Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে সাভার ও আশুলিয়ায় ফিরছে শ্রমিকরা

তুহিন আহামেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:০০, ৪ এপ্রিল ২০২০

প্রিন্ট:

পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে সাভার ও আশুলিয়ায় ফিরছে শ্রমিকরা

ছবি- বহুমাত্রিক.কম

সাভার: আগামীকাল রোববার থেকে সাভার ও আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা খোলে দিবে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে ট্রেন-বাস সহ বন্ধ রয়েছে সকল ধরণের গণপরিবহণ।

সঙ্গরোধ ও সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টিতে যখন এতো কড়াকড়ি ঠিক তখন শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার শ্রমিকরা দল বেঁধে ছেড়েছেন ঢাকা। পিকআপ বুঝাই করে আর ছোট ছোট যানবাহনে করে গাদাগাদি করে ফিরছে শ্রমিকরা।

সারা বিশ্ব আজ করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত। গৃহবন্দি প্রায় গোটা বিশ্বের মানুষ। এই ভাইরাস ভয়ংকর রূপ নিতে সক্ষম। খুব দ্রুত ছড়ায় বলে সারা দুনিয়ার মত বাংলাদেশও বন্ধ করা হয়েছে সব ধরসের প্রতিষ্ঠান ও বাজারঘাট।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার প্রায় ৯৮ শতাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই সুযোগে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও ট্রাক ও পিকআপে গাদাগাদি করে শ্রমিকরা ঢাকা ছেড়েছেন। আবার একইরূপে ফিরছেন ঢাকায়। এরকম ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ সচেতন শ্রমিকদেরও ঝুঁকিতে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকরা।

শনিবার সকাল থেকে সাভারের বিভিন্ন মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-আরিচা ও বাইপাইল-আব্দুল্লাপুর মহাসড়ক আগের রুপে নেই। পুরোটাই ফাকা। তবে দু-একটি রিকশা ভ্যান চোখে পড়লেও অন্যান্য গণপরিবহন রয়েছে বন্ধ। এছাড়া দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রাক ও ছোট ছোট পিকআপ চোখে পড়লেও তাতে রয়েছে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তারা ঝুকি নিয়েই বাড়ি থেকে কর্মস্থল সাভার ও আশুলিয়ায় ফিরছেন।

পিকআপে করে গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় ফিরছেন নুর মোহাম্মদ। তিনি জানান, করোনার ভয়ে ছুটি পাওয়ার সাথে সাথে গ্রামে গিয়েছিলাম। আজ ছুটি শেষ। আগামীকাল থেকেই কারখানা খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। কারখানায় যেতে না পারলে চাকুরিচ্যুত করা হবে বলে সুপারভাইজার ফোন করে জানিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরলাম।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা এলাকা থেকে সাভারে ফিরছেন জোহা নামের এক পোশাক শ্রমিক। কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, করোনার ছুটি পাওয়ায় বাড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু আগামীকাল থেকে কারখানা খুলে দেবে কর্তৃপক্ষ তাই চলে আসলাম। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়েই পিকআপে করে ফিরলাম।
আরেক শ্রমিক বিউটি জানান, আমরা যেখানেই যাই কোন নিরাপত্তা নাই। সবখানেই ঝুঁকি। কারখানায় কাজ করতেও ঝুঁকি, বাড়ি ও ঢাকায় ফিরতেও ঝুঁকি। আমাদের জীবনটাই ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে কাটে। এরকম ঝুঁকি নিতে আমাকো অভ্যাস আছে। তার পরেও ঝুঁকি এড়াতেই মুলত বাড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু কারখানা কতৃপক্ষ আর ছুটি বাড়াবে না। তাই ফিরে আসলাম।

পিকআপের এক চালক আরিফ জানান, আমরা তো গত ১৪দিন ধরে বসে আছি। ঘরে খাবার নাই। কেউ তো খোজ খবর নেয় না। আগে খাবার ব্যবস্থা করেন তার পরে গাড়ি বন্ধ করতে আসেন। খাবার পেলেই আমরা গাড়ি বের করবো না।

এব্যাপারে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি (আশুলিয়া অঞ্চল) জাহিদুর রহমান জীবন জানান, শ্রমিকদের মূলত ছুটি দেওয়া হয়েছিল ঘরে থাকার জন্য। কিন্তু ছুটি পেয়েই শ্রমিকরা বাড়িতে চলে যায়। যেসকল শ্রমিকরা গ্রামের বাড়ি থেকে আবার কর্মস্থলে চলে আসছেন কারখানায় ঢুকার পূর্বে ওইসকল শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কাজে যোগদান করানো উচিত। সেই সাথে ঝুকি এড়াতে কারখানায় প্রবেশের পূর্বে জীবানুনাশক দিয়ে হাত-পা ধুয়ার ব্যবস্থা করার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer