Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কী আছে?

সেলিম রেজা

প্রকাশিত: ২১:০৪, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ২১:০৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রিন্ট:

মুক্তিযোদ্ধাদের কপালে কী আছে?

-লেখক

সর্বকালের মহানায়ক ও বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ সন্তান ও মুক্তিকামী মানুষের কন্ঠস্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের দূরদর্শিতা গতিশীল নেতৃত্ব ও ঐন্দ্রজালিক সাহসিক নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি মানচিত্রে স্বাধীন একটি দেশ। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে তিনি একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার বিরোধীরা ছাড়া সবাই প্রত্যক্ষ পরোভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যারা কাজ করেছে তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বরণ করার পর স্বাধীনতার বিরোধী ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসকে বিকৃত করেছে।

শুরু হয়ে গেল কে মুক্তিযোদ্ধা কে মুক্তিযোদ্ধা না ইত্যকার বিষয়। স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতা গ্রহন করার পরই আলবদর, আল শামস, রাজাকারস সদস্যকে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়েছে। অপর পক্ষে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বানিয়েছে অমুক্তিযোদ্ধা। যা অন্যায়, অসম্মান ও লজ্জার বিষয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কতজন কতরকমের ভূমিকা রেখেছে আমরা কি তা মনে রেখেছি? না মনে রাখিনি। বাঙ্গালী আত্মভুলা জাতি, সবকিছু অল্পতে ভুলে যাই। স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লক্ষ মানষের আত্মদান ও দুই লক্ষের অধিক মা বোনের ইজ্জতের বলিদান । তাঁরা কি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন রাষ্ট্রকে তা জানাতে হবে। তাঁরা সবাই কি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন কি? রাষ্ট্রকে এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের সঙ্গে একাতœতা ঘোষণা করে ঢাকার কবি সাহিত্যিকরা “লেখক সংগ্রাম শিবির” নামে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন যার আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান। সদস্য ছিলেন সিকান্দার আবু জাফর, আহমদ শরিফ, শওকত ওসমান, শামসুর রহমান, বদরুদ্দিন ওমর, রনেশ দাশগুপ্ত, সাইয়িদ আতীকুল্লা, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, রোকনুজ্জামান খান, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, সুফিয়া কামাল,জহির রায়হান, আব্দুল গনি হাজারী, রাবেয়া খাতুন, আলাউদ্দিন আল আজাদ এবং আরও অনেকে। শিল্পীরাও পিছিয়ে ছিলেন না। মার্চের শুরুতেই বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র সব মাধ্যমেই শিল্পীরা অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে মিটিং, মিছিল, গণসংঙ্গীতের অনুষ্ঠান করেছিলেন। বিভিন্ন শিল্পী সংস্থা থেকে প্রতিনিধি নিয়ে “বিক্ষুব্ধ শিল্পী সংগ্রাম পরিষদ” গঠন করেছিলেন।

এ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আলি মনসুর, সম্পাদক সৈয়দ আবদুল হাদী, কোষাধ্যক্ষ লায়লাআর্জুমান্দ বানু, সদস্য ছিলেন জাহেদুর রহিম, খান আতাউর রহমান, মোস্তফা জামান আব্বাসী, ফেরদৌসী রহমান, বশির আহমেদ, আলতাফ মাহমুদ, বারীন মজুমদার, কামরুল হাসান, গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ হাসান ইমাম, অজিত রায়, কামাল লোহানী, জি.এ মান্নান, আবদুল আহাদ, সমর দাস, গহর জামিল, নায়ক রাজ্জাক এবং আরও অনেকে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বাংলাদেশ স্বাধীনতার জন্য অসামান্য অবদান রেখেছে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র অস্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম কালুরঘাটে করা হলেও পরবর্তিতে ভারতের কোলকাতায় প্রতিষ্ঠা করে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরনা, উৎসাহ, উদ্দিপনা ও মনোবল সৃষ্টির কাজ করে স্বাধীনতা অর্জনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সদস্য ছিলেন বেলাল মোহাম্মদ, কামাল লোহানী, রফিকুল ইসলাম, তিমির নন্দী, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, মনোরঞ্জন ঘোষাল, সুজেয় শ্যাম, নাসরীন আহম্মদ (শিলু), সৈয়দ হাসান ইমাম, আবদুল্লাহ আল ফারুক, আবুল কাশেম সন্দীপ, এম.আর আখতার মুকুল, কাজী হাবিবউদ্দিন আহমেদ মনি, আমিনুর রহমান বাদশাহ, আব্দুল জব্বার, রশিদুল হোসাইন, এ.এম শরফুজ্জামান, রেজাউল করিম চৌধুরী, সৈয়দ আবদুস শাকের, মুস্তফা মনোয়ার, ডা: অরুপ রতন,আবদুল গাফফার চৌধুরী, রথীন্দ্রনাথ রায়, গোবিন্দ হালদার, অজিত রায় এবং আরও অনেকে। স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলেরও ভূমিকা অগ্রগন্য। এর উদ্যোক্তা ও সংগঠক এবং খেলোয়ার সাইদুর রহমান প্যাটেল। সদস্য ছিলেন মোট ৩৬জন। তারমধ্যে ৩৪ জন খেলোয়ার, ম্যানেজার ও কোচ।

অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু, সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্ককর হাজরা, ম্যানেজার তানভীর মাজহারুল ইসলাম তান্না,কোচ ননী বসাক, সদস্য হলেন শেখ আশরাফ আলী, আমিনুল ইসলাম, আলী ইমাম,মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অমলেশ সেন, বিমল কর, শাহজান আলম, মুনসুর আলী লালু, কাজী সালাউদ্দিন, এনায়েতুর রহমান, কে.এন নওশেরুজ্জামান, সুবাষ সাহা, মুজিবুর রহমান, ফজলে হোসাইন খোকন, আবদুল হাকিম, তসলিম উদ্দিন শেখ, আবদুল মমিন জোয়ারদার, মনিরুজ্জামান পেয়ারা, সাত্তার, প্রাণ গোবিন্দ কুন্ড, মেজর জেনারেল (অব:) খন্দকার নুরুন্নবী, লুৎফর রহমান, অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জি, সনজিত কুমার দে, মাহমুদুর রশিদ, দেওয়ান মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন আজাদ, মো: আজব আলী, নেহার কান্তিত দাশ প্রমূখ। স্বাধীনতা যুদ্ধে ১১টি সেক্টরে কমান্ডাদের ভূমিকা, যুব নেতা শেখ ফজলুল হক মনি, কর্নেল খালেদ মোসারেফ, তোফায়েল আহমেদ, তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মো: মনসুর আহমেদ, কামারুজ্জামান প্রমূখদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

“শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পাকিস্তানীদের দেওয়া” হেলাল ইমতিয়াজ খেতাব বর্জন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মুনীর চৌধুর,সিতারা-ই ইমতিয়াজ খেতাব বর্জন করেছিলেন। দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন তাঁর সিতারা-ই খিদমত এবং সিতারা-ই ইমতিয়াজ খেতাব বর্জন করেছিলেন। এভাবে অনেক পন্ডিতব্যক্তি দেশকে ভালবেসে অনেককিছু বর্জন করেছিলেন বিধায় আমরা স্বাধীন একটি দেশ পেয়েছি। সাংস্কৃতিকব্যক্তিত্ব নাট্য-চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর সাহস ও মুক্তিযুদ্ধের কথা ইতিহাসে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন। স্বাধীনতা যুদ্ধে একই ব্যক্তি দুটি খেতাব প্রাপ্ত বীরউত্তম-বীরবিক্রম কমোডর এ ডব্লিউ চৌধুরী নৌ-যুদ্ধে অপারেশন জ্যাকপট পরিচালনা করেছেন।তাঁর অবদানের বিষয়ও লিপিবদ্ধ থাকা উচিৎ।

ইন্দিরা গান্ধীর পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগীতা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রম বেগবান হয়েছিল। তিনি এক কোটিরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে সেনা অফিসার সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন। প্রথম ব্যাচের উল্লেখযোগ্য অফিসার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের সেনা অফিসারদের ভূমিকা অগ্রগন্য। শ্রীমতি ইন্দ্রিরা গান্ধীর বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল ও সহযোগীতায় আমরা নয় মাসে স্বাধীন দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পাই। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা ফিল্ড হাসপাতাল বাংলাদেশের অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদেরও স্বাধীনতা অবদান কম নয়।

দেশের মধ্যে মুজিব বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, গেরিলা ও বিচ্ছু বাহিনী স্বতন্ত্রভাবে পাক আর্মিদের সাথে যুদ্ধ করেছে। অনেকে ভারতে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফিরে আসায় দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই বলে কি মুক্তিযোদ্ধা হবে না? আবার অনেকে বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত ছিল তাঁরা যেসব যায়গা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছেন হয়তো তার গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারনে জানতে পারেনি।আবার যে লোক গ্রামে রয়ে গেছে অন্য গ্রামে বা পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন হয়তো আত্মীয়স্বজন জানেই না। একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল অধিকাংশ মানুষ।

এখনকার সময়ের মতো ল্যান্ড ফোন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেটের মতো প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা না থাকার কারনে অনেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ জানতে পারে নি। সারাদেশের একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা তাঁর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া অন্যকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকার করতে চায় না। অমুকে কোথায় যুদ্ধ করেছে?আমিই মুক্তিযোদ্ধা এসব কথা বলছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা আরেকজন মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকার করতে চান না। যা খুবই বিদারক। স¦াধীনতার ৫০ বছর প্রায় হয়ে চললো এখনও কে মুক্তিযোদ্ধা,কে মুক্তিযোদ্ধা না তা সঠিকভাবে নিরুপণ করা গেল না।

বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরই মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কার্যক্রম শুরু করেন। বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের অনলাইনে অফলাইনে আবেদনের আহবান করেন। কিন্তু এগারো-বারো বছরে যাচাই-বাছাই মুক্তিযোদ্ধাদের যে পরিমান হয়রানি করা হয়েছে তা কিন্তু চরম অন্যায়। আমার গোপালগঞ্জ জেলায় মুক্তিযুদ্ধ যাচাই বাছাই নামে অনেক মুক্তিযোদ্ধা মানসিকভাবে হয়রানী শিকার হয়েছেন। জাতির পিতার জেলা এখানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করা লোকসংখ্যার অনুপাতে অংশগ্রহন বেশিই। রাজাকার দোসরের বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা অত্যাবশীয়। আমাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক পরিবার। আমার বাবা সিরু সরদার, বড় চাচা অদ্যুত সরদার হেমায়েত বাহিনীর সদস্য। তাদের বেখেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নাম তুলতে পারিনি।

ভারতের প্রশিক্ষণ নেওয়া ফকরউদ্দিন সরদার কাগজপত্র হারিয়ে যাবার কারনে তিনিও পারেরনি। এছাড়া গ্রামের মোড়ল সিদ্দিক সরদার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম তুলতে পারে নি। এতো যাচাই বাছাই নামে সময়ক্ষেপণ না করে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে প্রকৃত তালিকা করা যেতো বলে মনে করছি। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীরবিক্রম মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশ কয়েকবার তার বাহিনীর সদস্যদের ৪-৫টি নৌকা যোগে আমাদের বাড়ী আসতেন।মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ভরসার কেন্দ্র হয়েছিল আমাদের বাড়িটি যা আমি আমার দাদি মহুরুন নেছার কাছে শুনেছি।

জানতে ইচ্ছা হয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাজ কি? তিনি দায়িত্বে থেকে প্রকৃত বাদ পড়া মুকিক্তযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি। অনেক মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন যারা বেঁচে আছেন শেষ জীবনে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে দ্রুত স্বীকৃতি পাক এটা প্রত্যাশা করি। যাচাই বাছাই নামে দুই-তিনবার মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জের পূর্ববর্তী জেলা প্রশাসক সরকার মোখলেসুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি হঠাৎ বদলি হবার কারনে বর্তমান জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানাকে আমি কয়েকবার বলার পরে তিনি যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেন কিন্তু সে বিষয়ে আলোর মুখ দেখা যাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তাজউদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে। সমসাময়িক অনুষ্ঠানে তাঁকে স্মরণ করা স্বাধীনতা নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামীলীগ ও সরকারের কর্তব্য।

স্বাধীনতা যুদ্ধে যদি ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হন ও ২ লাখের অধিক মা-বোন সম্ভমের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। শহীদ হওয়া ৩০ লাখের অধিক ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত বলিদান দেয় তাহলে কি ৩২ লাখের অধিক মানুষ কি মুক্তিযোদ্ধা নয় কি? ৩২ লাখ কি হিসাবে বিবেচিত হবে। স্বাধীনতা সময়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে পঞ্চাশ লাখ মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি অমূলক নয় কিন্তু আমরা দেখছি ২-৩ লাখের মধ্যে করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা যা অন্যায়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী ছাড়া যারা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে সহয়তা করেছেন সবাই মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা,দারিদ্র,শোষনমুক্ত ও বৈষম্যহীন এক সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলা। যেখানে সামাজিক ন্যায় বিচার স্থান পাবে সর্বাগ্রে।

স্বাধীনতার জন্য কতো শত মানুষের কতোভাবে ভূমিকা রেখেছেন তা কি আমরা সব জানি? না সবার কথা যানা সম্ভব নয়। সবার কথা ইতিহাসের লাইম লাইটে আসা সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ-কষ্ট, রক্ত-ঘামের প্রতিদান আমরা দিতে পারিনি।মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা স্বল্প করে এদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও বলিদানকে অস্বীকার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পৃথিথবীর ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত।

লেখক: কবি ও সভাপতি, দেশপ্রেম সোসাইটি

[email protected] 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer