যশোর : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঝিকরগাছার এক যুবতী ইতালি প্রবাসী যুবকের কাছ থেকে প্রায় ২৩ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে। এ ঘটনায় প্রবাসী যুবক বাংলাদেশের রাস্ট্রদূতের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সাথে ওই যুবকের পিতা যশোর আদালতে মামলা করেছেন।
ভুক্তভূগী আশরাফুল ইসলাম চৌগাছা বড় কাবিলপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। আর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আত্মসাতের অভিযুক্ত মোছাঃ বিউটি নাজনীন ঝিকরগাছা উপজেলার বাকুড়া গ্রামের লিয়াকত আলীর মেয়ে এবং কর কমিশন কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরি করছেন।বর্তমানে তিনি খুলনা কর কমিশনের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত চৌগাছায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মোবাইল এন্টারনেটের মাধ্যমে ২০১৫ সালে আশরাফুল ইসলাম ও বিউটি নাজনীনের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিষয়টি পারিবারিক ভাবে সম্মত হয়।
বিউটি নাজনীন আশরাফুল ইসলামের কাছ থেকে লেখাপড়াসহ অন্যান্য কারণ দেখিয়ে তিনি এবং তার মা মোছাঃ ফাতেমা বেগম, পিতা লিয়াকত আলী ২০১৯ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত বিকাশ, ব্যাংক এবং লোক মারফত ২২ লাখ ৯৫ হাজার ৪শ ৬৬ টাকা নিয়েছেন। এরপর আশরাফুল ইসলাম বিয়ে করার জন্য বিউটিকে জানালে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ সংবাদ জানতে পেরে আশরাফুল ইসলামের পিতা আব্দুর রহিম বিউটি নাজনীন ও তার পিতামাতার সাথে দেখা করের এবং বিয়ের দিন ঠিক করার পরামর্শ দেন। এসময় তারা সবাই অস্বীকার করেন। এরপর তিনি গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেন। মামলায় আশরাফুল ইসলামের টাকা পাঠানো সকল ডকুমেন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত তদন্ত করে যশোর গোয়েন্দা পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছে ।
এদিকে প্রায় ২৩ লাখ টাকা আত্মসাত করায় আশরাফুল ইসলাম ইতালির বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূতের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত অফিসের কাউন্সেলর মোঃ এরফানুল হক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত ও প্রতিকার করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিউটি নাজনীন, তার পিতা লিয়াকত হোসেন এবং মা মোছা ফাতেমা বেগমের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে ম্যাসেস পাঠানো হলেও তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে, বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার সামনে বিউটি নাজনীন প্রায় ৩ লাখ টাকর মত নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছেন যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই সোলায়মান। তিনি জানান, আশরাফুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি তদন্ত চলছে। এখনো শেষ হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) জুয়েল ইমরান বিষয়টি তদন্ত করছেন। এ ব্যাপারে তিনি জানান, তদন্ত চলছে। উভয়পক্ষের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। দ্রুত তার প্রতিবেদন দেয়া হবে।
বহুমাত্রিক.কম