Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

বিষমুক্ত পৃথিবীর বাতাস

নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ৫ জুন ২০২০

প্রিন্ট:

বিষমুক্ত পৃথিবীর বাতাস

পৃথিবী জুড়ে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে দীর্ঘ সময় ধরেই। কর্পোরেটের দুনিয়ায় বিশ্বব্যাপী গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এর জন্য পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু। দিনের পর দিন মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে পৃথিবী।

এসব সইতে না পেরে অস্থির আর বিষাক্রান্ত পৃথিবীর আকাশ, বাতাস, নদী-সাগর দুষণে নুব্জ্য হয়ে পড়ে। বিষে আর দুষণে উত্তপ্ত প্রকৃতি নানা সময়ে পৃথিবীতে বার্তা দিয়েছে।

দানবীয় ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত, ভূমিকম্প, দাবানল, প্রচন্ড খরা, কালবৈশাখি, প্রবল বন্যা-প্লাবন সহ নানা মহামারিতে জানান দিয়েছে প্রকৃতি। তবুও কেউ ক্ষান্ত হয়নি। প্রকৃতির এসব বার্তায় কোন দেশই সাড়া দিতে রাজি হয়নি। উপরন্ত কার্বণ নি:সরণ আর কলকারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় অশান্ত বিশ্ব থমকে দিয়েছে পৃথিবীকে।

ঘরবন্দি করেছে পৃথিবীর মানবকুলকে। বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা। আকাশে-বাতাসে বিষের বাতাস বন্ধ হয়েছে। পৃথিবীর বৃহদাকার রাষ্ট্র সমুহও স্তবির হয়ে পড়েছে। এবারের মতো নভেল করোনা ভাইরাস প্রকৃতিরই আরেক বার্তা। দীর্ঘ কয়েক মাস জুড়ে করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে পৃথিবীর বাতাস বিষমুক্ত হয়েছে। নীল আকাশে স্বচ্ছ বাতাস, নদী-সাগরে পানির রং পরিবর্তন ঘটছে। একটি মাত্র করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের দেশে দেশে লকডাউনে সচল হয়েছে প্রকৃতি।

বিশ্বের উন্নত দেশ সমুহের অধিক মাত্রায় গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপাদন ও নির্গমনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বনসহ ইত্যাদি বিষাক্ত গ্যাসের নিঃসরণ, পরীক্ষামূলক পারমানবিক বিস্ফোরণ, কলকারখানার বর্জ্য, কালোধোঁয়া, শিল্পবর্জ্য ও গ্যাস নিঃসরণ চলেছে।

ফিবছর পৃথিবীর বৃহৎ অরণ্যাঞ্চল দাবানলে পুড়ে ছাড়খার হয়েছে। বন উজাড়ের মধ্যদিয়ে বন্যপ্রাণি বিলুপ্ত হয়েছে। নদী-সাগরে দুষণ ছড়িয়ে জলজ প্রাণি মারা গেছে। পৃথিবীর বাতাসে ক্ষতিকর শীষা আর বিষে বিশ্বব্যাপী পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মধ্যদিয়েই সময়ে সময়ে নেমে আসছে নানা বিপর্যয়। সম্প্রতি সময়ে আবির্ভূত হয়েছে মানব সভ্যতা বিপন্নকারী নভেল করোনা ভাইরাস। এটি প্রকৃতিরই আরেক প্রতিশোধ!

তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্যসঙ্কট, রোগে-শোকে মানব সভ্যতা বিপন্ন হওয়ার এমন আবাস অনেক আগ থেকেই উঠে আসছে।

২০১৪ সনে আইপিসিসি (ইন্টারগর্ভামেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) নামে পরিচিত জাতিসংঘ প্যানেলের জাপানের এক বৈঠক শেষে রিপোর্টে হুশিয়ারি করা হয়েছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছিল এখনই সাবধান না হলে বন্যার ঝুঁকি এবং খাদ্য সংকট বাড়বে, ফসলের ফলন ও পানির প্রাপ্যতার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, হুমকির মুখে পড়বে মানুষের স্বাস্থ্য। (তথ্য: বিবিসি বাংলা, অনলাইন)।

বর্তমান করোনার মতো মহামারি এই রিপোর্টের সত্যতা একধাপ প্রমাণ করেছে। বৈঠকে আইপিসিসির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র পাচাউরি সতর্ক করে বলেছেন যে, জলবায়ুর পরিবর্তনেকে উপেক্ষা করা হলে তার পরিণতি হবে গুরুতর। তিনি বলেন, রিপোর্টে যা তুলে ধরা হয়েছে তাকে যেন উপেক্ষা করা না হয়। এরপক্ষে একটা বড় কারণ হলো এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী এবং গভীর। গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য বিশ্ব যদি কিছু না করে এবং জলবায়ু পরিবর্তন যদি এভাবেই বাড়তে থাকে তাহলে মানব সমাজ কাঠামোর যে স্থিতিশীলতা সেটাই বিপন্ন হয়ে পড়বে।

কর্পোরেট আর পুঁজির দুনিয়া মানুষের বাসযোগ্য পৃথিবী থেকে সরে পড়ছে। যেখানে বাণিজ্য মূল কথা সেখানে উদারনৈতিক পুঁজির বিকাশের লাগামহীন বিশ্বায়ন ও মুনাফা অর্জনই আসল উদ্দেশ্য হওয়ায় পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষের জন্যই বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে। যথেচ্ছা বিনিয়োগ, করপোরেটের ব্যাপ্তির আত্মঘাতী প্রবণতা ধ্বংস করছে জীববৈচিত্র্য।

জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে বরফ গলছে মেরু অঞ্চল হিমালয়ে। আমাজন জ্বলে, অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল থামে না, সুন্দরবন ধ্বংসের সব আয়োজন সম্পন্ন, পৃথিবীময় বনাঞ্চল-পাহাড়, নদী-জলাশয়, কৃষিজমি বিনষ্ট হচ্ছে। দুষণের নিমর্মতা এখন আকাশচুম্বী। নগরায়ণের ফলে নীলাকাশ অদৃশ্যপ্রায়। সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস সহ

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত. দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ সহ আরো কিছু দেশ আগামী কয়েক দশকেরই বিলীন হয়ে যাবে।

এখন বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি সবচেয়ে আলোচিত। এই ভাইরাস সংক্রমণের পূর্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি জোরেশোরে উচ্ছারিত হয়েছে। বনজঙ্গল, পরিবেশ, বন্যপ্রাণী, সামুদ্রিক প্রাণী, জীববৈচিত্র্য বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হওয়ার ভয়াবহ চিত্র প্রতিনিয়ত ভেসে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।

বিগত বছরেও আন্তজার্তিক গণমাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ব্রাজিলের আমাজন দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার বিষয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বনাঞ্চল। এই বনটি পৃথিবীর ২০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহ করে। এই আমাজনকে পৃথিবীর ফুসফুসও বলা হয়। আমাজন অরণ্যাঞ্চলে তিরিশ লক্ষ প্রজাতির প্রাণি ও উদ্ভিদ রয়েছে। (তথ্য: বিবিসি বাংলা)।

এই বনাঞ্চল বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশাল এই বনাঞ্চলের গাছপালা প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন টন কার্বন শুষে নিয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন মোকাবেলা করে। রাশিয়ার সাইবেরিয়ায়ও কয়েক হাজার বর্গমাইল বন আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে দাবানল ছড়িয়েছিল।

সে বছরের আগষ্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা, এরিনা ও ক্যালিফোর্নিয়ায়ও ভয়াবহ দাবানলে পুড়েছিল। এছাড়াও বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে দাবানলের সংবাদ শুনা গেছে। বিশ্বব্যাপী গ্রীনহাউজ ইফেক্ট এর জন্য দিনের পর দিন ধরিত্রীটা মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বলতে পারি করোনা ভাইরাসের কারণে কিছুটা সময়ে হলেও প্রাণ ফিরে পেয়েছে বিশ্ব। উত্তপ্ত, অস্থির প্রকৃতিতে এই সময়ে পড়ছে অদ্ভুত প্রভাব। বিশ্বের দেশে দেশে লকডাউন থাকায় বন্ধ হয়ে পড়েছে শিল্প কলকারখানা। ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের মাত্রা কমতে থাকায় নিজের সুষমা তুলে ধরে চেনা রূপে ফিরছে প্রকৃতি। নিরব নিস্তব্দ প্রকৃতিতে পাখির কলকাকলি, কোকিলের কুহুূ কুহুূ ডাক, বন্যপ্রাণির লাফালাফি, অবাধ বিচরণ, ঝিঝি পোকার শব্দ যেন প্রকৃতি তার পূর্বাবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।

অথচ দীর্ঘদিন ধরেই কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের কারণে গ্রীনহাউজ ইফেক্ট, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন এসব শব্দগুলোর সাথে আমরা ব্যাপক পরিচিত। প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর বার্তা শুনে আসছি। পুঁজিবাদী বিশ্ব তথা রাষ্ট্র ব্যবস্থার নানা অসংগতিপূর্ণ আর্থিক উন্নয়ন ও প্রকৃতি বিনাসী কর্মকান্ড, প্রকৃতিকে লুন্ঠন করার কারণে অতিষ্ট প্রকৃতি আজ বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেছে। এমনতর লুন্ঠনের কারণে প্রাকৃতিক বনের বিপন্নতা, বন্যপ্রাণী ও সামুদ্রিক প্রাণী সমুহ বিলুপ্তির পথে।

এ অবস্থায় নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমনের বিষয়টি প্রকৃতিরই প্রতিশোধ বলে অনেক বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

জলবায়ু পরিবর্তনের মত বৈশ্বিক সমস্যা করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে প্রভাবিত করছে কি না এমন প্রশ্নে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট, হেলথ এবং গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টের অর্ন্তবর্তী পরিচালক ডা. অ্যারন বার্নস্টেইন বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে বনাঞ্চল এবং সমুদ্রের বড় ও ছোট প্রাণীগুলি উত্তাপ থেকে বাঁচতে মেরুর দিকে এগিয়ে যায়। প্রাণীগুলো তাদের স্বাভাব বদলে অন্যান্য প্রাণীর সাথে যোগাযোগ করে এবং এটি রোগজীবানুদের জন্য নতুন হোস্টে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে। বার্নস্টেইন মনে করেন, মহামারির ঝুঁকি বেড়ে যাওয়াটা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম মূল কারণ।

বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে প্রাণীরা তাদের আবাসস্থল বদলাতে বাধ্য হচ্ছে। তারমতে, নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে প্রাণীরা খাপ খাওয়াতে গিয়ে স্থানীয় প্রাণীদের সংস্পর্শে আসছে, ছড়াচ্ছে ভাইরাস, সংক্রমিত হচ্ছে প্রাণী থেকে মানুষে।

বাংলাদেশেও বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে দীর্ঘ সময় থেকে। এছাড়া বন দখল, পাহাড় টিলা কেটে সাবাড়, নদী ভরাট ও দখল, পরিবেশের সাথে মানানসই নয় এমন বিদেশী গাছ দিয়ে বনায়ন, কলকারখানা ও ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও বর্জ্য, নদী-সাগরে প্লাস্টিক ও পলিথিন ফেলা হচ্ছে। ফলে দেশের জীববৈচিত্র্য ও জলজ পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত করে তুলছে। সমুদ্র পৃষ্টে জলজ প্রাণি ও পরিবেশের দূষণও বেড়েই চলেছে।

সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে অদৃশ্য অণুজীবগুলি (ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া) এদের জীবভর সমুদের মোট জীবভরের ৯০ শতাংশ। (আনন্দবাজার পত্রিকা, ২০ এপ্রিল, ২০২০)। এবং পৃথিবীর সব মানুষের জীবভরের তুলনায় এক হাজার গুণ বেশি। এদের মধ্যে উদ্ভিদ গভীর অণুজীবগুলি সূর্যালোকের মাধ্যমে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শক্তি সঞ্চয় করে। এই উদ্ভিদ অণুজীবগুলি সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য শৃঙ্খলের প্রথম সদস্য। এদেরকে খেয়ে বেঁচে থাকে ক্রিলেরা। ক্রিলেদের খেয়ে বেঁচে থাকে মাছ।

সমুদ্রে দিনের পর দিন বর্জ্য পদার্থ ফেলায় সর্বপ্রথম এরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের ক্ষতি সামুদ্রিক খাদ্য শৃঙ্খলে বড় ধরণের বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসে। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক দশকে প্রবল সামুদ্রিক দূষণের কারণে সমুদের জলে অতিরিক্ত পুষ্টির অণুপ্রবেশ ঘটেছে। তারফলে বাড়তে থাকে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও। নতুন জন্মানো ব্যাকটেরিয়াগুলি ব্যবহার করতে থাকে সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন। তখন দেখা দেয় সঙ্কট।

অক্সিজেনের অভাবে মারা যায় সামুদ্রিক প্রাণী ও মাছ। সবমিলিয়ে জলজ ও স্থলজ পরিবেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিপর্যয় নেমে আসছে পরিবেশের উপর। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মতো বাংলাদেশে বৃষ্টির সময়ে খরা, খরার সময়ে বৃষ্টি, গরমের দিনে ঘনকূয়াশা, পাহাড় ধ্বস, ভূমি ফাটল, ঘনঘন বজ্রপাতে প্রাণহানিসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের এসব বিভিন্ন প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনাবৃত প্রয়োজন। বাস্তবে এর এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ বনভূমিও বাংলাদেশে নেই।

বনাঞ্চল হচ্ছে একটি দেশের প্রতিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার প্রধান উপায়। জীববৈচিত্র্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ বন। জলবায়ুর স্থিতিশীলতা এবং পানি ও মাটির ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু। গাছ বর্ষাকালে মাটিকে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে, মরুকরন রোধ করে। বায়ুমন্ডলের তাপবৃদ্ধিকারী কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে ও অক্সিজেন ত্যাগ করে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ভারসাম্য রক্ষা করছে।

এই ভারসাম্য যখন ব্যাহত হচ্ছে, তখনই ঘটছে বিপরীত প্রত্রিক্রিয়া। এটি শুধু প্রকৃতিতেই বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে না, মানবস্বাস্থ্যের উপরও বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।

বিশেষজ্ঞদের পূর্বেকার সেসব আশঙ্কা এখন বাস্তবে রূপদান করছে। সম্প্রতি সময়ের নভেল করোনা ভাইরাস এরও একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। আবার এই ভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্ব যখন লকডাউনে তখন বিশ্বে নিজের সুষমা তুলে ধরছে প্রকৃতি। কমেছে কার্বন নি:সরনের পরিমাণ। সাগরে দূষণের পরিমাণও হ্রাস পাচ্ছে। ছোটাছোটি শুরু করেছে বন্যপ্রাণি।

এসব দৃষ্টান্ত থেকে বিশ্বের সকল ধনবাদি রাষ্ট্রসমুহের পদক্ষেপ গ্রহণ সময়ের দাবি। অন্যতায় ধরিত্রীর জন্য পদাঘাত মানব সমাজের যে স্থিতিশীলতা সেটি বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer