Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দৃঢ় করার আহ্বান হাসিনার

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৬, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

প্রিন্ট:

ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দৃঢ় করার আহ্বান হাসিনার

ব্যবসার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে দৃঢ় করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ওপর মনোনিবেশ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কাজ করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

সোমবার  মৈত্রী দিবস বা ফ্রেন্ডশিপ ডে উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রচারিত দুই মিনিটের ভিডিও বার্তায় এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্বে বিশ্বাস করে চলেছি। একই সঙ্গে এই বর্ষপূর্তি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং সামনের পথ চলা সম্পর্কে চিন্তা করার সুযোগ এনে দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী গতিশীল অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নিজেদের পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য ও এটি একটি উপলক্ষ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল বিষয় এখন জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, বাণিজ্য, ব্যবসা ও যোগাযোগে মনোনিবেশ করা দরকার, যা উভয় পক্ষের জন্য পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তিনি জানান।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স (আইসিডাব্লিউএ) ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি প্রদান করার প্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার নয়াদিল্লিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এবং আইসিডাব্লিউএ মহাপরিচালক বিজয় ঠাকুর সিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরকালে আমরা ঢাকা ও নয়াদিল্লির পাশাপাশি নির্ধারিত ১৮টি শহরে যৌথ উদযাপনের বিষয়ে একমত হয়েছি এবং ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে আজ (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে এবং বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৮টি দেশে বন্ধুত্বের দিন পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যাত্রায় এটি একটি মাইলফলক। ভারত ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে দুই দেশ এবং দেশের জনগোষ্ঠী একত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণাকে বাস্তবতায় পরিণত করে চলবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের অংশীদারিত্ব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় যা আমাদের কাজের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। আজ, আমাদের বিশাল অংশীদারিত্ব পরিপক্ব হয়েছে, গতিশীল, ব্যাপক এবং কৌশলগত আকার নিয়েছে এবং সার্বভৌমত্ব, সমতা, বিশ্বাস এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং অন্যান্য অগণিত অভিন্নতার যৌথ মূল্যবোধে পরিগণিত।

তিনি আরও বলেন, নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক মতবিনিময় ও আদানপ্রদান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন আরও শক্তিশালী, বৈচিত্র্যময়ও প্রসারিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে আরোপিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও সমস্ত স্তরে সম্পর্ক স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী রয়েছে। তিনি অভিমত প্রকাশ করেন, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় আমাদের চমৎকার সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততায় এটি স্পষ্ট ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর এক ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কটি বন্ধুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব আমাদের হৃদয়ে রয়েছে। বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় এবং দীর্ঘস্থায়ী থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং তার সরকার, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং সামগ্রিকভাবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতের জনগণের উদারতার কথা স্মরণ করছি। তিনি বলেন, ভারত তখন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করেছে, মুজিবনগর সরকারের জন্য জায়গা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের পক্ষে কূটনৈতিক প্রচারণা চালিয়েছে।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer