ছবি: বহুমাত্রিক.কম
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ভালুকায় চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার ১মাস ২দিনের মাথায় শুক্রবার রাতে উপজেলার সিডষ্টোর বাজার এলাকা থেকে এসব আসামীদের গ্রেপ্তার করেন পাগলা থানা পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গেল ১৭ জুন’১৯ ভালুকা উপজেলার সীমান্তবর্তী পাগলা থানার জয়ধরখালী নামক এলাকায় বস্তাভর্তি এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওইদিনই লাশের পরিচয় মিলে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ধামলই গ্রামের মৃত করিম বেপারীর ছেলে নুরুল হক। তিনি মাওনা এলাকায় ভাড়াবাসায় থেকে ভাড়ায় প্রাইভেটকার চালাতেন।
ধৃতআসামীদের বরাদ দিয়ে পুলিশ জানান, শ্রীপুর উপজেলার যোগিরসিট গ্রামের জিন্নাহর মেয়ে মৌসুমী। কয়েক বছর পূর্বে মাওনা এলাকার জনৈক আমির হামজার সাথে মৌসুমীর বিয়ে হলে স্বামী মাদকসেবী হওয়ায় ১টি সন্তান জন্ম নিলেও ভেঙ্গে যায় তাদের সংসার।
সংসার ছাড়াছাড়ির পর মৌসুমী ওখানকার এমসি বাজারে জনৈক হাসেমের বাসা ভাড়া নিয়ে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করলে ওই সুবাধেই পরিচয় হয় ড্রাইভার নুরুল হকের সাথে। মৌসুমী ও নুরুল হকের বাড়ি পাশাপাশি গ্রাম। প্রায় বছরখানেক আগে নুরুল হক মৌসুমীকে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রাইভেট কারে তুলে কৌশলে মৌসুমীকে অজ্ঞান করে তার নগ্ন ভিডিও ধারন করে রাখে।
ওই নগ্ন ভিডিও প্রকাশ করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নুরুল প্রায়ই মৌসুমীকে যৌন নিপীড়ন করত। যৌন নিপীড়নে অতিষ্ট মৌসুমী সাত মাস পূর্বে ওই এলাকা ছেড়ে ভালুকা উপজেলার সিডষ্টোর বাজার এলাকায় চলে আসেন এবং এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী রেজাউল করিম রাজুর (২৮) সাথে বিবাহে আবদ্ধ হন। এখানেও মৌসুমীর সন্ধান পেয়ে নুরুল তাকে নগ্ন ভিডিও প্রকাশের অব্যাহত হুমকির প্রেক্ষিতে এ এলাকা ছেড়ে তারা শ্রীপুরের বরমী বাজারে চলে যান।
ওখানেও নুরুল মৌসুমীদের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার নগ্ন ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেয়া শুরু করলে ১৬ জুন’১৯ রাতে মৌসুমী নুরুল হক প্রথমে তীব্র ঘুমের ঔষধ মেশানো পায়েস খাওয়ান এবং অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৌসুমী, তার স্বামী রাজু ও আরেক কর্মচারী মিলে নুরুল হককে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরদিন নুরুলের লাশ বস্তায় ভরে এলপি গ্যাস পরিবহনের গাড়ী দিয়ে ভালুকা উপজেলার সীমান্তবর্তী পাগলা থানাধীন জয়ধরখালী গ্রামের ময়না ফকিরের বাড়ির পাশের ঝোপে পেলে রাখে। ঘটনার ১মাস ২দিনের মাথায় উপজেলার সিডষ্টোর বাজার এলাকা থেকে মৌসুমী ও তার স্বামী রাজু কে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করেন পাগলা থানা পুলিশ।
এব্যাপারে পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ফায়েজুর রহমান আসামী গ্রেপ্তার বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, বিকৃত যৌনাচারণের জন্যই নুরুল হক খুন হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগে রেজাউল করিম রাজু গ্রেপ্তার করি এবং পরে রাজুর স্বীকারোক্তি মতে তার স্ত্রী মৌসুমীকে শুক্রবার রাতে ভালুকার সিডষ্টোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বহুমাত্রিক.কম
