করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা অপরিহার্য। আর এই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। বন্ধ হয়ে গেছে দোকানপাট, রেস্তোরাঁ থেকে কারখানা।
সুইডেনে এখন পর্যন্ত সেভাবে লকডাউন শুরু হয়নি ঠিকই, কিন্তু সেখানেও জোর দেয়া হয়েছে শারীরিক দূরত্বের ওপর। তাই রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও সেখানে খুব কম সংখ্যক ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি টেবিলের মধ্যে দূরত্বও বজায় রাখা হচ্ছে নিয়ম মেনে।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেও ক্রেতাদের সামনে কীভাবে সুস্বাদু খাবার হাজির করানো যায়, তার এক অভিনব উপায় বের করেছেন সুইডেনের এক দম্পতি। ওই দম্পতির নাম রাসমুস পারসন এবং লিন্ডা কার্লসন। খুব তাড়াতাড়ি এই অভিনব উপায় নিয়ে নতুন রেস্তোরাঁ খুলতে চলেছেন তারা। যার নাম রাখা হয়েছে ‘টেবিল ফর ওয়ান’।
আগামী ১০ মে থেকে চালু হবে এই রেস্তোরাঁ, চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। কেন অভিনব বলা হচ্ছে একে? নাম থেকেই কিছুটা পরিষ্কার বিষয়টা। টেবিল ফর ওয়ান অর্থাৎ এখানে একটিই মাত্র টেবিল থাকবে এবং মাত্র একজন ক্রেতাই আসতে পারবেন এই রেস্তোরাঁয়।
কী রকম সেই রেস্তোরাঁ? মাঠের মধ্যে থাকবে একটি টেবিল-চেয়ার। তার কাছেই থাকবে রান্নাঘর। তবে খাবার পরিবেশনকারী বা অর্ডার নেয়ার জন্য আলাদা করে কেউ থাকবেন না। ক্রেতা সরাসরি রান্নাঘরে থাকা রাঁধুনীর সঙ্গে কথা বলে খাবারের অর্ডার দেবেন। তারপর সেই খাবার সরাসরি রান্নাঘর থেকে দড়িতে ঝোলানো একটি বাক্সের মধ্যে পৌঁছে যাবে ক্রেতার কাছে। একেবারে ঘরোয়া উপায়ে বানানো হবে সব খাবার।
সারাদিনে ওই একজন ক্রেতাকেই খাবার পরিবেশন করবে রেস্তোরাঁটি। হাইজিন বজায় রাখতে দিনে দু’বার টেবিল-চেয়ার এবং খাবার প্লেটের জীবাণু পরিষ্কার করা হবে।
কার্লসন জানাচ্ছেন, এই মহামারির কারণে অনেকেই কাজ হারাবেন, অনেকেই তাদের প্রিয়জনকে হারাবেন, তারা হয়তো খুব খারাপ মানসিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাবেন। তাই তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা না ভেবে সকলকেই আমরা স্বাগত জানাচ্ছি রেস্তোরাঁয়।
পারসন এবং কার্লসন মনে করেন, তাদের এই অভিনব চিন্তা একজন কাজহারা বা প্রিয়জনহারা মানুষকে বাঁচার নতুন দিশা দেখাবে। নিজের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে সাহায্য করবে।