ঢাকা : পাকিস্তানে কারাবন্দি ভারতীয় গুপ্তচর কুলভূষণ যাদব মামলায় ইসলামাবাদের দেয়া মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
যাদবকে কনস্যুলার অ্যাকসেস না দিয়ে ভিয়েনা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে নয়াদিল্লির অভিযোগকেও গুরুত্ব দিয়েছেন আদালত।
বন্দিকে অবিলম্বে কনস্যুলার অ্যাকসেস দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশে স্থগিতাদেশ দিলেও পাকিস্তানের আদালতে মামলার শুনানি চলবে বলে জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে পাকিস্তানের মিলিটারি আদালতকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক আদালতের এ নির্দেশনা মানতে বাধ্য নয় ইসলামাবাদ। তা সত্ত্বেও এ রায়কে ‘ভারতের জন্য বড় জয়’ হিসেবে দেখছে নয়াদিল্লি। খবর এনডিটিভির।
বুধবার জার্মানির হেগে জাতিসংঘের আদালতে এ রায় দেয়া হয়। মামলার রায় ঘোষণা করেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল কাবি আহমেদ ইউসুফ। ৪২ পাতার রায়ে তিনি বলেন, কনস্যুলার অ্যাকসেস না দিয়ে ভিয়েনা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। আদালতের নির্দেশ, পাক জেলে বন্দি কুলভূষণ যাধবকে কনস্যুলার অ্যাকসেস দিতে হবে। অর্থাৎ বন্দি যাদবকে আইনি সাহায্য দিতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
কুলভূষণ মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের কাছে ১৫-১ ভোটে পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। রায়ে উচ্ছ্বসিত ভারত। টুইট করে রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
‘ভারতের জন্য বড় জয়’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি ও বিরোধী দলের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়াইসিসহ আরও অনেকেই।
২০১৬-এর মার্চে ৪৯ বছর বয়সী কুলভূষণ যাদবকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান। তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে তারা। তবে তা খারিজ করে দেয় ভারত। এক বছর পর কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয় পাকিস্তানের সামরিক আদালত।
মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার ১ মাস পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে ভারত। ২০১৭-এর মে মাসে সেই সাজায় স্থগিতাদেশ আসে। পাকিস্তান দাবি করে, ২০১৬-এর ৩ মার্চ বেলুচিস্তান থেকে তাদের নিরাপত্তাবাহিনী কুলভূষণ যাদবকে গ্রেফতার করে।
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতীয় নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর, ইরানে ব্যবসার কাজে গিয়েছিলেন কুলভূষণ যাদব সেখান থেকে তাকে অপরহরণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানিতে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কুলভূষণ যাদবকে হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না দেয়ার অভিযোগ তোলে ভারত, যা ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থী।