ছবি: বহুমাত্রিক.কম
গাজীপুর: জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুল জলিল। ছোট বয়স থেকেই ক্রিকেট প্রবলভাবে টানতো। এক সময় তা আসক্তি হয়ে দাঁড়ায়। পড়ালেখায় মন থাকলেও দারিদ্রতার কষাঘাত এসএসসি পার হবার পথ আটকে দেয়। ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি ইচ্ছাশক্তির জোরে গাজীপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের একটি ক্রিকেট টিম গড়ে তুলেন তিনি পাঁচ বছর আগে। নিজেই সেই টিমের ম্যানেজারের দায়িত্বও নেন।
নানা প্রয়োজনে ও কাজে তাকে দৌঁড়াতে হয় নানা স্থানে। এতে প্রধান অন্তরায় ছিল হাঁটাচলার সীমাবদ্ধতা। ভেবে চিন্তে যখন এই সমস্যা সমাধানের আর পথ খুঁজে পাচ্ছিল না, দ্বারস্থ হন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। আর হেঁকে বসেন বিশাল ছক্কা। যাকে বলে বেটে বলে ওভার বাউন্ডারি। জীবনের সবচেয়ে বড় বাধার প্রাচীর এবার খুলে গেল তার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হয়ে প্রতিবন্ধী জলিলের চলাচল উপযোগি একটি বাহন (ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ার) তাকে বুঝিয়ে দেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। জলিলের আনন্দ যে এখন আর ধরে না!
গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজার কুনিয়া এলাকায় জলিলের বাড়ি। বাবার নাম আব্দুল হালিম। জলিল বলেন, তার বাবা মারা যান ১৯৯৭ সালে। তার বাবা বলতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পরিবারের কাছে অসহায় কেউ কিছু চাইলে খালি হাতে ফিরে না। প্রতিবন্ধীতার জন্য যখন খুব অসহায় মনে হচ্ছিল, তখনই বাবার সেই কথাটা মনে পড়ে যায়। তিনি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে একটি বাহনের জন্য আবেদন করেছিলেন।
তিনি আরো জানান, তার সংসারে স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিলেও মেয়েটি পড়ছে দশম শ্রেণীতে। একদিকে অভাব আরেকদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধীতার কারণে যেন আর চলছিলই না। এখন অন্তত চলার ব্যবস্থা করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ তিনি। জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, জলিলের আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে বাহনের জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে এই টাকা দিয়ে একটি ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ার তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
বহুমাত্রিক.কম