ঢাকা: ভেনিজুয়েলায় দুটি পরমাণু বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে রাশিয়া। টিইউ-১৬০ নামের এই বিমান মোতায়েন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এ বিমান ব্ল্যাকজ্যাক নামেও পরিচিত। গতকাল বিমান দুটি ৬,২০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে পৌঁছেছে।
রাশিয়ার সামরিক শক্তি প্রদর্শন এবং ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর প্রতি সমর্থন প্রকাশের জন্য রাশিয়া এ বিমান পাঠিয়েছে। গতকাল ভেনিজুয়েলার সাইমন বলিভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান দুটি অবতরণ করে। এর সঙ্গে রয়েছে একটি এএন-১২৪ পরিবহন বিমান এবং আইএল-৬২ যাত্রীবাহী বিমান।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলায় যাওয়ার পথে রুশ পরমাণু বোমারু বিমান দুটিকে নরওয়ের এফ-১৮ বিমান অনুসরণ করে। এদিকে, ভেনজিুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ বলেন, বিমান দুটি সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে এসেছে; এটা কোনো যুদ্ধের উসকানি নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ আহ্বানকারী নই বরং শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী।’
ভেনিজুয়েলায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির জায়েমিস্কি ভেনিজুয়েলার ভিটিভি-কে বলেন, পরমাণু বোমাবাহী বিমান মোতায়েনের মধ্যদিয়ে একথা পরিষ্কার হয়েছে যে, মস্কো ও কারাকাসের মধ্যে অত্যন্ত কার্যকর সামরিক অংশীদারিত্ব রয়েছে। এ সম্পর্ক ২০০৫ সালে হুগো চ্যাভেজের সময় থেকে উন্নতি করতে শুরু করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কৌশলগত পরমাণু বোমারু বিমান পাঠিয়ে রাশিয়া আমেরিকাকে এ ইঙ্গিত দিল যে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভেনিজুয়েলা সঙ্গীবিহীন নয়, মস্কো তার পাশেই আছে।
এদিকে ভেনিজুয়েলায় দুটি টিইউ-১৬০ কৌশলগত পরমাণু বোমারু বিমান মোতায়েনের বিরুদ্ধে আমেরিকা সমালোচনা শুরু করেছে তবে তা পাত্তা দিচ্ছে না রাশিয়া। গতকাল (সোমবার) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তার টুইটার আকাউন্টে রুশ পদক্ষেপকে ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি রাশিয়া ও ভেনিজুয়েলার সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলেও উল্লেখ করেন। পম্পেওর এসব মন্তব্যের সমালোচনা করে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য যথার্থ নয়। আমরা তার বক্তব্যকে সম্পূর্ণভাবে অন্যায্য বলে মনে করছি।’
রাশিয়া হচ্ছে ভেনিজুয়েলার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশ। মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, তেলের দাম কমে যাওয়া ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সংকটে পড়েছেন। এ সংকট থেকে মুক্তি পেতে তিনি রাশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন। গত সপ্তাহে মাদুরো মস্কো সফর করেন। তিনদিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার তিনি জানান, তেল উত্তোলন খাতে ৫০০ কোটি ডলার ও খনি খাতে আরো ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে রাশিয়া। এরপরই রাশিয়া গতকাল ভেনিজুয়েলায় পরমাণু বোমারু বিমান পাঠায়।