Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১০ ১৪৩১, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন মাত্রার মধ্যেই : বিটিআরসি

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রিন্ট:

মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন মাত্রার মধ্যেই : বিটিআরসি

মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশনের মাত্রা নিয়ে সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসির মহাপরিচালক (স্পেকটাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল আলম বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিটিআরসি যে জরিপ চালিয়েছে সেখানে টাওয়ারের রেডিয়েশন আন্তর্জাতিক ও বিটিআরসির বেঁধে দেয়া মানদণ্ডের অনেক নিচে আছে। তাই এ বিষয়ে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘টাওয়ার রেডিয়েশনের মানদণ্ড ও সাম্প্রতিক জরিপ’ শীর্ষক এক আলোচনায সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিটিআরসির কমিশনার আমিনুল হাসান বলেন, ‘আমরা দেশের অনেকগুলো স্থানে মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন জরিপ সম্পন্ন করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। টাওয়ারের রেডিয়েশনের ফল অত্যন্ত সন্তোষজনক পাওয়া গেছে যা আমরা নিয়মিতভাবে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি। ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা পেতে চাইলে আরও বেশি মোবাইলসাইট স্থাপনের বিকল্প নেই। টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি আছে, তবে এটা ভিত্তিহীন।’

‘দেশের উচ্চ আদালত আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। আমরা খুব দ্রুতই আদালতের কাছে প্রতিবেদন পেশ করবো,’ বলেন তিনি।

বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের উপপরিচালক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘রেডিয়েশন দুই প্রকার- আয়োনাইজিং এবং নন-আয়োনাইজিং। এর মধ্যে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেমন পারমাণবিক বর্জ্য, সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে, গামা-রে কিংবা এক্স-রে। এগুলো শরীরের মধ্যে ডিএনএ পর্যায়ে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের শক্তি খুব কম, ফলে এতে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।’

তিনি বলেন, মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ড আছে এবং আমরা জরিপে পেয়েছি যে দেশের মোবাইল টাওয়ারগুলোর রেডিয়েশন নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে আছে।

ড. শামসুজ্জোহা আরও বলেন, ‘জরিপ করতে গিয়ে আমরা কয়েকটি টাওয়ারের ওপরে পাখির বাসা দেখেছি। পাখিরা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আছে এবং বংশ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। অনেক ভবনের ছাদে বাগান করা হয়েছে এবং তাতে খুব ভালো সবজির ফলন হচ্ছে। আমরা আশা করি এই টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে জনমনে যে বিভ্রান্তি আছে তা দূর হবে।’

প্রযুক্তি নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, মোবাইল টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জরিপ অব্যাহত রাখা এবং জনমনে যে বিভ্রান্তি আছে তা দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার আরও বলেন, ‘ইদানিং অনেক চিকিৎসকের মধ্যে রেডিয়েশন নিয়ে মনগড়া মন্তব্য করার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। এটা ঠিক নয়। বরং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এক্স-রে বা অন্যান্য পরীক্ষায় যে রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয় সেটা ক্ষতিকর এবং তাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া দরকার।’

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অফ বাংলাদেশের (এমটব) মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.) বলেন, ‘সামনে যখন ফাইভ-জি আসবে তখন আমাদের অনেক বেশি সাইটের প্রয়োজন হবে। তাই শুধু শুধু আতংকিত হয়ে প্রযুক্তিকে রুদ্ধ করার কোনো যুক্তি নেই। তাহলে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ব।’

তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন যে ছাদে থাকা টাওয়ারের কারণে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করছি যে, মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন কোনো ক্ষতি করে না। সারা বিশ্বে মোবাইলে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলোও সেই প্রযুক্তিই ব্যবহার করে।

বিটিআরসির উদ্যোগে ও এমটবের আয়োজনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদের (অব.) সঞ্চালনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মোবাইল শিল্প খাতের পদস্থ কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer