Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ আলোচনায় মৈত্রীর জয়গান

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৫১, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

প্রিন্ট:

‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ আলোচনায় মৈত্রীর জয়গান

ছবি: কলকাতা উপ-হাইকমিশন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ শিরোনামে তথ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সহযোগিতায় এক বিশেষ আলোচনা আয়োজন করা হয় কলকাতার প্রেস ক্লাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ মুরাদ হাসান এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভাষাবিদ ড. পবিত্র সরকার, পরিচালক, অভিনেতা সৃজিত মুখার্জী।

প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান তার বক্তব্যে বলেন, কলকাতার বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের সহযোগিতায় কলকাতার ঐতিহাসিক প্রেস ক্লাবে এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আমি নিজেকে  ধন্য মনে করছি। বিশেষ করে কলকাতার সেই ঐতিহাসিক প্রেস ক্লাব যা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সহযোগী। সেখানে বসে বক্তব্য রাখা আমার কাছে গর্বের। বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান হাজার ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যে জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন তা ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এবং বিশাল সমাবেশ। যেখানে ১৪ লাখ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সমবেত হয়েছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি সমর্থন করেছিলেন তা আন্তরিকভাবে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দুই বাংলা তথা বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামকে।  এছাড়া সেইসব শিল্পী-সাহিত্যিকদের স্মরণ করছি যারা আমাদের মাতৃভাষাকে নানান কথা তুলে ধরেছেন। আমি ৬ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডে বঙ্গবন্ধুর ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে।

‘বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক অটুট ছিল আছে এবং থাকবে’ উল্লেখ করে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, এই সময় ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশ কুড়ি লাখ ভ্যাকসিন পেয়েছে এবং এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তিন কোটি ভ্যাকসিন পাবে। ফলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক যে অটুট বন্ধন ছিল তা চিরকাল অটুট থাকবে। কলকাতাবাসীর কাছে আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতি তুলে ধরছি। যা আগামীতে নতুন দিগন্তের অনুধাবন করবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া বলেন, দুদেশের চলচ্চিত্র এখন যৌথ ভাবে কাজ করে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিল্পীকে পশ্চিমবাংলাও চিনতে পারছে। এরপরে তিনি মহাভারতের দৌপ্রদীর পাঁচ স্বামীর উদাহরণ তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন , আমার পড়া মতো অর্জুন যখন দৌপ্রদীকে লক্ষ্যভেদ করে মা কুন্তির সামনে নিয়ে আসেন তখন মা কুন্তী কোন কিছুই না দেখে পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দ্রৌপদীকে ভাগ করে নিতে বলেন। সেই কারণেই দৌপ্রদীর পাঁচ স্বামী। আমারা রাজনৈতিক ভাবে ভাগ হয়ে গেলেও আদতে আমারা বাঙালি, তাহলে আমারা কেন পানি ভাগ করে নিতে পারবো না? প্রেস ক্লাবে বসে আপনাদের মাধ্যমে দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এই বিষয়ে আবেদন করতে চাই। আমারা যদি ভাগাভাগি করে নিতে পারি তাহলে আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ থাকবে না। এটাতে দয়া করে কোন রাজনৈতিক রঙ দেবেন না এটা আমাদের অধিকারের কথা বললাম।

অনুষ্ঠানের পরিচালক সৃজিত মুখার্জী বলেন, তৃতীয়বারের মতো যে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছে যেখানে দেখে মনেই হয় না আলাদা করে অন্য কোন দেশের চলচ্চিত্র দেখছি। আন্তর্জাতিক ভাবে বাংলাদেশ আলাদা দেশ হলেও অন্তত পশ্চিমবাংলা বাসীর কাছে বাংলাদেশের ছবি দেখার জন্য কোন সাব টাইটেলের প্রয়োজন হয় না। কারন আমারা ছোটবেলা থেকেই বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছি। আমি একাধিকার শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য চলচ্চিত্র বানাবার কথা ভাবলেও কোন দৈবিক কারনে তা হয়ে ওঠেনি। তবে এবার আমি হুমায়ুন আহমেদের গল্প নিয়ে কাজ শুরু করার একটা পরিকল্পনা করেছি।

ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, আমি চুরাশি বছর বয়স পার করেছি। এতগুলো বছরেও আমি খুব একটা চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, তবে আমি যৌবনে কিছু সিনেমা দেখতাম।আমি বেশি  পরিচিত বাংলা নাটকের সাথে। এখনও বাংলাদেশে গেলে সেখানকার নাটক দেখি। তবে চলচ্চিত্র না দেখলেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের খবর রাখি। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক উন্নত মানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে, বিশ্বের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মান ও গুরুত্ব পাচ্ছে যা আমার কাছে বাঙালি হিসেবে গর্বের।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এছাড়া সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের প্রথম সচিব প্রেস ডঃ মোঃ মোফাকখারুল ইকবাল।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer