১১ অক্টোবর শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ১০ দিন চলবে ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৯’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি`র জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিদের সাথে নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এমপি ও ভারতের নাট্যজন মেঘনাদ ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ এমপি।
প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, রবীন্দ্রনাথ যেমন ভারতের সম্পদ তেমন বাংলাদেশের সম্পদ। উদ্বোধনী বক্তব্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দেশ গড়তে শিক্ষা ও সংস্কৃতির মানুষকে এক হতে হবে। গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব একটি মৈত্রী উৎসব, মৈত্রী তখনই টেকসই হয় যখন দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী হয়। ভারতের নাট্যজন শ্রী মেঘনাদ ভট্টাচার্য উৎসবের আয়তন, সৌন্দর্য, ব্যপ্তি, যৌলুসের প্রশংসা করে এই কর্মযজ্ঞকে এক বিরল ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এই উৎসব দুই বাংলার মেলবন্ধন হয়ে উঠুক।
বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ`র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব পর্ষদের সদস্য সচিব আকতারুজ্জামান ও সভাপতিত্ব করেন উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন,এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সকল ধারার সংস্কৃতির মেল বন্ধন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবে। আগামী বছর ২০২০ সালে এই গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি নিবেদিত হবে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি`র জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল , স্টুডিও থিয়েটার হল, সঙ্গীত নৃত্য আবৃত্তি মিলনায়তন, মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তন ও শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার সামনে মুক্তমঞ্চসহ ৬টি ভ্যেনুতে ভারতের ৪টি দলের ৫টি প্রদর্শনীসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৪টি দল পথনাটক, আবৃত্তি সংগঠন, সংগীত সংগঠন, নৃত্য সংগঠন, মূকাভিনয়সহ মোট ১২১টি দলের প্রদর্শনী থাকবে। এছাড়াও একক আবৃত্তি ও একক সঙ্গীতের পরিবেশনা থাকবে।
এছাড়া উদ্বোধনী পর্বে অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী কবি সুকান্তের কবিতার লাইন উচ্চারণ করেন,"এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি"। এই শহরকে করতে হবে শিল্পের শহর, প্রতি ইঞ্চি হবে নান্দনিক। ভারতীয় দূতাবাসের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নিপা চৌধুরী বলেন, ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক কোন দিন কম হবে না। বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা বলেন, এই উৎসব উপমহাদেশের সর্ব বৃহৎ মিলন মেলা। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তর আছে কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কোন অধিদপ্তর নাই। তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
দর্শক পরিপূর্ণ মিলনায়তনে অনিক বসুর নির্দেশনায় ভূপেন হাজারিকা`র "মঙ্গল হোক এই শতকে, মঙ্গল সবার" গানে স্পন্দন`র উদ্বোধনী নৃত্যের নান্দনিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় উৎসব আয়োজন করে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ।
বহুমাত্রিক.কম