বিশ্বের প্রথম সিন্থেটিক ভ্রূণ তৈরি করে ফেললেন ইজরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের স্টেম সেল ব্যবহার করে ভ্রূণের মতো গঠন তৈরি করেছিল, যার একটি অন্ত্র, একটি মস্তিষ্কের মতো গঠন এবং একটি স্পন্দিত হৃদয় ছিল। এই গঠন পক্রিয়ায় বিন্দুমাত্র শুক্রাণু ব্যবহার করেননি বিজ্ঞানীরা।
ইজরায়েলের শুক্রাণু, ডিম এবং নিষিক্তকরণের প্রয়োজনীয়তা কার্যকর ভাবে দূর করেছিলেন। তাঁরা দেখতে পেয়েছিলেন যে, ইঁদুরের স্টেম সেলগুলি একটি অন্ত্র, প্রারম্ভিক মস্তিষ্ক এবং একটি স্পন্দিত হৃৎপিণ্ডসহ প্রাথমিক ভ্রূণের মতো কাঠামোতে স্ব-একত্রিত হতে পারে।
সিন্থেটিক ভ্রূণ কী? এই ভ্রূণগুলিকে সিন্থেটিক হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় তার সবথেকে বড় কারণ, এগুলি নিষিক্ত ডিম ছাড়াই তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা প্রাকৃতিক ভ্রূণের বিকাশের সময় অঙ্গ এবং টিস্যু তৈরিতে সাহায্যকারী প্রক্রিয়াগুলি আরও ভালভাবে বুঝতে পারেন। পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা আশা করেন, এই ধরনের কৃত্রিম ভ্রূণ প্রাণীদের পরীক্ষার বোঝা কমাতে পারে এবং তার ফলে মানবদেহে প্রতিস্থাপনের জন্য কোষ এবং টিস্যুগুলির নতুন উৎসের পথও তৈরি করতে পারে।
সেল ডট কম নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি। গবেষণায় কিছু কোষকে রাসায়নিক দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়, যা জেনেটিক প্রোগ্রাম চালু করে প্লাসেন্টা বা কুসুমের থলিতে পরিণত হয়। অন্য অঙ্গ ও টিস্যু ছাড়াই এই ভ্রুণ বিকাশ লাভ করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। গবেষণায় এও দেখা গেছে, বেশিরভাগ স্টেম সেল ভ্রূণের মতো গঠন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে প্রায় ০.৫ শতাংশ স্টেম সেল মিলিত হয়ে ছোট বলের আকার ধারণ করে। ওই বল থেকেই স্বতন্ত্র টিস্যু এবং অঙ্গের বিকাশ ঘটে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। অভ্যন্তরীণ গঠন এবং কোষের জেনেটিক প্রোফাইলের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাকৃতিক ইঁদুরের ভ্রুণের সঙ্গে তুলনা করলে কৃত্রিম এই ভ্রূণের ৯৫ শতাংশ মিল রয়েছে।
এই গবেষকদলের প্রধান প্রফেসর জেকব হান্না সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘লক্ষণীয়ভাবে, আমরা দেখাই যে ভ্রূণের স্টেম কোষগুলি সম্পূর্ণ কৃত্রিম ভ্রূণ তৈরি করে, যার অর্থ ভ্রূণের চারপাশে থাকা প্লাসেন্টা এবং কুসুম থলি অন্তর্ভুক্ত। আমরা এই কাজ এবং তার প্রভাব সম্পর্কে সত্যিই উত্তেজিত।’