ছবি- সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোয় এক বিরাট সামরিক প্যারেডে দেয়া ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনে রুশ অভিযানকে `নিজে আক্রান্ত হবার আগেই চালানো আক্রমণ` বলে বর্ণনা করে বলেছেন, সেখানে থাকা রুশ সৈন্যরা মাতৃভূমিকে রক্ষা করছে।
তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর উস্কানির কারণেই ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, তিনি এ আক্রমণের প্রসঙ্গে বরাবরের মত `বিশেষ সামরিক অপারেশন` কথাটি ব্যবহার করেননি ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসী জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মস্কোর রেড স্কোয়ারে এই প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি রাশিয়ায় বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়। পুতিন অভিযোগ করেন, ক্রাইমিয়া ও ডনবাসে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছিল ইউক্রেন - যে এলাকাগুলো এখন রাশিয়া সম্পূর্ণ বা অংশত নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অভিযোগের পক্ষে তিনি কোন প্রমাণ দেননি। প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভাষণের সময় তার দুপাশে ছিলেন রুশ সামরিক বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিরা।
মাতৃভূমিকে রক্ষা করা পবিত্র কর্তব্য বলে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, "আপনারা আজ যুদ্ধ করছেন ডনবাসে আমাদের লোকদের রক্ষার জন্য, আমাদের স্বদেশভূমি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য। নেটোর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে সক্রিয়ভাবে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছিল।
পুতিন বলেন, "তারা ডনবাসে আমাদের ঐতিহাসিক ভূমিতে অনুপ্রবেশ করার জন্য একটি অপারেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিয়েভে তারা পারমাণবিক অস্ত্র পাবার সম্ভাবনার কথা বলছিল, নেটো আমাদের নিকটবর্তী ভূখণ্ডে খোঁজখবর করছিল - এবং সেটা আমাদের ও আমাদের সীমান্তের জন্য স্পষ্ট হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।"
এর আগে মনে করা হচ্ছিল যে রুশ নেতা হয়তো এ ভাষণে পুরোপুরি যুদ্ধ ঘোষণা বা সামরিক বাহিনীর জন্য সৈন্য সমাবেশের মত সামরিক কৌশলে কোন পরিবর্তনের কথা বলতে পারেন। তবে এর পরিবর্তে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুদ্ধে নিহত ও আহতদের পরিবারগুলো যেন বিশেষ সহায়তা পায় - তার জন্য তিনি এক বিশেষ ডিক্রিতে স্বাক্ষর করছেন।
মস্কো থেকে বিবিসির বিশ্লেষক স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, মি. পুতিন এ ভাষণে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান সম্পর্কে বড় কোন ঘোষণা দেবেন এমন জল্পনা ছিল। কিন্তু কোন রকম বিজয় ঘোষণা বা যুদ্ধ আরো জোরদার করার ইঙ্গিত দেয়া - কোনটাই তিনি করেননি।
স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ভাষণে রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান প্রসঙ্গে তার সুপরিচিত শব্দবন্ধ "বিশেষ সামরিক অপারেশন" ব্যবহার করেননি - আবার এটাকে যুদ্ধ বলেও বর্ণনা করেননি। তবে তিনি এর সমান্তরালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ এনেছেন - সম্ভবতঃ রাশিয়ার জনগণের দেশাত্মবোধক চেতনা জাগিয়ে তোলার চেষ্টায়।
" তিনি (বরাবরের মতোই) আমেরিকা, নেটো এবং কিয়েভের সরকারের সমালোচনা করে দাবি করেছেন - তাদের কর্মকাণ্ড রাশিয়ার নিজের নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ফেলেছিল। তিনি বরাবরের মতোই ইউক্রেনের `নব্য-নাৎসী`দের কথাও উল্লেখ করেন। "স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ভাষণে রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান প্রসঙ্গে তার সুপরিচিত শব্দবন্ধ "বিশেষ সামরিক অপারেশন" ব্যবহার করেননি - আবার এটাকে যুদ্ধ বলেও বর্ণনা করেননি।
তবে তিনি এর সমান্তরালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ এনেছেন - সম্ভবতঃ রাশিয়ার জনগণের দেশাত্মবোধক চেতনা জাগিয়ে তোলার চেষ্টায়। " তিনি (বরাবরের মতোই) আমেরিকা, নেটো এবং কিয়েভের সরকারের সমালোচনা করে দাবি করেছেন - তাদের কর্মকাণ্ড রাশিয়ার নিজের নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ফেলেছিল। তিনি বরাবরের মতোই ইউক্রেনের `নব্য-নাৎসী`দের কথাও উল্লেখ করেন। "
স্টিভ রোজেনবার্গ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন স্বীকার করেছেন যে রাশিয়ার সামরিক ক্ষতি হয়েছে তবে তার বিস্তারিত জানাননি। তার কথায়, পুতিন এর পর কোন দিকে যাবেন - তার তেমন কোন আভাস এ ভাষণে ছিল না। কিন্তু এ আক্রমণ বন্ধের কোন ইঙ্গিতও এতে ছিল না।
"ইউক্রেন আক্রমণের পক্ষে যুক্তি দিয়ে মি. পুতিন সচরাচর যা বলে থাকেন তাই বলেছেন - আর সেটা হলো, ঘটনার জন্য রাশিয়া ছাড়া আর সবাইকে দোষারোপ করা। " ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের ইস্পাত কারখানার লড়াই সম্পর্কেও কোন ইঙ্গিত দেননি তিনি।
