ঢাকা : রাতের আঁধারে রাজধানীর বুক চষে বেড়ায় এক অটোরিকশা। আগে থেকে কষে রাখা ছক অনুযায়ী বাসাবাড়ির গেট ভেঙে তুলে নেয় মোটর সাইকেল। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করে কেবল দুটি রড। রোমহর্ষক অভিযানে এমন এক চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
দিন পেরিয়ে রাত নামে। কোলাহল থেমে গিয়ে নগরীর সড়কগুলো হয়ে ওঠে নিঃস্তব্ধ। তখনই রাস্তায় নামে এক রহস্যময় অটোরিকশা।
গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তথ্য ছিলো, রাত গভীর হলেই অটোরিকশা নিয়ে বের হয় রবো। একে একে তুলে নেয় সঙ্গীদের। সে অনুযায়ীই ফাঁদ পাতে পুলিশ। অপেক্ষার পালা শেষ হয় কয়েক ঘণ্টা পর।
সিএনজিতে ওঠার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জয়নাল। এই সিএনজিতে করেই পরের গন্তব্যে রওয়ানা দেন ডিবি উত্তরের গাড়িচোর প্রতিরোধ টিমের সদস্যরা। রবোর সঙ্কেত পেয়ে এগিয়ে আসে আরো একজন। এভাবে রাতভর অভিযানে নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার হয় বাইক চোর দলের নয় সদস্য।
গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ সহকারী কমিশনার কায়সার রিজভী কোরায়েশী বলেন, তারা মানুষের বাসার গ্রিলের তালা ভেঙে মোটরসাইকেলের ঘার লক ভেঙে চুরি করে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই মোটরসাইকেলগুলো নিয়ে যায়।
চোর দলের একজন বলেন, আমরা রাত ৩ টার দিকে এই চুরিগুলো করি।আরেকজন বলেন, আমি তালা ভেঙে দেই। এই মোটরসাইকেলের সাথে যাই।
পুলিশ জানায়, এর আগে একটি অভিযাগের প্রেক্ষিতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছিলেন তারা। সেগুলো বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সন্ধান মেলে এই চক্রের। দীর্ঘদিনের নজরদারিতে নাম পরিচয়সহ আদ্যোপান্ত নখদর্পণে আসলে তাদের গ্রেফতারে নামে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, মাত্র দুটি রডের সাহায্যে বাসা বাড়ির গেটের তালা ভেঙে বাইক নিয়ে পালাতো তারা। এই চক্রের হোতা থেকে শুরু করে গ্রাহক পর্যায়ে চুরি করা বাইক বিক্রিকারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, যে নয় জনের দলকে ধরেছি। সেই দলের সদস্যদের ভিতরে চোরসহ পাইকারী একজন ক্রেতাকে ধরেছি। একজন বিচারকের কর্মচারীর মোটরসাইকেলটা হাইকোর্ট এলাকা থেকে দিনে দুপুরে নিয়ে গেছে। এই চক্রকেও আমরা এখানে ধরতে পেরেছি।
আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে পেলে এদের কাছ থেকে বাইক চুরির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছে পুলিশ।