ছবি : বহুমাত্রিক.কম
ঝালকাঠি : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বাড়ইকরন গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়ার তিনদিন পর অবশেষে মায়ের কোলে ফিরলো শিশু লিমা আক্তার (৭)।
লিমা বারইকরণ গ্রামের দিনমজুর আজিজুর রহমানের মেয়ে। শিশুটি গত ২৪ আগস্ট নলছিটি থেকে পথ হারিয়ে জেলার রাজাপুর উপজেলা সদরে চলে আসে। সোমবার দুপুরে রাজাপুর থানা পুলিশ লিমাকে তাঁর মা নাজু বেগমের হাতে তুলে দেয়। আর এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কারণে।
লিমার পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, লিমার মায়ের সঙ্গে তাঁর বাবার ছয় বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে লিমা ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাসন্ডা গ্রামে তাঁর মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে থাকতো। মাঝেমধ্যে লিমাকে তাঁর বাবা নিজের কাছে নলছিটিতে নিয়ে রাখতেন। কোরবানীর ঈদের সময় বাবার অনুরোধে লিমাকে তাঁর নানী নলছিটিতে পৌঁছে দেয়।
কিন্তু ঈদের দুইদিন পর লিমা কারো কাছে কিছু না বলে মায়ের কাছে আসার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিষখালী নদী পাড়ে এসে একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ওঠেপড়ে। ট্রলারটি লিমাকে ঝালকাঠিতে নামিয়ে দেয়। পরে লিমা ঝালকাঠি থেকে একটি যাত্রীবাহী বাসে ওঠে রাজাপুর উপজেলায় চলে যায়।
২৫ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজাপুরের সাউথপুর গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম লিমাকে কাঁদতে দেখে রাজাপুর সদরে নিয়ে আসে। এ সময় নিজের নাম ছাড়া লিমা আর কিছু বলতে না পারায় বিষয়টি রাজাপুর থানা পুলিশকে জানানো হয়। মেয়েটির ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। পরে লিমাকে রাজাপুর সদর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়।
এদিকে সোমবার সকালে ফেসবুকে লিমার ছবি দেখে চিনতে পারে আল-আমিন বাকলাই নামে ঝালকাঠির একজন আইনজীবী। তিনি লিমার মাকে বিষয়টি জানালে রাজাপুর থানায় যোগাযোগ করে লিমার মা নাজু বেগম। পরে দুপুরে লিমাকে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দেয় রাজাপুর থানা পুলিশ।
লিমার মা নাজু বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে ফিরেপেতে আল-আমিন সাহেব সাহায্য করেছেন। তাঁকে ও রাজাপুরের মানুষদের ধন্যবাদ জানাই।’
রাজাপুর থানার ওসি মো. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়া লিমাকে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দিতে পেরে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। যারা এ কাজে সহযোগিতা করেছেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
বহুমাত্রিক.কম