Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ মিউজিয়াম খুলছে

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ মিউজিয়াম খুলছে

ঢাকা : শান্তিনিকেতনে কোনোরকম সিসিটিভির নজরদারি ছাড়াই খুলতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি বাংলাদেশ ভবনের মিউজিয়াম।

মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পাওয়া প্রত্নসামগ্রী এবং বিশ্বকবির ব্যবহৃত সামগ্রীর রেপ্লিকা থাকছে মিউজিয়ামে। এছাড়াও পদ্মাপারের বিভিন্ন উন্নয়নের ছবি ও ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্যও তুলে ধরা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে বিশেষভাবে তৈরি এ মিউজিয়ামে।

মঙ্গলবার থেকে এ মিউজিয়াম খুলে দেয়া হচ্ছে সাধারণের জন্য। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, অক্টোবর মাস পর্যন্ত মিউজিয়ামে প্রবেশমূল্য থাকছে না। নভেম্বর থেকে প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে ২০ রুপি। এমনিতেই এখন কলকাতায় পা দিলেই বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকরা দলে দলে শান্তিনিকেতন ঘুরতে যান, দেখতে যান ‘আমার সোনার বাংলা’ গানের কবির কর্মভূমি। এরপর বাংলাদেশ ভবন হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশিরা আসবেন বলে মনে করছেন শান্তিনিকেতনের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভিসি সবুজকলি সেন।

বিশ্বভারতীর ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের নিবিড় আন্তরিকতায় তৈরি মিউজিয়াম থেকে কোনো জিনিস চুরি হয়ে গেলে তার দায় কি বাংলাদেশ ভবনের আধিকারিকরা নেবেন?

যেখানে বাংলাদেশ ভবনকে বাংলাদেশ এবং ভারতের সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে, সেখানে কোনো বড় ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক মহলেও। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ভবনের দায়িত্বে থাকা মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মিউজিয়ামের কিছু কাজ অসম্পূর্ণ আছে।

কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ঠিক হয়েছিল সেপ্টেম্বরে খোলা হবে, তাই মিউজিয়াম খোলা হচ্ছে। এনবিসিসি থেকে বাংলাদেশ ভবনের হস্তান্তর খুব তাড়াতাড়ি হবে। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।’ বাংলাদেশ ভবনের বাইরে দুটি ম্যুরাল তৈরি করা হবে।

একটি হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের, অন্যটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। রবীন্দ্রনাথের ম্যুরাল গড়বেন দুই বাংলার প্রখ্যাত শিল্পী যোগেন চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল গড়বেন ঢাকার কোনো ভাস্কর। ঢাকার শিল্পীর নাম চূড়ান্ত করবে বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৫ মে এ ভবনের উদ্বোধন করেন ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনা। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

তখন উদ্বোধন হলেও সর্বসাধারণের জন্য চালু হয়নি। এ মিউজিয়ামে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ডাকটিকিট, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারের একাধিক নিদর্শন ছাড়াও সুলতানী আমলের বিভিন্ন মুদ্রা, ব্রিটিশ মুদ্রা পনেরো-ষোলো শতকের মাটি খনন করে প্রাপ্ত টেরাকোটার মূর্তি রয়েছে।

সঙ্গে আছে একাধিক মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও। মিউজিয়ামে কিছু জিনিস কাচের বাক্সের মধ্যে রাখা হলেও বেশির ভাগই খোলা অবস্থায় রাখা হয়েছে, যা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ ভবনে যে সমস্ত দুর্মূল্য প্রতœসামগ্রী রয়েছে সেগুলো এতটাই খোলামেলা যে দর্শকরা ধরতে পারেন।

সিসিটিভি না থাকায় কেউ পকেটে ভরে নিতে পারেন বলেও শঙ্কা থাকছে। স্বভাবতই এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ভবন চালু নিয়ে শান্তিনিকেতনে পড়তে আসা বাংলাদেশি ছাত্রদের মধ্যেও একটা চাপা ক্ষোভ রয়েছে।

যেসব বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী মিউজিয়ামের দায়িত্বে থাকবেন তাদের কোনো মিউজিয়ামের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশিক্ষণ নেই বলে জানা গেছে।

এমনকি বাংলাদেশ ভবনের সিলিং থেকে পানি পড়া, বিভিন্ন জায়গায় ফাটলসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে এ ভবনের হস্তান্তর নেয়নি। ফলে ভবনের কোনো অংশ সাধারণের জন্য খুলে দিলে তার দায় বিশ্বভারতীকে নিতে হবে। তবে গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখছে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer