ময়মনসিংহ : মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও দানশীল ব্যক্তিরাও এগিয়ে এসেছেন। তাদের অনেকেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে মানুষের বাহবা পেতে চালাচ্ছেন ত্রাণ কার্যক্রম। তবে ফোনে সাড়া দিয়ে অসহায় আর মধ্যবিত্তদের পাশে ত্রাণ বিতরনে ব্যতিক্রমী উদাহরন টানছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জুয়েল সরকার।
কোন ধরণের প্রচার-প্রচারনা আর ফটোসেশন ছাড়াই নিন্মবিত্তদের সহযোগিতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন সপ্তাহ ধরে। ইতিমধ্যেই মধ্যে তিনি পাঁচ শতাধিক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বলে জানিয়েছেন তার স্বেচ্ছাসেবকরা।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে প্রায় মাস খানেক সময় ধরে বন্ধ আছে সকল কার্যক্রম। এরই মধ্যে সবচেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে দিনমজুর, মিস্ত্রী,মুচি, গাড়ির চালক হেলপার, গৃহকর্মী, ভিখারী আর নিন্ম আয়ের মানুষেরা। প্রচলিত ধারায় রাজনীতিক আর দানশীল ব্যক্তিরা কিছু প্যাকেট নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ফটোসেশন করে নিজের দায়িত্ব শেষ করেন। পরে আর তাদের কোন খোঁজ রাখেন না। কেউ কি না খেয়ে আছে কিনা।
এরইমধ্যে ব্যতিক্রমভাবে প্রচার বিমুখ হয়ে ওইসব অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও মটর মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জুয়েল সরকার। গত ৮ই এপ্রিল নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি আহবান জানান তিনি “অসহায় মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা, ওয়ার্ড ভিত্তিক নিন্ম আয়ের মানুষের তালিকা চাওয়া ও যারা জনসম্মুখে দান নিতে লজ্জাবোধ করেন এমন মধ্যবিত্ত ব্যক্তিদেরকে নিজের নাম্বারে যোগাযোগ করার”।
ওই পোষ্টটি আপলোড দেয়ার পর থেকেই উপজেলা বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন আসতে শুরু করলে তিনি ১০ জন স্বেচ্ছাসেবককে আলাদা আলাদা মটর সাইকেল যোগে ১২ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে খাদ্য সামগ্রী পৌছানোর ব্যবস্থা করেন। এভাবেই প্রতিদিন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনের বাড়িতে খাবার পৌছানো হচ্ছে বলে জানান তার সেচ্ছায় শ্রম দেয়া কর্মীরা।
পৌর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ফুয়াদ হাছান নিউটন জানান, সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। মোবাইলে ফোন আসার পরে গোপনীয়তা রক্ষা করে আমাদের সেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে এ খাদ্য সামগ্রী বাড়িতে পৌছে দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের ফটোসেশন বা ফেসবুক ষ্ট্যাটাস প্রদান করা থেকে সেচ্ছাসেবকদের বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জুয়েল সরকার বলেন, দেশের এ সংকটময় মুহুর্তে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেছেন আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে বলেছিলেন, আমার পাশে বাড়ির লোকটি না খেয়ে থাকলে আল্লাহর কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দান যেন কোন লোক দেখানো না হয় সেদিকে আমার নজর রাখা জরুরি। সে দিক চিন্তা করেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে কাজ করে যাচ্ছি।
বহুমাত্রিক.কম