শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এটা যদি সমাধান না করা হয়, তাহলে পুরো এশিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারে যে গণহত্যা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, তা জাতিগত নির্মূলের একটি ‘টেক্সট বুক এক্সাম্পল’ এবং ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তার আগে গত কয়েক দশকে এসেছে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি করার পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে যায়।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নির্ভয়ে বসবাসের পরিবেশ তৈরি না করার মধ্য দিয়ে প্রত্যাবসনে মিয়ানমারের অনাগ্রহ প্রকাশিত হয়েছে।

সিআইসিএর সম্মেলনে আবদুল হামিদ বলেন, রোহিঙ্গারা জোরপূর্বক তাদের পূর্বপুরুষের ভিটা থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মানবিক কারণে বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা তাদের জনগণকে আশ্রয় দিয়েছে এবং খাদ্য, চিকিৎসাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ এ সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।

রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে পারে সেজন্য সিআইসিএসহ সংশ্লিষ্টদের সমর্থন ও সহযোগিতা চান রাষ্ট্রপতি।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রসারে কাজ করে সিআইসিএ। কাজাখস্তানের রাজধানী নূর সুলতানে এই সংস্থার সদর দফতর অবস্থিত।

২৭টি দেশ এই সংস্থার সদস্য। দেশগুলো হল- আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, চীন, মিশর, ভারত, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনাম।

এছাড়া বেলারুশ, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, ইউক্রেইন ও যুক্তরাষ্ট্র এর পর্যবেক্ষক হিসেবে রয়েছে।

জাতিসংঘ ছাড়াও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম, লিগ অব আরব স্টেটস, অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ, পার্লামেন্টারি অ্যাসেম্বলি অব দ্য টার্কিক স্পিকিং কান্ট্রিজ এর সিআইসির পর্যবেক্ষক।

এশিয়াভিত্তিক এই সংস্থার বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে আছে তাজিকিস্তান।

১৯৯২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম প্রস্তাব করেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নূর সুলতান নাজারবায়েভ। এর প্রথম সম্মেলন হয় ২০০২ সালে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ এই ফোরামের সদস্য হয়।

 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer