ছবি-ফারিন ইরফানা ফেসবুক ওযাল থেকে
ঢাকা : রাজধানীর ধানমন্ডি চার নম্বরের জনবহুল গলির রাস্তায় সদ্য ভূমিষ্ট শিশুকে কোলে নিয়ে বসে এক মা। সন্তান জন্মদিয়ে যে মা’য়ের থাকার কথা পরম যত্নে-সে কিনা আছে ধূলিবালির রাস্তায়।
অনেক পথচারীর মতো বিষয়টি দেখতে পায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস’এর (ইউল্যাব) শিক্ষার্থী ফারিন ইরফানা। এরই মাঝে কৌতূহলী অনেকেই ঘিরে দাঁড়ায় ওই মা-শিশুকে। তবে সহানুভূতির বদলের বেশির ভাগই অবজ্ঞা আর অশালীন মন্তব্য ছুঁড়ে প্রস্থান করেন।
সাহসী ইরফানার মানবিকবোধ জাগ্রত হয়। সবাই প্রস্থান করলেও এক আন্তরিক দায় আটকে রাখে তাকে, যদিও ইউনিভার্সিটির গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে অংশ নেয়ার তাড়া ছিল তারও।
ইরফানা ততক্ষণে বুঝতে পারে রোববার সকালের দিকে সন্তান জন্ম দেয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ওই নারীর ওপর অমানবিক সব ঘটনা ঘটে গেছে। কিছু সংখক পাষন্ড আর বখাটে ওই নারীর ওপর ইট-পাটকেলও নিক্ষেপ করে। আহত ওই নারী তা সত্ত্বেও নিজের সদ্য ভূমিষ্ট মেয়ে শিশুটিকে পরম মমতায় আকড়ে তাকে রক্ষায় সব চেষ্টা করছেন।
ইউল্যাবের কাছে চা-সিংগারার গলিতে ঘটনার আকষ্কিতায় যখন ইরফানা অনেকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ তখন সহযোগিতার জন্য কাছের বান্ধবী আনিকাকে ফোন করতে থাকে। ঘন্টা খানেকের মাঝে আনিকা সহ অনেকেই ঘটনাস্থলে পৌছে যায়। ভরসা পায় ইরফানা।
শুরুতে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও কারও সাড়া মেলেনি। পরে পুলিশ এসে ওই নারী ও তার সদ্য ভূমিষ্ট শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এক ফেসবুক পোস্টে পুরো ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। সেই সাথে ওই মা-শিশুর বেশ কিছু ছবিও পোস্ট করে। ইরফানার এই পোস্ট ফেসবুকে দারুণ সাড়া ফেলে।
সাহসী ও বীরোচিত এই কর্মের জন্য শতাধিক ফেসবুক ইউজার ইরফানাকে অভিনন্দন জানায়।