Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ: নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

কাজী রকিবুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৭ অক্টোবর ২০২০

আপডেট: ২০:৫৭, ২৭ অক্টোবর ২০২০

প্রিন্ট:

মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ: নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

ছবি- বহুমাত্রিক.কম

যশোর: মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ’ নামে সারাদেশে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে লুটপাট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধারা। তারা অভিযোগ করে বলেছেন বগুড়ার কথিত মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর আব্দুল মান্নান সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় এ প্রতিষ্ঠান করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন। এসময় সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যশোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করছে বলে মিথ্যা প্রচার শুরু করেছেন বগুড়ার কথিত মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসার আব্দুল মান্নান। তার উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত দাবি করে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করে কমিটি গঠন, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দিচ্ছেন।

এর অংশ হিসেবে যশোরেও ৭টি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যশোর সদর, মণিরামপুর ও বাঘারপাড়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলার কচুয়া গ্রামে স্থাপিত কলেজে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এবং নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা নেতারা আরো বলেন, যশোরসহ সারাদেশে ৭২টি কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে ১৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এবং শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে এ প্রতারণা বন্ধে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, শিক্ষামন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত যশোর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক বলেন, সভাপতির প্রস্তাব পাওয়ার পর ভালো উদ্যোগ হিসেবে তিনি সম্মতি দেন। এরপর প্রফেসার আব্দুল মান্নান সরকারের আহবানে বগুড়া গেলে তিনি কমিটি করে দেন। এসময় তিনি জানান, এ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত এবং প্রতিটি পদক্ষেপের অনুলিপি তাদের পাঠানো হয়। এলাকায় গিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করারও তাগিদ দেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, তিনজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারাই সকল কাজ দেখাশুনা করবে।

মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক আরো বলেন, কলেজ উদ্বোধনের পর তাদের প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে বিষয়টি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতাদের জানাই। এরপর বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মাদ বলেন, চাকরি বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাই টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান বলে ভালো প্রতিষ্ঠান বলে বিশ্বাস ছিল। কিন্তু পরে জানতে পারি যে প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমি অধ্যক্ষ পদের জন্য ১২ লাখ টাকা, উপাধ্যক্ষ পদের জন্য সুজয় কুমার সুর ৫ লাখ টাকা ও প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদের জন্য দিগন্ত হরি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মাদ তাদের সমুদয় টাকা ফেরত পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর যশোর জেলা মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার আলী হোসেন মনি, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দোদুলসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer